ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের এই পরিবার ১০০ বছর ধরে বিমান ওড়াচ্ছে

প্রকাশিত: ১৮:২২, ১৬ আগস্ট ২০১৭

ভারতের এই পরিবার ১০০ বছর ধরে বিমান ওড়াচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক ॥ ছেলেবেলা থেকেই মা’কে দেখেছেন পাইলটের পোশাক পরে আকাশে উড়ে যেতে দেখেছেন নিহারিকা। সাদা শার্ট, মাথায় ক্যাপ, কাঁধে চারটে স্ট্রাইপ- স্বাভাবিকভাবেই এই পোশাকে আকাশে ওড়াটাই ছিল একমাত্র স্বপ্ন। সত্যিও হয়েছে সেটা। নিহারিকা ভাসিন পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম , যিনি বিমান ওড়াচ্ছেন। হ্যাঁ, তিন প্রজন্ম ধরেই একটাই পেশা। পাইলট। তিন প্রজন্ম মিলে আকাশে ওড়ার ১০০ বছর সম্পূর্ণ করলেন তারা। পথ প্রদর্শক ছিলেন দাদা ক্যাপ্টেন জয় দেব ভাসিন। দেশের প্রথম সাত পাইলটের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন যিনি ১৯৫৪ তে কমান্ডার হন। তার ছেলে রোহিত ভাসিনও পাইলট। পুত্রবধূ নিবেদিতা জৈন অর্থাৎ নিহারিকার মা পেশায় পাইলট। তিনি দেশের তৃতীয় মহিলা যিনি ইন্ডিয়ান এলারলাইনসে যোগ দেন। এর পর রোহিতকে বিয়ে করে ভাসিন পরিবারে আসেন নিবেদিতা জৈন। বিয়ের সময় নিবেদিতা ছিলেন দেশের প্রথম তিন জন মহিলা পাইলটদের এক জন। তাদের ছেলে-মেয়ে রোহন ও নিহারিকা ভাসিনও কম্যান্ডার। বছর ৫৪-র নিবেদিতা জানান, ৬-৭ বছর বয়স থেকেই তার স্বপ্ন ছিল এই পেশায় আসার। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্নও বাড়তে থাকে। সেই স্বপ্নপূরণ হয় বছর বিশে। ৫৪ বছরের নিবেদিতা বলেন, সেই দিনটার কথা এখনও মনে আছে। ২৯ জুন, ১৯৮৪। বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে ছিলাম। আব্বু ছুটতে ছুটতে এলেন। হাতে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। সেই শুরু। তারপর একের পর এক অ্যাচিভমেন্ট। তিনিই বিশ্বের কনিষ্ঠতম মহিলা হিসেবে জেট প্লেনের ক্যাপ্টেন হন। এক সন্তানের মা হওয়ার পর Boeing 737-এর কমান্ডার হন তিনি। সাত বছর পর এয়ারবাস ৩০০-র কমান্ডার হন তিনি, যেটি ছিল সেই বিশ্বের অন্যতম, বৃহৎ আকারের বিমান। বিশ্বের প্রথম অল-উইমেন ক্রর কো-পাইলট হিসেবে কলকাতা-শিলচর রুটে ফকার ফ্রেন্ডশিপ বিমান চালিয়েছিলেন তিনি ১৯৮৫ তে। নিজের সংস্থায় বেশ একটা অভিনব রেকর্ড রয়েছে নিবেদিতার। পাইলট হিসেবে তার সংস্থায় তিনিই প্রথম মা হন। এর পরের বছর থেকে তাঁর সংস্থায় মাতৃত্বকালীন ছুটি ঘোষণা করা হয়। নিবেদিতার প্যাশনই ছড়িয়ে পড়েছে তার ছেলেমেয়েদের মধ্যে। রোহন এয়ার ইন্ডিয়ায় বছর দশেক ধরে কাজ করছেন। এখন তিনি বোয়িং ৭৭৭ বিমানের কম্যান্ডার। তবে তার নিজের সন্তান কি বিমান ওড়াবে? জবাবে রোহন বলেন, ভবিষ্যতে হয়তো রোবট দিয়েই বিমান ওড়ানোর কাজ চলবে। আর কিছু দিন পরেই বিয়ে রোহনের বোন নিহারিকার। তিনি চান, আগামী দিনে তার সন্তানও পাইলট হোক! নিহারিকা বলেন, তিনি আজ বুঝতে পারেন দুই সন্তানকে নিয়ে বিমান ওড়ানোর কাজ কতটা কঠিন ছিল মায়ের জন্য।
×