ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুবকের দুই হাতের কব্জি কাটলো চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা

প্রকাশিত: ০২:৩৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

যুবকের দুই হাতের কব্জি কাটলো চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ স্থানীয় চেয়ারম্যানের রোষানলের শিকার হয়ে দুই হাতের কব্জি হারিয়েছেন রুবেল হোসেন নামের এক যুবক। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্যাডাররা রুবেল হোসেন নামের এ যুবকককে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে নিয়েছে। নদীর ঘাট নিয়ে ওই চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল বলে জানিয়েছেন তার বাবা খোদা বক্স। দুই হাত হারিয়ে রুবেল এখন কাতরাচ্ছেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে রুবেল হোসেনকে উদ্ধার করে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে। রুবেল উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে। দুই হাতের কব্জি হারানো রুবেল জানান, শিবগঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে নদীর ঘাট নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। রুবেলের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, বুধবার রাতে রুবেল তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসছিলেন। এ সময় শিবগঞ্জের উজিরপুর বেড়ি বাঁধের কাছে কয়েকজন তাদের পথ রোধ করেন এবং পাশেই চেয়ারম্যান ফয়েজের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলেন। রুবেল বন্ধুদের নিয়ে চেম্বারে গেলে, তার দুই বন্ধুকে সেখানে আটকে রাখা হয়। আর রুবেলের মুখ ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে পদ্মা নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে তার দুই হাতের কব্জি কেটে নেন চেয়ারম্যানের লোকজন। রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আব্দুস সালাম আরো জানান, নিউ পদ্মা ফেরি ঘাট নিয়ে চেয়ারম্যান ফয়েজের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। এমপি ও তার ভাইয়ের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ মিলে মিশে ঘাটটি চালাচ্ছিল। কিন্তু কিছু দিন ধরে ফয়েজ ফেরি ঘাটটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছিলেন। এর জের ধরেই তার লোকজন রুবেলের দুই হাতের কব্জি কেটে নিয়েছেন। রুবেলের চিকিৎসা শেষে শিবগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে মামলা করা হবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় এখনো কোন মামলা হয়নি। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের একটি টিম অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
×