ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডান-আবাহনীর কোটি দর্শক গেল কোথায়?

প্রকাশিত: ১২:০১, ৪ মার্চ ২০২০

মোহামেডান-আবাহনীর কোটি দর্শক গেল কোথায়?

একটা সময় পত্রিকার পাতায় মোহামেডান ম্যাচের আগে কিংবা পরের দিন এমন সব শিরোনাম দেখা যেত। এসব শিরোনাম দেখেই আঁচ করা যায় এই দুই দলের অবস্থান কোথায় ছিল। কালের বিবর্তনে আজকাল এমনটা দেখা যায় না। সমর্থকদের মাঝেও ভাটার টান। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা হকি এই দুই দলের ম্যাচ মানেই বাড়তি উন্মাদনা। এই দুই দলের ম্যাচ মানেই পুরো দেশ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়া। কিন্তু ফুটবল তার জৌলুস হারিয়েছে। মাঠে এমনিতেই দর্শক খরা। আজকাল মোহামেডান আবাহনী দ্বৈরথ হয় চুপিসারে। অনেকে ম্যাচের পরে খবরের পাতায় ছোট্ট হেড লাইনে পড়ে জানতে পারেন এই দুই দলের খেলার খবর। সৃষ্টির পর থেকেই মোহামেডান-আবাহনীর দল গড়া করা হতো চ্যাম্পিয়নের জন্য। বিগত ১৫/২০ বছর যাবত মোহামেডান এই পথ থেকে সরে এলেও আবাহনী এখনও সাফল্যের সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে। মোহামেডান মাঝখানে দুইবার সুপার কাপ ও একবার স্বাধীনতা কাপ জয় করলেও লীগের দেখা নেই বহু বছর। তাই সমর্থকেরা আর আগের মতো আঙ্গুল কষে হিসাব করেন না কে কয়বার চ্যাম্পিয়ন কিংবা একে অপরের মোকাবেলায় জয়লাভ করেছে। আজ সেই ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ও আবাহনীর ফুটবল লড়াই। মোহামেডান-আবাহনী ক্রেজ এখন শূন্যের কোঠায়। তবু মোহামেডান আবাহনী ম্যাচ বলে কথা। মাঠে দর্শক খরা থাকলেও এই ম্যাচ নিয়ে দুই দলের সমর্থকদের মাঝে আগ্রহের সীমা নেই। গতবার লীগের দ্বিতীয় পর্বে মোহামেডান ৪-০ গোলে আবাহনীকে পরাজিত করলে আবার আলোচনায় ফিরতে শুরু করে মোহামেডান। দলবদলের পূর্বে ক্যাসিনো কা-ের পর পরিবর্তন আসে ক্লাবে। পুরনো খেলোয়াড়েরা ক্লাবের হাল ধরেন। কিন্তু ততক্ষণে আন-অফিসিয়ালি অনেক ক্লাব দলবদল সেরে ফেলে। গত লীগের দ্বিতীয় পর্বের কয়েকজন ছাড়া প্রায় সবাই মোহামেডান থেকে চলে গেছেন। তাই অনেকটা আনকোড়া খেলোয়াড়দের নিয়েই দলবদলে অংশগ্রহণ করতে হয় মোহামেডানকে। তবে বিদেশী নাকাতা এবং সুলেমান ডায়াবেটসহ ক্লাবে যোগ দেন নাইজেরিয়ান উগো। পক্ষান্তরে আবাহনী ফরেন রিক্রুটসহ দেশী ও আগের খেলোয়াড়দের ধরে রেখেই দল সাজিয়েছে। তুলনামূলক শক্তির বিচারে মোহামেডানের চেয়ে আবাহনী অনেক এগিয়ে। আজকের ম্যাচে মোহামেডানের বাড়তি অনুপ্রেরণা আবাহনীর সঙ্গে আগের মোকাবেলায় ৪-০ গোলের ব্যবধানে জয় আর আবাহনীর প্রতিশোধের নেশা। আজকের ম্যাচ নিয়ে কথা হয়েছে মোহামেডানের একনিষ্ঠ সমর্থক টিক্কু জামানের সঙ্গে। ইতোমধ্যে টিক্কু জামান ব্যতিক্রমধর্মী মোহামেডান সমর্থক দল মহাপাগল নিয়ে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে গিয়ে মোহামেডানের তিনটি খেলাই দেখেছেন। টিক্কু জামান, ওয়াজেদ হোসেন, রাফিউল রানা, বাপ্পি, সাহিন সামি, শামিম, মোহাম্মদ ইমরান ও পংকজ রায়সহ অনেকেই বলছেন রেফারী নিরপেক্ষভাবে বাঁশি বাজালে আজকের ম্যাচে মোহামেডান জয়ী হবে। তারা জানান যতই দিন যাচ্ছে মোহামেডান ততই গুছিয়ে উঠছে। মোহামেডানের আরেক সমর্থক এইচএসবিসি ব্যাংকের এসিটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট জহিরুল ইসলাম শামিম জানান একটা সময় স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে মোহামেডানের খেলা দেখেছি। এখন মোহামেডান (বিগত ১০/১৫ বছর যাবত) লিগে তেমন ফলাফল করতে পারছে না। তবু মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ হলে নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না। তিনি বলেন, দলে এবার নামকরা তেমন খেলোয়াড় না থাকলেও ক্লাব অফিসিয়ালদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও কোচ সেন লির প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোহামেডানকে একটি লড়াকু দলে পরিণত করার চেষ্টা করছেন। কথা হয়েছে মোহামেডানের কোচ সেন লি এর সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন তার দল সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। তিনি আবাহনীকে হারানোর জন্য নতুন কৌশল করেছেন যা মাঠে দেখা যাবে। তিনি গত বছর লীগের মাঝামাঝি সময় এলেও বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যে দুই দলের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী তা ইতোমধ্যে জেনে গেছেন। আবাহনী গতবার মোহামেডানের সঙ্গে হেরেই শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে পড়ে। এরকম ফলাফল হবে তা কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি। বিগত দিনের মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচের আমেজ এবং আজকের ম্যাচ নিয়ে কথা হয়েছে আবাহনীর সমর্থক খলিলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেকদিন পর ফুটবলের চীর প্রতিদ্বন্দ্বীর আবির্ভাব হয়েছে। তাতে আমি পুলকিত। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আজ। আমি আবাহনীর দুটি ম্যাচে মাঠে ছিলাম। আবাহনী ভাল খেলেছে, মনে হচ্ছে জমবে এবার ফুটবল। আশা করি আবাহনীই আজ জয়ী হবে। আলোচনা হয় আবাহনীর ফুটবলার মামুনুল ইসলাম মামুন এর সাঙ্গে। তিনি জানান আগে এই দুই দলের ম্যাচের জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন। স্টেডিয়াম থাকতো দর্শকে পরিপূর্ণ। টিভিতে খেলা দেখতে এবং রেডিওতে ধারাবিবরণী শোনার জন্য ভিড় জমে যেত। অথচ এখন কেউ খবর রাখেন না এই দুই দলের ম্যাচের। মামুনুল জানান মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন দল গঠন করা বাদ দেয়ার ফলেই স্টেডিয়ামে দর্শক বিপর্যয়। মোহামেডান আগে জয় ছাড়া কিছু ভাবতে পারত না। অথচ এখন বড় দলের কাছ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই যেন খুশি। প্রশ্ন রেখেছিলাম মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ কি আবার আগের ধারায় ফিরবে? উত্তরে জানান আবাহনী এখনও চ্যাম্পিয়নের জন্যই দল গঠন করে। মোহামেডানকেও চ্যাম্পিয়নের লক্ষ্যে দল গঠন করতে হবে। বর্তমানে যারা দলের জন্য এগিয়ে এসেছেন তারা সবাই মোহামেডানের নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তি। তিনি আশার বাণী শুনান যে, মোহামেডানের সমর্থকরা গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার বাইরে গিয়েও খেলা দেখছে, যা দলের জন্য প্লাস পয়েন্ট। আগামীতে চ্যাম্পিয়ন দল গঠন করলে এবং মাঠে উভয় দলের সমর্থকদের উপস্থিতি থাকলে আবার মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচের ক্রেজ ফিরে আসবে। আজকের ম্যাচের ফলাফল কি হতে পারে জিজ্ঞেস করলে জানান, মোহামেডানের চাইতে আবাহনী সবদিক থেকেই এগিয়ে। ফলাফল আবাহনীর অনুকূলেই যেতে পারে। যদিও এই দুই দলের ফলাফল কি হয় তা আগে থেকে বলা মুশকিল। তিনি বিশ্বাস করেন মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচের উন্মাদনা ফিরে এলেই বাংলাদেশ ফুটবলের উন্নয়ন হবে। মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ মানেই উভয় দলের সমর্থকে গ্যালারি পরিপূর্ণ। অথচ দুই দলের এত দর্শক সব গেল কোথায়? ভাবতে অবাক লাগে ১৯৮৭ সালে মোহামেডান-আবাহনী তথাকথিত লীগ ফাইনাল রিপ্লে ম্যাচ নিয়ে দেশের মানুষ শঙ্কিত ছিলেন। খেলার মাঠে বড় কোন অঘটন ঘটতে পারে এই চিন্তায় অবশেষে সে ম্যাচ দর্শকশূন্য আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। অথচ সেই মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ এখন প্রায় দর্শকশূন্য গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সমর্থক কিংবা সাধারণ মানুষের মনে কোন রকম শঙ্কা বিরাজ করে না। প্রশ্ন হতে পারে তাহলে কি আমাদের দেশের দুই জনপ্রিয় দল মোহামেডান-আবাহনী তাদের নিজস্ব সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে? নাকি এই দুই দলের সাঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন ক্লাবের আবির্ভাব? অনেকে হয়ত তাই ভাবছেন। যদি তাই হয় তাহলে তাদের কাছে প্রশ্ন রাখা যেতে পারে নতুন আবির্ভাব হওয়া ক্লাবগুলোর খেলায় দর্শক কোথায়? ৮০-৯০ দশকে এই দুই দলের প্র্যাকটিস ম্যাচ দেখার জন্য যে পরিমাণ ভীর হতো সে পরিমাণও দর্শক এখন ম্যাচের দিন গ্যালারিতেই খুঁজে পাওয়া যায় না। ফুটবল, হকি ক্রিকেট তিন বিভাগেই দাপট ছিল ক্লাব দুটির। দুই দলের মোকাবেলায় কত না আয়োজন করে সবাই খেলা দেখতে ছুটতেন। বিদেশী খেলোয়াড় সংগ্রহে আবাহনী সর্বদাই এগিয়ে ছিল। ১৯৮৭ সালে ইরাকের বিশ্বকাপের ফুটবলার সামির সাকির আর করিম মহাম্মদকে উড়িয়ে আনে। পক্ষান্তরে মোহামেডানও বসে থাকেনি। তারা কোচ কাম খেলোয়াড় হিসেবে নিয়ে আসে ইরানের ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করা গোলরক্ষক নাসের হেজাজিকে। তার সঙ্গে ছিলেন নালজেগারের মতো কুশলী ফুটবলার। ক্রিকেটে আবাহনী বিশ্বনন্দিত খেলোয়াড় পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম, ইংলিশ ক্রিকেটার নেইল ফ্রেয়ার ব্রাদার আর ইলিং ওয়ার্থকে এনে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল। হকিতে আবাহনীতে দেখা গিয়েছিল ভারতীয় খ্যাতিমান হকি খেলোয়াড় ধনরাজ পিল্লাইকে। মোহামেডানও কম নয়। তারা খেলিয়েছে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক রানাতুঙ্গা আর জয়সুরিয়াকে। হকিতে খেলিয়েছে হকির ম্যারাডোনাখ্যাত পাকিস্তানের শাহবাজকে। তার সাঙ্গে ছিলেন তাহির জামান। দুদলের জনপ্রিয়তা দেখে বিদেশী খেলোয়াড়রা পর্যন্ত অবাক হয়ে যেতেন। মোহামেডানের বর্ষীয়াণ সমর্থক জাহাঙ্গীর মুর্শেদ যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার। বয়স এখন ৬৩। মোহামেডানের খেলা থাকলে এখনও অস্থির হয়ে উঠেন। এ বয়সে এখনও তিনি ঢাকার বাইরে গিয়ে খেলা দেখেন। তার চোখে মোহামেডান এবার দুর্বল দল। তিনি মাঠে যান খেলোয়াড়দের উৎসাহ যোগাতে। মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ তিনি দেখবেন। তবে তার দল জয়ী হবে আশা রাখেন। তার বিশ্বাস মোহামেডান খুব শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে। মোহামেডান-আবাহনী ফুটবলে নিজেদের হয়ে রেকর্ড গড়েছে এবং ভেঙ্গেছে। যারা নিয়মিত খেলা দেখেছেন নিশ্চয়ই তাদের মনে আছে আবাহনী ৮৩, ৮৪ এবং ৮৫ সালে হ্যাট্রিক লিগ শিরোপা জয় করে। যা মোহামেডান শিবিরে হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল। মোহামেডান সমর্থকরা ধরেই নিয়েছিল এই রেকর্ড আর কখনই ভাঙবে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে পরবর্তী ৮৬, ৮৭ এবং ৮৮-৮৯ সালেই মোহামেডান হ্যাট্রিক লিগ বিজয় করে। আর মোহামেডানের সমর্থকদের বাড়তি পাওনা ছিল অপরাজিত হ্যাট্রিক লিগ চ্যাম্পিয়ন। ৮৬ সালে আবাহনী ফেডারেশন কাপ ফুটবল সেমিফাইনালে মোহামেডানকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে উঠে। সেই সময়কার সেরা বিদেশী ফরোয়ার্ড শ্রীলঙ্কার প্রেমলাল আবাহনীর হয়ে মোহামেডানের বিরুদ্ধে করে বসেন হ্যাট্রিক। স্টেডিয়ামের এক পাশে আনন্দ উল্লাস, আর আরেক পাশে মোহামেডান সমর্থকদের ফাইনালে না ওঠার বেদনা। সঙ্গে প্রেমলালের হ্যাট্রিক যেন বুকের মধ্যে পেরেক মেরে দিয়েছিল। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর সেই হ্যাট্রিকের বদলা নেয় মোহামেডান। ২০০০ সালে মোহামেডান-আবাহনীর লীগের খেলা চলছে। আবাহনী উড়িয়ে এনেছিল ভারতীয় খেলোয়াড় সাব্বির পাশাকে। মাঠে নেমেই ৯ মিনিটে কেনেডির থ্রো ইন গোল মুখে পড়লে সাব্বির পাশা হেড করে গোল করেন। দর্শকদের উল্লাস কমতে না কমতেই আবার গোল খেয়ে বসে মোহামেডান। ১৫ মিনিটে ফয়সাল এবং জুয়েল রানাকে কাটিয়ে সাব্বির পাশা চমৎকার ক্রস দিলে স্ট্রাইকার ডনের দুর্বল শটে পরাস্ত হন গোলরক্ষক পনির। আবাহনী ২-০ গোলে এগিয়ে থাকার পরও দুটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। পরবর্তীতে নাকিব ৩৩, ৫২ এবং ৭০ মিনিটে অসাধারণ গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন (৩-২)। শেষে এই খেলায় মোহামেডান ৪-৩ গোলে এক অবিস্মরণীয় বিজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ দর্শক সেদিন এই খেলা দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই খেলা আর সেই দর্শক আজ কোথায়? মোহামেডানের মাঝ মাঠের বিদেশী খেলোয়াড় জাপানের উরুই নাকাতা আজকের ম্যাচে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তারা আজ চেষ্টার সবটুকু ঢেলে দিতে প্রস্তুত। মোহামেডানের খেলোয়াড় শাহেদ যিনি গত ম্যাচে শেখ রাসেলের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলদাতা। তিনি জানান মোহামেডান এখন ফাইটিং দলে পরিণত হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা আবাহনীর বিরুদ্ধে জয় নিয়ে ফিরব। আবাহনীর সিনিয়র খেলোয়াড় প্রাণোতোষ জানিয়েছেন মোহামেডান আবাহনী ক্রেজ থাকুক আর নাই থাকুক। এই দুই দলের খেলা মানেই বাড়তি উত্তেজনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই দুই দলের ম্যাচের ফলাফল আগাম বলা মুশকিল। উভয় দলের ফিফটি ফিফটি চান্স আছে। দলীয় অবস্থানে কারা এগিয়ে এসব হিসেব এই দুই দলের ক্ষেত্রে চলে না। ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব, সলিডারিটি কোচেস লাইসেন্সধারী আবাহনীর সমর্থক আব্দুল মজিদ কাজল জানিয়েছেন বর্তমান ফুটবলের সব দলের অবস্থান ১৯/২০। তবে ব্যবধান গড়ে দেয় বিদেশীরা। আবাহনীর বিদেশী এটাকিং ফুটবলার বেশ ভাল। কিন্তু মোহামেডান আবাহনী বলে কথা। কেহ কারও নাহি ছাড়ে সমানে সমান। মাঠে যে দল ভাল খেলবে এবং সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে তারাই জয়ী হবে। যেমন গত লীগের উদাহরণ দেয়া যায়। মোহামেডানের চেয়ে আবাহনী কাগজে কলমে অনেক শক্তিশালী ছিল। কিন্তু ফলাফল কি হলো? মোহামেডান ৪-০ গোলে জিতে যায়। কাজল একটি কথা উল্লেখ করেন, রেফারি যেন ঠিক থাকে। ১২ ভাই যেন না হয়! আমরা ভাল খেলা দেখতে চাই। পক্ষপাত ফুটবলের উন্নয়নে পরিপন্থী। মোহামেডান-আবাহনীতে খেলা সাবেক তারকা ফুটবলার সামছুল আলম মঞ্জু আজকের মোহামেডান আবাহনী ম্যাচ সম্পর্কে জানান, আগে যেমন এই দুই দলের খেলায় সারাদেশে আতঙ্ক বিরাজ করত এখন তেমনটা নেই। এখন ক্লাব অফিশিয়াল এবং গুটি কয়েক সমর্থক ছাড়া আর কারও মাঝে তেমন কোন উত্তেজনা বিরাজ করে না। তিনি জানান সাধারণত চ্যাম্পিয়নের পথে থাকা দল দুটির ওপর সমর্থকদের আগ্রহ থাকে। আবাহনী সৃষ্টির পর থেকে সব সময় চ্যাম্পিয়ন দল গঠন করে। কিন্তু মোহামেডান সে পথ থেকে সরে এসেছে। মোহামেডান-আবাহনী দুটি দল যখনই চ্যাম্পিয়নের পথে থাকবে সমর্থকেরাও আবার স্টেডিয়ামমুখী হবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাঁর বিশ্বাস মোহামেডান আগামীতে আবারও চ্যাম্পিয়নের জন্য দল গঠন করবে এবং ফুটবলে এই দুই দলের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে আসবে। ফুটবলের উন্মাদনা নেই, নেই মোহামেডান-আবাহনী ক্রেজ। তথাপি মোহামেডান-আবাহনী নাকি আবাহনী- মোহামেডান? এই দুই দলের নাম আগে পরে নিয়ে এখনও সোশ্যাল মিডিয়া, ফেইসবুকে চলে তর্ক বিতর্ক। খেলা শেষে কথা চলে রেফারির পক্ষপাতমূলক আলোচনা নিয়ে। খেলা পাগল মানুষগুলো এখনও মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচ হলেই অস্থির হয়ে উঠেন। ছুটে যান মাঠে। সবার আশা ক্রীড়াঙ্গনে আবারও ফিরে আসবে মোহামেডান-আবাহনী উত্তাপ। আবারও মুখরোচক আলোচনায় শামিল হবেন দুই দলের সমর্থকেরা। এই দুই দল নিয়ে আজকাল দারুণ সব শিরনাম না হলেও শীঘ্রই তা ফিরে আসবে। দুই দলের লক্ষ কোটি সমর্থকরা আশা করেন নিশ্চয়ই আবারও মোহামেডান-আবাহনীর খেলা শিরনাম হবে ‘আজ মোহামেডান আবাহনী শীরপা নির্ধারনি ম্যাচ!
×