ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনাকে হারিয়ে প্লে-অফে ঢাকা

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ১১ ডিসেম্বর ২০২০

খুলনাকে হারিয়ে প্লে-অফে ঢাকা

মিথুন আশরাফ ॥ চট্টগ্রাম, খুলনার পর প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে বেক্সিমকো ঢাকা। বৃহস্পতিবার জেমকন খুলনাকে ২০ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপে তৃতীয় দল হিসেবে প্লে-অফে খেলবে ঢাকা। সাব্বির রহমান রুম্মনের (৫৬) অসাধারণ ব্যাটিংয়ের পর রবিউল ইসলাম রবির (৫/২৭) স্পিন ঘূর্ণিতে কাত হয় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খুলনা টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৭৯ রান করে ঢাকা। ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রান করে ব্যাটিং ঝলক দেখান ওপেনার সাব্বির। নাঈম শেখ (৩৬), আল আমিন জুনিয়র (৩৬) ও অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী (৩১) দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখান। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ রান করতেই গুটিয়ে যায় খুলনা। ওপেনার জহুরুল ইসলাম অমি শুধু ব্যাট হাতে নজর কাড়তে পারেন। ৩৬ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করেন। রবিউল ৩.৩ ওভার বোলিং করে ২৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন। সাকিব আবারও ব্যর্থ হন। ৩ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। আবার এক ওভারে ৪ ছক্কাসহ ২৬ রানও দেন। ব্যাট হাতে ৮ রান করতে পারেন। ব্যর্থতার মধ্যেই ডুবে আছেন। এই ম্যাচে জয় পেয়ে ৭ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট পাওয়ায় প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত হয় ঢাকার। খুলনা ৮ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে লীগ পর্বে খেলা শেষ করে। খুলনা শুরু থেকেই রবিউলের স্পিন ঘূর্ণিতে বিপাকে পড়ে যায়। ৩০ রানের মধ্যেই জাকির হাসান ও সাকিবকে আউট করে দেন রবিউল। ওপেনার জহুরুল শুধু হাল ধরতে পারেন। কিন্তু তিনিও ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতক করার পর দলের ৮৮ রানে আউট হয়ে যান। এর আগেই ৪ উইকেট পড়ে যায়। জাকির, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফির পর যখন জহুরুলও (৫৩) আউট হন, তখন জয়ের সব আশাই শেষ হয়ে যায়। শেষে শামিম হাসান (২৪) ও মাঝপথে মাহমুদুল্লাহ (২৩) চেষ্টা করেন। কিন্তু কুলিয়ে উঠতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রান করতেই অলআউট হয় খুলনা। জাকির, সাকিবের পর আরিফুল হক, শহিদুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে আউট করে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন রবিউল। ঢাকা শুরুতে প্রথম দুই উইকেটেই বড় স্কোর গড়ার ইঙ্গিত দিয়ে ফেলে ঢাকা। দুই ওপেনার নাঈম ও সাব্বির মিলে ৪১ রানের জুটি গড়েন। দলের ৪১ রানে যখন আউট হন নাঈম, তখনই ব্যাট থেকে ১৭ বলে ৫ ছক্কায় ৩৬ রান করে ফেলেন। নাঈমের আউটের পর আল আমিন জুনিয়র এসে ধুন্ধুমার ব্যাটিং শুরু করেন। দ্বিতীয় উইকেটে সাব্বির ও আল আমিন মিলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন। দল ততক্ষণে ১০৫ রানে চলে যায়। এমন মুহূর্তে ২৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ রান করা আল আমিন আউট হয়ে যান। ২ উইকেট যখন হারায় ঢাকা, তখন সাব্বিরের স্কোরবোর্ডে ৩২ রান থাকে। এরপর সাব্বির ধামাকা দেখার মিলে। ছক্কা-চার হাঁকাতে থাকেন সাব্বির। নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফিরছিলেন। সেই ফেরার দিন যেন এসে পড়ে। দ্রুত মুশফিক ও ইয়াসির আউট হয়ে যান। তবে দমে যাননি সাব্বির। আকবরকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। আকবর রানের চাকা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যান। মুহূর্তেই দল আবার ১৫৮ রানে চলে যায়। ১৪ বলেই ১ চার ও ৪ ছক্কায় ৩১ রান করে ফেলেন আকবর। দলের ১৫৮ রানে গিয়ে আকবর আউট হওয়ার পর সাব্বিরও আর টিকে থাকতে পারেননি। দলের ১৬৬ রানে গিয়ে আউট হয়ে যান ম্যাচটিতে দলের পক্ষে একমাত্র অর্ধশতক করা সাব্বির (৫৬)। যেভাবে রান বাড়ছিল, মনে হচ্ছিল ২০০ রান হয়ে যাবে। কিন্তু শেষদিকে রানের গতি কমলে ১৭৯ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। মুক্তার আলী (৬*) ও নাসুম আহমেদ (৫*) দলকে এই রানে নিয়ে যান। টুর্নামেন্টে ঢাকার দলীয় সর্বোচ্চ রান হয়। এই রান করে সহজে জয়ও পায় ঢাকা। লীগ পর্বে দুই দলের প্রথম ম্যাচে খুলনার কাছে হারের প্রতিশোধও নিয়েছে। প্লে-অফ খেলাও নিশ্চিত করে ঢাকা। স্কোর ॥ ঢাকাÑ ১৭৯/৭; ২০ ওভার (নাঈম ৩৬, সাব্বির ৫৬, আল আমিন ৩৬, মুশফিক ৩, ইয়াসির ০, আকবর ৩১, মুক্তার ৬*, রবি ১, নাসুম ৫*; শহিদুল ২/৩১)। খুলনাÑ ১৫৯/১০; ১৯.৩ ওভার (জহুরুল ৫৩, জাকির ১, সাকিব ৮, মাহমুদুল্লাহ ২৩, মাশরাফি ১, আরিফুল ৭, শামিম ২৪, শুভাগত ৫, শহিদুল ৮, হাসান ১৫*, নাজমুল ৪; রবিউল ৫/২৭)। ফল ॥ ঢাকা ২০ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ রবিউল ইসলাম রবি (ঢাকা)।
×