ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের ভয়াবহ বিপর্যয়

প্রকাশিত: ২১:১৫, ২২ মে ২০১৭

গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের ভয়াবহ বিপর্যয়

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালীসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। দিন রাত মিলিয়ে গড়ে ৪/৫ ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকছে না। দুর্বিসহ গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের নানা রকম জটিলতায় অস্থির সাধারণ মানুষ। ব্যাবসা-বাণিজ্য, কলকারখানার উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। বিপর্যয় কাটিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরো ৩/৪ মাস সময় লাগবে বলে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে যে পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তার পরিমান চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এ কারনে কুমিল্লা ও ঢাকা অঞ্চলের দুটি ২৩০ কেভি লাইন থেকে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। কিস্তু সাম্প্রতিক ঝড়ে ওই দুটি লাইনের ভৈরব নদী ক্রোসিংয়ের টাওয়ারটি মারাত্বক ক্ষতি হয়। যার ফলে ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে এখন একটি মাত্র লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু একটি লাইন দিয়ে চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা। ভৈরবের টাওয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩৮ টি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় ঘটেছে বলে সূত্র জানিয়েছেন। সূত্রটি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারটি পূন:নির্মাণ করতে ইতিমধ্যেই জাপান থেকে একটি প্রকৌশলীর দল এসে কাজ শুর করেছেন। তবে ওই টাওয়ারটি পূননির্মাণে ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগতে পারে। অপরদিকে ভোলার ২২৫, ভেড়ামারার ৩৬০ ও সিরাজগঞ্জের ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলায় বন্ধ রয়েছে। ফলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে ৩/৪ মাস সময় লাগবে। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল মনোহর কুমার বিশ্বাস জানান, কাল বৈশাখী ঝড়ে ভৈরবের ক্রোসিং টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও বাউফল, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়াসহ পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকার অভ্যন্তরীন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেগুলো মেরামত করতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা দিন রাত কাজ করছেন। তবে অভ্যন্তরীন লাইনগুলোও ঠিক হতে এক মাসের বেশি সময় লেগে যাবে। ভোলা, ভেড়ামারা ও সিরাজগঞ্জের কেন্দ্র রমজানের মধ্যে চালু হতে পারে। ওই কেন্দ্রগুলো চালু হলে বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি আসবে। এদিকে আসন্ন রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে কষ্টের মধ্যে পরবে ধর্মপ্রান মুসুল্লীরা। ব্যাবসায়িদের পরতে হবে ক্ষতির মুখে। ইলিশ মৌসুমে বরফকল চালু রাখতে না পারলে মিল মালিকসহ দেশের অর্থনীতির ওপর মারাত্ব্ক প্রভাব। এদিকে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষথেকে এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাময়িক এ দুর্ভোগ কাটিয়ে উঠতে গ্রাহকদের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন।
×