ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা তুলে না নেয়ায় ধর্ষিতার পিতাকে বোমা নিক্ষেপ ॥ আহত

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

  মামলা তুলে না নেয়ায় ধর্ষিতার পিতাকে বোমা নিক্ষেপ ॥ আহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর ॥ শরীয়তপুরের জাজিরায় ধর্ষণের মামলা তুলে না নেয়ায় বুধবার রাতে ধর্ষিতার পিতা লিটন মোল্লাকে বোমা নিক্ষেপ করেছে আসামিপক্ষের লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১০টায় লিটন মোল্লাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জানা গেছে, জাজিরা উপজেলার সুধন্য মন্ডলেরকান্দি গ্রামে ৭ম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে অথবা আপস-মীমাংশা করতে গত কয়েকদিন যাবত বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে আসছে আসামিপক্ষের লোকজন। তাদের হুমকির মুখে ভয়ে হাট-বাজারে যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে ভিকটিমের পিতা লিটন মোল্লা। নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে ভিকটিমের পুরো পরিবার। সন্ত্রাসীতের হুমকির মুখে লিটন মোল্লার ৭ম শ্রেণিতে পড়–য়া ধর্ষণের শিকার ওই কন্যা এ বছর বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। বন্ধ হয়ে গেছে তার পড়ালেখা। এদিকে ২৩ দিনেও ধর্ষক সাগর গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জাজিরা থানা ও ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নবেম্বর বিকেলে জাজিরা উপজেলার সুধন্য মন্ডলেরকান্দি গ্রামের লিটন মোল্লার কন্যা জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের মির্জা হজরত আলী হাই স্কুলের ৭ম শ্রেণি পড়–য়া ছাত্রীকে প্রতিবেশী জলিল বেপারীর ছেলে শওকত বেপারী কৌশলে তার বন্ধু সাগর শিকদারের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় এবং একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। এসময় ওই ঘরে পূর্ব থেকেই সাগর বেপারী লুকিয়ে ছিল। এসময় সাগর শিকদার ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে ওই দিনই ভিকটিমের মা রুমা বেগম বাদী হয়ে জাজিরা থানায় মামলা করে। হাসপাতালে ভর্তি লিটন মোল্লা বলেন, আমার ৭ম শ্রেণির মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করার পর থেকেই আসামি পক্ষের লোকজন আমাকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। আসামিদের হুমকির মুখে আমি দীর্ঘদিন বাড়ি থেকে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। ধর্ষক সাগরের পিতা দুলাল শিকদার ও স্থানীয় মেম্বার আহাতার আমাকে ২ লাখ টাকা নিয়ে মামলা আপস-মীমাংশা করার জন্য গত কয়েকদিন যাবত চাপ দিয়ে আসছিল। আমি তাতে রাজি হইনি। বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজখবর নিতে বাড়ি আসি। স্থানীয় নয়াবাজারে যাওয়ার পথে ধর্ষক সাগরের পিতা দুলাল শিকদার ও স্থানীয় মেম্বার আতাহারসহ অন্য ২/৩ জন আমাকে রাস্তায় ঘেরাও করে। এ সময় আমি দৌড় দিলে পিছন দিক থেকে আমাকে লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। এ বিষয়ে সাগর শিকদারের পিতা দুলাল শিকদার বলেন, কে বা কারা বোমা নিক্ষেপ করছে আমি তা জানিনা। জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামিকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
×