স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে আট নম্বরে নেমে দেড় বছর পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি২০ খেলতে নেমে আফিফ হোসেন ধ্রুব ২৬ বলে ৫২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন। তাই ২০ বছর ছুঁই ছুঁই এ তরুণের ওপর দারুণ খুশি বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি। তবে টপঅর্ডাররা ব্যর্থ হলেও তাদের ওপর আস্থা রাখছেন তিনি। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে নামার আগে তাই তাদের ওপর আস্থা রাখছেন ম্যাকেঞ্জি। দক্ষিণ আফ্রিকান এ কোচ আফগান স্পিন শক্তির বিষয়টি জেনেই সেভাবে দলের ব্যাটসম্যানদের প্রস্তুত করছেন বলে দাবি জানিয়েছেন শনিবার বিকেলে অনুশীলনে নামার আগে।
একমাত্র টেস্ট ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা দারুণ সমালোচিত হয়েছে। সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি টপঅর্ডারের স্বীকৃত ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ম্যাকেঞ্জি বললেন, ‘তারা যন্ত্র নয়, মানুষ। আমরা সবসময়ই দলের পাশে থাকব এবং সমর্থন দেব। এমনকি আমরা যদি আগামীকালও হেরে যাই আমরা পরবর্তী ম্যাচ জিতব। আমরা হারতে যাই না। বাংলাদেশ ভয়ভীতি বাদ দিয়েই শতভাগ ইতিবাচক খেলার জন্য নামে। আমি বিশ্বাস করি যে মেধা এবং তার প্রয়োগ দেখেছি তাতে করে প্রতি ম্যাচেই আমাদের জেতার সুযোগ আছে। আমার মনে হয় মাঝে মাঝে আমাদের সবচেয়ে খারাপ শত্রুই হচ্ছে বাংলাদেশ নিজে। কারণ আমরা নিজেদের ওপর অনেক বেশি চাপ প্রয়োগ করি। আমাদের অনেক লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ আছে এবং পুরো দলের ওপরই যথেষ্ট আস্থা আছে। অনেক ছেলেই আছে গত ৬ মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক ভাল খেলেছে। আমার মনে হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। সবসময় এখানে স্কোর করতে পারবে না। কিন্তু যখনই তারা দু’য়েকটি ম্যাচে ভাল স্কোর করছে না সবাই উত্তেজিত ও হতাশ হয়ে পড়ছে। কিন্তু আমাদের এই মেধাবী ক্রিকেটারদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আমাদের ধৈর্য, আস্থা ও বিশ্বাস থাকতে হবে।’
আফগানিস্তানের স্পিন বোলিংয়ে শক্তির গভীরতা নিয়েই যত চিন্তা। বরাবরই রশীদ খান, মোহাম্মদ নবী আর মুজিব উর রহমানের স্পিনের কাছে অসহায় দেখা গেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। এসব ভেবেই সেভাবে ব্যাটসম্যানদের প্রস্তুত করছেন ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তানের বোলারদের ভালভাবেই জানি, নির্দিষ্টভাবে তাদের বোলারদের জানি। কিন্তু আপনি তাদের কিছু সিমারের কথা ভুলে থাকতে পারবেন না এবং তাদের স্পিনাররা আসলে সব খ্যাতি নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে কিছু ভাল সিমারও আছে তাদের। তাদের বিশ্বমানের কিছু বোলার আছে, বিশেষ করে স্পিনার। সে কারণে আমরা সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি।’ ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি২০ খেলতে নেমেই দুর্দান্ত এক ফিফটিতে দলকে জিতিয়েছেন আফিফ। ম্যাকেঞ্জি এ বিষয়ে বলেন, ‘খুবই ভাল লাগছে যে বছর দু’য়েক পর আফিফ ভালভাবে ফিরে এসেছে। আমার মনে হয় সবচেয়ে বড় যে চিন্তা আমাদের পেয়ে বসেছে সেটি হচ্ছে আমাদের এই মুহূর্তে অনেক বেশি পরিমাণে ভাল খেলোয়াড় আছে। এখন শুধু ধারাবাহিকতাটাই আমরা খুঁজছি। তাদের সামর্থ্য নিয়ে আমাদের কোন সন্দেহ নেই। যখন প্রথমদিকের সবাই ব্যর্থ হয় দল হিসেবে অবশ্যই কাউকে দায়িত্বটা নিতে হয়। আর সেটাই ভাল দলগুলো করে থাকে। যখন তাদের ভাল কিছু হয় না তখন সপ্তম ও অষ্টম নম্বরে দারুণ কিছু করে। সেটাই আমাদেরও হয়েছে গতকাল। আমার কাছে কিছু নেতিবাচক ব্যাপার আছে, কিন্তু অনেক বড় ইতিবাচক একটা দিকও আছে। পরিকল্পনা হচ্ছে গেম প্ল্যানের সঙ্গে লেগে থাকা। আমরা জানি তারা কি করতে পারে। কি ধরনের চ্যালেঞ্জ আছে সেটাও জানি। এখন শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে যখন নিজেকে নিয়েই সঙ্কোচ কিংবা উৎকণ্ঠায় থাকবেন তখন নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারবেন না। আমি এমন একজন ব্যাটসম্যান পাইনি যার মধ্যে এই চিন্তাটা আছে যে এটাই আমার শেষ সুযোগ এবং আমি এমনটা করতে চাই না। আমাদের মাঠে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ইতিবাচক খেলতে হবে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: