নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর ॥ করোনা ভাইরাস মুক্ত রাখতে গত ১৫ দিনে বিদেশ ফেরত চাঁদপুরের ৬০৪ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার সকালে এটি নিশ্চিত করেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান এর নির্দেশে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ফেরত আসেন ৬০৪জন ব্যক্তি। আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করে যার যার নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেছি। এতে তাদের সহায়তা করছে জেলা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগ,পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ বিভাগ।
এ দিকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে করোনা সচেতনতায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও জনসমাগমস্থল লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লিফল্যাট বিতরণ শুরু করেছে।
এর মধ্যে সকাল ১১টায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীর মাঝে, সকাল সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর ডেফোডিল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে এবং দুপুর ১২টায় লঞ্চঘাট ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসব লিফল্যাট বিতরণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
এ সময় ডেফোডিল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জামসেদুর রহমান, স্কুল শাখার প্রধান শিক্ষক মো.নূর খান,চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার দুপুরে ইতালী থেকে ফেরত আসা এক ব্যক্তি চাঁদপুর শহরের জোড় পুকুর পাড় এলাকায় এক ভাড়া বাসায় তার স্ত্রী ও পরিবারের সাথে দেখা করতে গেলে বাড়ির মালিক তাকে ঢুকতে দেননি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
তিনি অভিযোগ করেন, ইতালী থেকে তার কোনো করোনা সমস্যা নেই, এমন সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন। সেটি দেখানোর পরও তাকে বাড়িতে ঢুকতে না দেয়ায় তিনি চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জনের সরনাপন্ন হন। তখন সিভিল ডা.সাখাওয়াত হোসেন জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শক্রমে আরেকটি সার্টিফিকেট প্রদান করার পর প্রায় ৬ ঘন্টা পর তিনি ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পান।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডা.সাখাওয়াত হোসেন বলেন,আমরা চাঁদপুরে করোনা প্রতিরোধমূলক সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এ জন্য পুরো জেলায় ১০০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডসহ সব ধরনের প্রস্ততি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে আবাসিক হোটেল ও স্কুল ভবনও তৈরী করে রাখা হয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরে এখন পর্যন্ত কেউই করোনায় আক্রান্ত না হলেও এর প্রভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে বলে জানা গেছে।
চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো.মাসুদুর রহমান বলেন, করোনার আতঙ্কে গত তিনদিন ধরে ক্লাশে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অর্ধেকে নেমে এসেছে।
