ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরে বৈদ্যুতিক মিটার চোরচক্র সক্রিয়

প্রকাশিত: ০০:৫৭, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরে বৈদ্যুতিক মিটার চোরচক্র সক্রিয়

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগরে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপ, রাইস মিল ও স’মিলের মিটার চুরির হিরিক পড়েছে। সংঘবদ্ধ মিটার চোর চক্র এখন বেশ সক্রিয়। তারা চুরি করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না। রীতিমত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বর রেখে যাচ্ছে। ওই মোবাইলে ক্ষতিগ্রস্ত মিটার মালিক যোগাযোগ করলে চোরাই মিটার ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে চাঁদা দাবী করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই কেউ কেউ বিকাশের মাধ্যমে টাকা দিয়ে তাদের মিটার ফেরতও পেয়েছে। ঘটনাটি ওই দুই উপজেলার ব্যবসায়ী ও গভীর নলকুপের মালিকদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। চলতি বোরো মৌসুমে গভীর নলকুপের মিটার চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন কৃষকরা। মঙ্গলবার দিনগত গভীর রাতে আত্রাই উপজেলার রাইপুর গ্রামের আব্দুস ছালামের গভীর নলকুপের মিটার, ভবানীপুর গ্রামের গোলাম মুর্তুজা বাবুর স’-মিলের মিটার, রসুলপুর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম, জামাল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুল গফুর ও জাঁতোপাড়া গ্রামের মোহসিন আলীর রাইচ মিলের মিটার চুরি করে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরের দল। চোরেরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য চিরকুটে ০১৯৯০৮৯৩২৫৯ এই মোবাইল নম্বর দিয়ে যায়। মিল মালিকরা তাদের সঙ্গে ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে তারা মিল মালিকদের কাছে থেকে ১৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে। অপরদিকে গত কয়েক দিন আগে একই রাতে রানীনগরে চারটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটে। এর আগেও বেশ কয়েকটি গভীর নলকূপের মিটার চুরি হয়। চোরদের দেয়া বিকাশ নম্বরে দাবিকৃত টাকা দেয়ার পর মিটারগুলো ফিরে পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এসব মিটার চুরির ঘটনায় এলাকায় নলকূপ মালিকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। জানা গেছে, রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় স্থাপিত উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রাম ও একই এলাকার সিঙ্গারপাড়া গ্রাম এলাকা থেকে ৬ ডিসেম্বর রাতে বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের দুইটি মিটার চুরি যায়। এছাড়া ওই রাতেই উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের বাছের আলী ও করজগ্রাম এলাকার মেহেদি হাসান রানা চৌধুরীর ব্যক্তি মালিকানাধীন গভীর নলকূপের মিটার চুরি যায়। মিটার চুরি করার সময় একটি সাদা কাগজে চোরেরা একটি করে বিকাশ নম্বর দিয়ে স্ব-স্ব গভীর নলকূপে ফেলে রেখে যায়। ভুক্ত-ভোগীরা চোরদের দেয়া নম্বরে ফোন করলে প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি মিটার ফেরৎ পেতে ২০ হাজার টাকা করে দাবি করছে। সমঝোতার মাধ্যমে কেউ ৫ হাজার, কেউ ৭ হাজার টাকা বিকাশ করলে ঘটনার তিন দিন পর নির্দিষ্ট স্থানে মিটারগুলো ফেলে রেখে যায় চোরেরা। উপজেলার সিঙ্গারপাড়া গ্রামের গভীর নলকূপ অপারেটর সাবানা বিবি ও বেলঘড়িয়া গ্রামের অপারেটর হামিদুল ইসলাম জানান, মিটার চুরির পর চোরদের দেয়া বিকাশ নম্বরে ৫ হাজার টাকা করে বিকাশ করায় ৯ ডিসেম্বর রাতে নির্দিষ্ট স্থানে মিটার ফেরৎ দিয়ে যায় চক্রটি। তবে মিটার চুরির পরে চোরদের দেয়া বিকাশ নম্বরসহ থানা পুলিশকে জানালেও এর কোন প্রতিকার মেলেনি। ফলে তাদের দাবিকৃত টাকা দিয়েই মিটার ফেরৎ নিতে হয়েছে। করজগ্রামের মেহেদি হাসান রানা জানান, তার ব্যক্তি মালিকানাধীন গভীর নলকূপের মিটার চুরির পর চোরদের দেয়া বিকাশ নম্বরে ৭ হাজার টাকা দেয়ায় মিটারটি ফেরৎ পেয়েছেন তিনি। এব্যাপারে রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, মিটার চুরি এবং বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা দাবির ঘটনায় আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মিটার চুরির চক্রকে সনাক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আত্রাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোবারক হোসেন জানান, থানায় মিটার চুরি সংক্রান্ত কোন অভিযোগ এখনো তিনি পাননি।
×