ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাবিপ্রবি‘তে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১৫

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

পাবিপ্রবি‘তে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১৫

নিজস্ব সংবাদদাতা ,পাবনা ॥ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন - সেকশন অফিসার রফিকুল ইসলাম, সেকশন অফিসার তৌফিকুর রহমান সৈকত, সিনিয়র স্টোরকিপার জমসেদ হোসেন পলাশ, নিরাপত্তা প্রহরী লিটন হোসেন, জনি, বাংলা বিভাগের মাস্টার্স শেষপর্বের আবু জাফর, শামীম হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। শনিবার বেলা ১০টা থেকে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড ও সামাজিক অনুষদ বিভাগের ডিন থেকে ড. আব্দুল আলীমকে অপসারণ না করা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার পাবিপ্রবির প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ডিউটির সময়ে পাবিপ্রবি’র সামাজিক অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম আব্দুল আলীমের সাথে গেটের নিরাপত্তাকর্মীদের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ড. আলীমকে মারপিট করে। ঘটনার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে মারপিট ও লাঞ্ছিতের খবর জানতে পেরে শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের পাশে অবস্থান গ্রহণ করে। এ খবর পেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠিসোঠা নিয়ে অবস্থানকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় উভয়গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।এদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেলা ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু হলে হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের মারপিট ও লাঞ্ছিত করে। বিক্ষুব্ধরা ক্যাম্পাসে রাখা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয় কর্মকর্তা কর্মচারী সমিতির সভাপতি শামস সাদ ফকরুল বলেন, শিক্ষকদের উস্কানীতে একদল শিক্ষার্থী এসে আমাদের কর্মকর্তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাধা দিতে গেলে তারা সংগঠিত হয়ে আবারও এসে আমাদের উপর হামলা করে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় তারা কর্মকর্তাদের প্রায় ৫০টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসে সুরহা করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে একজন সম্মানিত শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের প্রক্টর আওয়াল কবির জয় বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জরুরী একটি বৈঠকের আহবান করা হয়েছে। বৈঠকে একটি তদন্ত কমিটি ঘঠন করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। বিচারের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচী স্থগিত করে বলে প্রক্টর জানান।
×