ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২০ হাতের মাথায় ইউটার্ণ, ঘটছে দূর্ঘটনা

প্রকাশিত: ২১:০৭, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

চট্টগ্রাম মহাসড়কের ২০ হাতের মাথায় ইউটার্ণ, ঘটছে দূর্ঘটনা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম ॥ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশে ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে একটি ইউটার্ণ ২০ হাতের মাথায় অপর একটি ইউটার্ণ ১০ হাতের মাথায় স্থাপন করেছে একটি স্বনামধন্য ষ্টীল মিলস প্রতিষ্ঠান। ইউটার্ণগুলো মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশের ভাটিয়ারী সাল্হে কার্পেট এলাকায় একটি ও অপরটি সোনাইছড়ি চৌধুরীঘাটা এলাকায়। মহাসড়কে ২০ হাত ও ১০ হাতের মাথায় পরপর অবৈধ ইউটার্ণ স্থাপন হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগ অবৈধ ইউটার্ণ স্থাপন করা প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের গ্রুপের বিরুদ্ধে সীতাকুন্ড থানায় মামলা দায়ের করেছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়। জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেইনের প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১০ সালে। যা ঢাকা দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেইট পর্যন্ত উন্নতিকরণে দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯২ কিঃ মিঃ। এ প্রকল্পে ব্যয় হয় প্রায় ৩ হাজার ৮শত ১৬ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। গত ২রা জুলাই ২০১৬ইং তারিখে ঢাকা-চট্টগ্রাম চারলেইন প্রকল্পটি শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চারলেইন মহাসড়ক চালু হওয়ায় যানজট শূণ্যের কোটায় নিন্মজিত হয়েছে। সৃষ্ট দূর্ঘটনা বহুলাংশে হ্রাস পাচ্ছে। মহাসড়কের সীতাকুন্ড অংশে দুপার্শ্বে প্রায় ২৪টি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে সড়ক ও জনপদ বিভাগ প্রায় প্রতি ১ কিঃ মিঃ পরপর একটি করে ইউটার্ণ তৈরি করেন। যা প্রায় ০৫ ফুট আরসিসি ঢালাই করা। দূর্ঘটনা কমাতে সড়ক ও জনপথ প্রায় প্রতিটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়কে ইউটার্ণ স্থাপন করেন। কিন্তু সড়ক ও জনপথের এই উদ্বেগকে বিদ্বাঙ্গালি দেখিয়ে সীতাকুন্ডে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টীল নিজ মনগড়া ভাবে সরকারি সড়ক ও জনপথের করে দেওয়া ইউটার্ণের ১০ হাতের মাথায় একটি ইউটার্ণ ও ২০ হাতের মাথায় অপর একটি ইউটার্ণ স্থাপন করেন দুটি প্রতিষ্ঠানের সামনে। এতে করে একই গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দুটির সামনে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটার পরও সড়ক ও জনপথ বিভাগ অবৈধ ইউটার্ণটি বন্ধ না করলেও স্থানীয় এলাকাবাসি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু যে কথা সেই কাজ। জোর পূর্বক, গভীর রাতে পুনঃরায় আবার সড়কটি কেটে ১০ হাতের মাথায় ইউটার্ণ তৈরী করেন প্রতিষ্ঠানটি। গত ৬ অক্টোবর সোনাইছড়ি চৌধুরীঘাটা আবুল খায়ের ষ্টীল মিলের সামনে লরি চাপায় আলভী এন্টার প্রাইজের দারোয়ান মিজান নিহত হলে স্থানীয় এলাকাবাসী ফের ইউটার্ণটি ডালাই দিয়ে আইলেন করে দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি রাতের আধাঁরে মিলের কর্মচারীদের দিয়ে ঢালাই কেটে ফের ইউটার্ণ তৈরী করে ফেলে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শীতলপুর সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম জানান, শীতলপুর চৌধুরীঘাটা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শাখা সড়কের মাথা থেকে ১০ হাত উত্তরে একটি ইউটার্ণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। কিন্তু আবুল খায়ের ষ্টীল মিলস্ তাদের প্রতিষ্ঠানের মেইনগেটের বরাবরে মহাসড়ক কেটে বড় বড় লজিস্টিক আসা-যাওয়ার সু-ব্যবস্থা তৈরি করে। যার পরিপেক্ষিতে প্রতিনিয়ন ঘটছে দূর্ঘটনা। এ বিষয়ে জানতে শীতলপুর চৌধুরীঘাটার আবুল খায়ের ষ্টীল মিলের কর্মকর্তা মো. ইমরুলকে তার মুটোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ হয়নি,তবে প্রতিষ্ঠানটি অপর কর্মকর্তা (মিডিয়া) মো.ফারুককে ফোন দিলে উনি বলেন, এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার লোক আমি না।’ একটি ইউটার্ণ ১০ হাত ও অপরটি ২০ হাতের মাথায় আবুল খায়ের ষ্টীল মিল কতৃক অবৈধভাবে স্থাপন করার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথের নিবার্হী প্রকৌশলী মো.জুলফিকার আহমেদ বলেন,‘আবুল খায়ের গ্রুফ একটি আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল প্রতিষ্ঠান, এসব ইউটার্ণগুলো প্রতিষ্ঠানটি রাতের আধাঁরে নিজস্ব জনবল দিয়ে জঙ্গী কায়দায় তৈরী করেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা সীতাকুন্ড থানায় মামলা করেছি, আশা রাখবো পুলিশ তদন্ত পূর্বক মামলার সঠিক চার্জশীট দিয়ে আবুল খায়ের গ্রুপের কর্তৃপক্ষকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’
×