ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পশুর প্রতি ভালবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

  পশুর প্রতি ভালবাসার অনন্য দৃষ্টান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা ভালুকা ময়মনসিংহ ॥ ভালুকায় খাদ্যের অভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি। নির্বিচারে বনজ ও ফলদবৃক্ষ কর্তন, ফসলী ও জলাভূমি ভরাট করে অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা নির্মাণ, প্লাবনভূমি দখলে নিয়ে ব্যাক্তিকেন্দ্রিক মৎস্যচাষ করা ইত্যাদি কারনে পশুপাখি সম্পুর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি হবিরবাড়ী বনে খাদ্যাভাবে প্রায় ২হাজার বানরের দুরাবস্থা দেখে স্থানীয় শিল্পপতি হাজী শহিদুল ইসলাম দয়াপরবশ হয়ে তার লোকজনের মাধ্যমে দু’একদিন পর পর বানরগুলোকে খাবার সরবরাহ করছেন। বানর দলের জন্য মুড়ি, পাউরুটি, বিস্কিট, কলা সহ নানা ধরনের খাবার দেয়া হয় । খাবার খেতে দলবেধে হবিরবাড়ি বিট অফিসের কাছে সকাল সন্ধায় বানরদল ছুটে আসে । বানরের পাশাপাশি শেয়াল, বিভিন্ন পাখিও এখন ওই অফিসের পাশে অবস্থান করে । এলাকাবাসী জানান ওই বনে শত শত বানর এখনও বসবাস করে কিন্ত বন এলাকায় কোন খাদ্য না পেয়ে এরা দলবেঁধে কৃষকের বিভিন্ন ফসল নষ্ট করে। শিল্পপতি হাজী শহিদুল ইসলাম খাবার দেয়ায় বানর দল এখন কৃষকদের ফসল কম নষ্ট করছে । এলাকার প্রবীন লোকেরা জানান খাল বিল নদীনালা , ফলফলাদি ও বনজ বৃক্ষের আচ্ছাদনে সমৃদ্ধ ভালুকায় বহু প্রজাতির পশু পাখি সব সময় চোখে পরতো। মেছুভাগ, বনো শুয়ার, সজারু, বন বিড়াল, খেকশিয়াল, বাগডাসা, খরগোশ, কাঠবিড়ালী, বেজি, ঘুইসাপ, মুখপুড়া হনুমান, বানর ইত্যাদিতে ভরপুর ছিল ঝাড় জংলা গাছপালা। অথচ মনুষ্যসৃষ্ট নানা জটিলতায় আজ হারিয়ে গেছে এসব প্রাণীর বেশীর ভাগই। গাছে গাছে ভূতুম পেঁচা,শকুন,লালচিল, গাংচিল, ঈগল, হলদেপাখি, কাঠকুড়ালী, বানাশপাখী, বাদুর, ইষ্টিকুটুম, টিক্কা ময়না, টিয়া, বাওই, বুলবুলি,ঘুঘু, সাদা বক, কানিবক, সারস,ডাহুক, কালেম, পানকৌড়ি, মাছরাঙ্গা, হটটিটি, বলাকা ইত্যাদি আরও কত নাম না জানা পাখি। কিছু পাখি খালবিলের পোকা মাকর ছোটবড় মাছ খেয়ে বাঁচতো আর কিছু গাছের ফল মুল খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে বেঁচে থাকতো। বর্তমানে জল জঙ্গল কোথাও পশুপাখির নিরাপদ আবাস স্থল ও খাদ্যের পর্যাপ্ত যোগান না থাকায় ক্রমশ এরা প্রকৃতি হতে হারিয়ে যাচ্ছে। মৎস্য খামারে একটা দুটা মাছ খায় বলে জালপেতে ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি মারা হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে কোন নজরদারি নেই। বনের পশুপাখি সংরক্ষনে স্থানীয় বন বিভাগের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ ছাড়াও অপরিকল্পিত ভাবে শিল্প কারখানার বর্জ মিশ্রিত কালো পানি খাল বিল ও নদী নালায় ফেলার কারনে পশু পাখীর খাদ্য পোকা মাকর মাছ সহ জলজ প্রাণী বিনষ্ট হওয়ায় পশু পাখীর ক্ষতি সাধন হচ্ছে। হবিরবাড়ি বিট কর্মকর্তা জানান, সরকারী ভাবে এসব পশু পাখি রক্ষায় খাদ্যের ব্যাবস্থা করলে প্রানীকুল রক্ষা পাবে ।
×