ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে রিলায়েন্স গ্রুপকে চূড়ান্ত অনুমোদন

প্রকাশিত: ০২:৩৪, ২৪ মে ২০১৭

৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে রিলায়েন্স গ্রুপকে চূড়ান্ত অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মেঘনাঘাটে ৭৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমাতা সম্পন্ন গ্যাস চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনে ভারতের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স গ্রুপের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এই প্রস্তাবটিসহ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব স্বাক্ষরের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৭৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র স্থাপন করার সুযোগ পাবে রিলায়েন্স গ্রুপ। যদিও রিলায়েন্স পর্যায়ক্রমে দেশে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে মেঘনাঘাটে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হলো। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ অতিরিক্ত সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারি জানান, ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এ কেন্দ্রটির ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৮৪৯৮ টাকা। এ প্রকল্পে ২২ বছরে মোট খরচ হবে ৮০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র মতে, কেন্দ্রটি নির্মানে মেঘনা ঘাটে রিলায়েন্স সরকারের কাছে এই এলাকায় ৪০ একর জায়গা চেয়েছে। সরকারের পক্ষে জমি দেবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের অধীনে মহেশখালীতে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করার জন্য একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করবে রিলায়েন্স। মহেশখালি থেকে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম পর্যন্ত একটি পাইপলাইন নির্মাণ করবে বাংলাদেশ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি। তবে এর ব্যয় রিলায়েন্সকে বহন করতে হবে। ওই পাইপলাইন দিয়েই এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা হবে। স্থাপিত ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য দৈনিক ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি প্রয়োজন হবে। বাকি গ্যাস সরকার আন্তর্জাতিক বাজারদরে তাদের কাছ থেকে কিনে নেবে। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় দেশটির শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী আদানী এবং রিলায়েন্স বাংলাদেশে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে আসে। আদানী গ্রুপের সঙ্গে ওই সময় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলেও রিলায়েন্সের সঙ্গে তা হয়নি। কারিগরি কমিটির মূল্যায়ন রিপোর্ট না থাকায় ঐ সময় চুক্তি হয়নি। মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের পর এখন চুক্তি স্বাক্ষর করবে বিদ্যুৎ বিভাগ। রেলপথ নির্মাণে ব্যয় বাড়লো ॥ খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ অতিরিক্ত সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, ইন্ডিয়ান ডলার ক্রেডিট লাইন (এলওসি) এর অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর এসডি-১ এর পরামর্শক হিসেবে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের ফেজ-১ ও ফেস-২ এর পরামর্শক সেবার বিপরীতে প্রদত্ত অতিরিক্ত নির্মাণ কাজ সুপারভিশনের জন্য চুক্তিপত্রের অতিরিক্ত সেবার বিপরীতে নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ কোটি ৩৩ লাখ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ১০ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেড়ে ভ্যাটসহ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বৈঠকে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরজি ভার্সন) এবং এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের বিনামূল্যে বিতরণযোগ্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের লক্ষ্যে ২১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন মুদ্রণ কাগজ ও ২ হাজার ২০০ মেট্রিক টন আর্ট কার্ড ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় আবাসন পল্লিএলাকায় ৬ ইউনিট বিশিষ্ট ২ টি ২০ তলা ভবন ও একটি ১৬ তলা ভবন নির্মানে পৃথক ৩টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৫১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এছাড়াও বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের ৬৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো চারটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে বলে তিনি জানান।
×