
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ
এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোনো পরিকল্পনাতে নেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর সেই কারণে এবার আসন্ন এশিয়া কাপ আসরে দলে ফেরানো হয়নি তাকে। গত মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচ খেলার পর বিশ্রামের মোড়কে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই দীর্ঘ সময় দলের বাইরে থাকার কারণে আসলে মাহমুদুল্লাহর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তিই দেখছেন সবাই। কারণ বয়স পেরিয়ে গেছে ৩৭। এখন আগের সেই উদ্যম নিয়ে এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ফিরে আসার মতো কঠিন কাজটা করার মতো সক্ষমতা কি অবশিষ্ট আছে এই অলরাউন্ডারের? বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন অবশ্য এখনো যথেষ্ট সুযোগ দেখছেন মাহমুদুল্লাহর। যে কোনো একটি বড় আসর কিংবা বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়লেই কারো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায় এমনটা ভাবতে নারাজ তিনি। সেই সঙ্গে তিনি আশাবাদ জানিয়েছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে আবার ফিরবেন মাহমুদুল্লাহ। তাকে ‘ফাইটার’ ক্রিকেটার বলেও দাবি করেন সুজন।
এশিয়া কাপের জন্য ৩২ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই ক্যাম্পে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। গত মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলার পর আর জাতীয় দলের আশপাশে দেখা যায়নি। কিন্তু আসন্ন এশিয়া কাপের স্কোয়াডে তিনি ফেরেননি। এই আসর চলাকালীনই ঘোষণা করা হবে বিশ্বকাপ স্কোয়াড (৫ সেপ্টেম্বপর)। সবমিলিয়ে তাই মাহমুদুল্লাহর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে এমনটাই প্রতীয়মান। অবশ্য সুজন বলেছেন, ‘আমি এখনই বলব না যে, ওর শেষটা দেখছি। এখনো রিয়াদ (মাহমুদুল্লাহ) দারুণ ফাইটার। দলের সমন্বয় বা যে কারণেই বাদ পড়ুক না কেন, টিম ম্যানেজমেন্ট বা নির্বাচকরা যদি না নেয়, তাতে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। এটা সত্যি কথা, রিয়াদের বয়সও হচ্ছে।
তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি, রিয়াদ যেভাবে লড়াই করে, চেষ্টা করে, তাতে শেষ হয়ে গেছে বলাটা ঠিক হবে না। সুযোগ আবার আসতেও পারে এবং আবার খেলবে।’ সেই ফিরে আসাটা কিভাবে হতে পারে তা নিয়েও বিস্তারিত বলেছেন সুজন। তিনি বলেছেন, ‘রিয়াদ এখনো বিসিবির চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার। সুতরাং আমার মনে হয়, রিয়াদ এখনো সেই খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতাটাই রাখবে। নিজের সঙ্গে লড়াই করবে এবং নিজের সঙ্গে লড়াই করাটাই সবচেয়ে বড় লড়াই হবে। আমি মনে করি, লড়াই করার পর রিয়াদের সেই সুযোগটা থাকবে। এখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে প্রস্তুত হবে।’ এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না পেলে কারো ক্যারিয়ার থেমে যাবে এটাও মানতে নারাজ সুজন। এ সময় নিজের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আমিতো ১০ বার বাদ পড়েছি, ১০ বার ঢুকেছি। এটা স্বাভাবিক, বড় ইস্যু বানানোর কিছু নেই। সে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।
এখন তার পরিবর্তে যারা গেছে তাদের হয়তো মনে করা হচ্ছে বেশি কাজে লাগবে। এটা ঠিক যে রিয়াদের যে অভিজ্ঞতা এটা হয়তো বর্তমান মিডলঅর্ডারে আর কারোই নেই।’ অবশ্য সুজন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন মাহমুদুল্লাহর জন্য। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ৩১, ৩২ ও ৮ এবং তার আগে ভারতের বিপক্ষে ১৪, ৭৭ ও ২০ রান করেন তিনি। তবে স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচিত হন।
তাই সুজন বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জিং তো অবশ্যই হবে। কেউ খারাপ খেলুক, রিয়াদ ওখানে জায়গা করে নিক, আমি এটাও বলতে পারি না। আবার এটাও বলতে পারি না কেউ ইনজুরি আক্রান্ত হোক আর রিয়াদ ওখানে খেলুক। রিয়াদের যদি যোগ্যতা থাকে, সে অবশ্যই সুযোগ করে নেবে।’ আর তাই এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এখুনি শেষ দেখছেন না সুজন। কারণ সামনে আরো অনেক খেলা আছে বাংলাদেশ দলের। সুজন বলেছেন, ‘রিয়াদ যতক্ষণ না পর্যন্ত বলছে ও শেষ করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পাইপলাইনে সে অবশ্যই থাকবে। রিয়াদ বাংলাদেশে খেলার মতো যোগ্যতা অবশ্যই রাখে।