ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘাটাইলে আলো ছড়াচ্ছে আজিজ সরকার প্রতিবন্ধী স্কুল

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

  ঘাটাইলে আলো ছড়াচ্ছে আজিজ সরকার প্রতিবন্ধী স্কুল

অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে হতাশ অভিভাবকদের আশার আলো দেখাচ্ছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের দড়ি চৈথট্ট গ্রামের রান ডেভেলপমেন্ট আব্দুল আজিজ সরকার অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। আগে যারা স্পষ্ট করে কথা বলতে পারত না, পারত না লিখতে, চিনত না বাংলা ও ইংরেজী বর্ণমালা। ঠিক তারাই এখন স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে, লিখতে পারে, চেনে বর্ণমালা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও তারা এখন অনেক সচেতন। অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীরা বোঝা নয়, এদেরও আছে শিক্ষার অধিকার। উপযুক্ত শিক্ষা পেলে তারাও সমাজের জন্য কিছু করবে এমন চেতনা নিয়েই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এসব শিশুদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরম স্নেহ ও মমতা দিয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের আলোর মুখ দেখাতে ও সমাজ উন্নয়নে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে সাবেক মেম্বার আব্দুল আজিজ সরকার ২০০১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। যার ২৫ শতাংশ ভূমি দান করেন ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান রাজু। এ বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী ১১১ জন। শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৫ জন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ হাঁটতে পারে, কেউ পারে না। আবার কেউ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে। কারও হাত বাঁকা, কারো পা বাঁকা। আবার কেউ সঠিকভাবে কথাও বলতে পারে না। এসবের পরেও আরও কয়েকজন আছে যারা মা-বাবার কোলে আসা যাওয়া করে। এসব শিশুদের যাতাযাতের জন্য নিজস্ব ভ্যানও রয়েছে। আব্দুল আজিজ সরকার অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে.এম মেহেদী হাসান রাজু বলেন, অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করা অনেক কষ্টের, তবুও আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি ওদের শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে। দিনদিন তাদের উন্নতি হচ্ছে। যারা কারও সঙ্গে মিশতো না তাদের অনেকে এখন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করে। কথাও বলার চেষ্টা করে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা জীবনপট পাল্টে উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরই কেবল উন্নতি হচ্ছে না। প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনব এটাই আমাদের ব্রত। শিক্ষক প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি সারা জীবন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের সেবা ও পাঠদান করাতে চাই। দেশের সরকার ও বৃত্তবানদের কাছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সাহায্য কামনা করছি। বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মোশারফ ও চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী আঁখি বলে, স্যাররা আমাদের যতœ সহকারে ক্লাস করান। -ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল থেকে
×