ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরগুনায় কলেজ ছাত্রী হত্যা মামলা॥ প্রধান আসামীর ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ০৭:৩৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২০

বরগুনায় কলেজ ছাত্রী হত্যা মামলা॥ প্রধান আসামীর ফাঁসি, একজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব সংবাদদাতা,বরগুনা ॥ বরগুনায় চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী ফারিয়া আক্তার মালা হত্যা মামলার প্রধান আসামী প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশকে ফাঁসি, অ্যাড. মাইনুল আহসান তালুকদার বিপ্লবকে যাবজ্জীবন ও রিয়াজকে সাত বছর কারাদন্ড দিয়েছে বরগুনার নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মামলার অপর আসামী ইমা রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। রবিবার(২৬ জানুয়ারি) দুপুরে বরগুনার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ২৫জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই আদেশ দেন। এসময় আদালতে আসামীরা উপস্থিত ছিলেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল এবং আসামী পক্ষে ছিলেন অ্যাড. কমল কান্তি দাস, আবদুর রহমান নান্টু ও হুমায়ুন কবির। আলমগীর হোসেন পলাশ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার বাসন্ডা গ্রামের মৃত আ. লতিফ হাওলাদারের ছেলে। এ ছাড়াও বিপ্লব ও তার স্ত্রী ইমা রহমান এবং রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ আমতলী পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা। মামলা সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের আব্দুল মন্নান খানের মেয়ে কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ফারিয়া আক্তার মালার সঙ্গে বরগুনার ঘটবাড়িয়া আদর্শ কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন পলাশের প্রেমের স¤পর্ক ছিল। সাত বছর আগে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে মালার পরিচয় পলাশের সঙ্গে। ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর মালাকে নিয়ে পলাশ তার ভাগ্নিজামাই আমতলীর হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা অ্যাড. মো. মাঈনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় বেড়াতে আসেন। ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বিপ্লবেন স্ত্রী তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মালাকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পলাশ। পরে লাশ সাত টুকরো করে ড্রামে ভরে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ বিপ্লব তালুকদারের বাসার ড্রাম থেকে নিহত মালার টুকরো টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে এবং ঘাতক পলাশকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ২৫ অক্টোবর পুলিশ বাদি হয়ে আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরের দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন পলাশ। তদন্ত শেষে পুলিশ এ মামলায় পলাশ, বিপ্লব, রিয়াজ ও বিপ্লবের স্ত্রী ইমা রহমানকে আসামী করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, বরগুনার চাঞ্চল্যকর ফারিয়া আক্তার মালা হত্যা মামলায় প্রধান আসামী আলমগীর হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে ধর্ষণ শেষে হত্যা করায় ফাঁসির আদেশ এবং হত্যার পরে লাশ গোপন করায় ৭ বছরের কারাদন্ড এবং ১ লক্ষ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। মামলার ২ নম্বর আসামী মাইনুল আহসান তালুকদার বিপ্লব মালাকে ধর্ষণ করায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও লাশ সাত টুকরো করে গোপন করার চেষ্টা করায় ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে মামলার তিন নম্বর আসামী রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ লাশ গোপনে সহযোগীতা করায় সাত বছরের কারাদন্ড দিয়েছে এবং বিপ্লবের স্ত্রী ইমা রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। এবিষয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, এ মামলায় বিজ্ঞ ট্রাইবুনাল যে রায় দিয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নয়। আলমগীর হোসেনের যে স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে রায় দিয়েছে সেখানে পলাশ খুনের কথা স্বীকার করেনি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ এবং উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।
×