ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসপিপি প্রকল্পের নামে ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত: ২৩:১২, ১৯ জুন ২০১৭

আইএসপিপি প্রকল্পের নামে ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুরে ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্যা পুয়োরেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্প বা যত্ম প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নামে অভিভাবকদের নিকট হতে প্রায় ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দালালদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ওই প্রকল্পের সেপ্টিনেট প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট (এসপিএ) আজহারুল ইসলাম মামুন প্রকল্পটিতে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেছেন। জানা গেছে, এ প্রকল্পের কাজে দু’টি পার্টনার এনজিও, তদারকির কাজে সিএন্ডসি, টাকা বিলির কাজে ডাকঘর ও সেবা দেওয়ার জন্যর কমিউনিটি ক্লিনিক কাজ করবে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে এবং স্থানীয় সরকার, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে এ পকল্পটি চলবে। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন সদস্য থাকবে। প্রথমম ধাপে ৩০০ জন সদস্য নেওয়া হবে। এভাবে চতুর্থ ধাপে শতকরা ২০ জন সদস্য নেওয়া হবে। গর্ভবতীকালে চেকআপ করালে একজন সদস্য (শিশুর মা) ৮০০ টাকা পাবেন। তিনি দুই থেকে তিন বার এ সুবিধা পাবেন। শিশু জন্মের পর একসাথে ৩ হাজার ৭০০ টাকা পাবেন। তিনি তিন মাস পরপর ৩ হাজার ৭০০ টাকা করে দুই বছর পর্যন্ত এ সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ প্রথম দুই বছরে মোট ২৮ হাজার টাকা পাবেন। পরের তিন বছরে ২৫ মাস থেকে ৬০ মাস পর্যন্ত প্রতিমাস অন্তর ২ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবেন। শেষ তিন বছরে মোট ৩০ হাজার টাকা পাবেন। এ প্রকল্প থেকে একজন সদস্য সর্বমোট ৬৮ হাজার টাকা পাবেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের এ পর্যন্ত দুই বছরের অধিক সময় পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি। অথচ ৬৮ হাজার টাকা পাইয়ে দেওয়ার লোভের ফাঁদ পেতে একেক জন অভিভাবকের কাছ থেকে চার হাজার থেকে ছয় হাজার হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে দালালেরা। এভাবে ইউনিয়নের এক হাজার ৩৫০ জন অভিভাবকের কাছ থেকে গড়ে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট সাড়ে ৬৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। ওই দালাল চক্রে আছেন প্রকল্পের সেপ্টিনেট প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট (এসপিএ) আজহারুল ইসলাম মামুন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সাবেক জনপ্রতিনিধি, সরকার দলীয় ও অন্যদলীয় নেতাকর্মীসহ ইউনিয়ন পরিষদঘেঁষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি সদস্য জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৩০০জনের জনের কাছ থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। একেক জনের কাছা থেকে চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা করে উঠানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, নেতা ও পরিষদের লোকজন কম-বেশি সবাই টাকা উঠিয়েছে। শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলী খান জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। প্রকল্পের সেপ্টিনেট প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট (এসপিএ) আজহারুল ইসলাম মামুন সব কিছু জানেন। এ বিষয়ে প্রকল্পের সেপ্টিনেট প্রোগ্রাম এসিস্ট্যান্ট (এসপিএ) আজহারুল ইসলাম মামুন জানান, এ প্রকল্প থেকে কেউ একটি টাকাও খেতে পারবে না। অভিভাবকের কাছ থেকে চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংক, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সচেতনমহলের জোরালো দাবি, শাহবাজপুর ইউনিয়নের ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্যা পুয়োরেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্প বা যত্ম প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে যারা প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিন।
×