ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের কোচ হচ্ছেন কে?

প্রকাশিত: ১২:৩৯, ৯ আগস্ট ২০১৯

বাংলাদেশের কোচ হচ্ছেন কে?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল টি২০) কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের কোচ ছিলেন নিউজিল্যান্ডের মাইক হেসন। হঠাৎ করেই তিনি কোচের পদ ছেড়ে দেন। আর তাতে করেই বাংলাদেশের প্রধান কোচ হচ্ছেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের সফল এ সাবেক প্রধান কোচ, সেই গুঞ্জন উড়ে বেড়ায়। গুঞ্জন শেষ পর্যন্ত সত্যিও হয়ে যেতে পারে। বিসিবির যে চাহিদা, জাতীয় দলের কোচ থাকার সময় বিশ্বের কোন লীগের দায়িত্বে থাকা চলবে না; তাতো হেসন পূরণ করেই দিয়েছেন। তাহলে কী শেষ পর্যন্ত হেসনকেই কোচ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? তা এখনও নিশ্চিত নয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সম্প্রতি বলেছেন, ‘দ্রুত কোচ নিয়োগ হয়ে যাবে। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে।’ সেই পথেই এগিয়েও চলেছে বিসিবি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর সাক্ষাতকার নেয়ার মধ্য দিয়ে কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোদমে শুরুও হয়ে গেছে। কিন্তু কে হচ্ছেন কোচ? তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। যতদূর জানা গেছে, নিউজিল্যান্ডের মাইক হেসন, দক্ষিণ আফ্রিকার রাসেল ডোমিঙ্গো, ইংল্যান্ডের পল ফারব্রেস, জিম্বাবুইয়ের গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ও শ্রীলঙ্কার চন্দিকা হাতুরাসিংহে বিসিবির সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। এ কোচদের মধ্য থেকেই একজনকে নিয়োগ দেবে বিসিবি। এমনও ধারণা করা হচ্ছে। সেই নিয়োগ পাওয়া কোচটি হেসন হওয়ার সম্ভাবনাই উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। নিউজিল্যান্ডে দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে যে সাফল্য কুড়িয়েছিলেন হেসন। শুধু তাই নয়, সামনেই আগামী বছর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় হবে টি২০ বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন একই। হেসন কোচ হলে তিনি খুব ভালভাবেই সেই কন্ডিশন সম্পর্কে বুঝবেন। দলও টি২০ বিশ্বকাপে ভাল করার সম্ভাবনায় থাকবে। যদিও ইংল্যান্ডের স্টিভ রোডসকেও ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ভাবনা থেকেই কোচ করা হয়েছিল। কিন্তু ফল খুব ভাল মিলেনি। সামনেই বাংলাদেশের সিরিজ রয়েছে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৫ সেপ্টেম্বর একমাত্র টেস্ট ম্যাচ শুরু করবে বাংলাদেশ। এরপর আছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, জিম্বাবুইয়ের মধ্যকার একটি ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজও। এর আগেই কোচ নিয়োগ চূড়ান্ত করতে চায় বিসিবি। ক্রিকইনফো জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের সাবেক কোচ জিম্বাবুইয়ের এ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকেও কোচ করতে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু একাধিকবার প্রস্তাব দেয়ার পরও ফ্লাওয়ার রাজি হননি। সংক্ষিপ্ত তালিকায় যারা আছেন তাদের মধ্যে হেসনই এগিয়ে আছেন। কারণ বিসিবি সভাপতি ও বোর্ডের কয়েকজন পরিচালক হেসনের প্রতি আগ্রহী। হেসনের যে আছে অসাধারণ খ্যাতি। দীর্ঘ সময় ধরে সেই ২০১২ থেকে গত বছর আগস্ট পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন হেসন। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড দলের দায়িত্ব স্বদেশী গ্যারি স্টিড। নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে নাটকীয়ভাবে হেরে শিরোপা জিততে পারেনি। তবে সেই দলটি বিশ্বকাপে খেলেছে, সেই দল গড়ে তুলেছিলেন হেসনই। স্টিড এসে একবছরে তা একটু ঝালাই করে নেন। হেসনের প্রতি তাই বিসিবিরও আগ্রহ প্রচুর। আইপিএলে পাঞ্জাবের কোচের দায়িত্ব ছাড়ায় তো হেসনের বাংলাদেশের কোচ হওয়ার সম্ভাবনার দুয়ারই খুলে গেছে। হেসনের সঙ্গে ডোমিঙ্গোও পাল্লা দিচ্ছেন। তিনি যে আটমাস দক্ষিণ আফ্রিকার শুধু টি২০ দলের কোচ ছিলেন। পরে টেস্ট, ওয়ানডে দলের কোচ হয়েও সাফল্য কুড়িয়েছেন। ইংল্যান্ডের সাবেক সহকারী কোচ পল ফারব্রেসও আছেন বিসিবির ভাবনায়। তবে হেসনের সঙ্গে কথা চূড়ান্ত হয়ে গেলে, সবকিছু মিলে গেলে ফারব্রেসের দিকে ঝুঁকবে না বিসিবি। কারণ একবার বিসিবির পস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ফারব্রেস। এমন সময় বিসিবির প্রস্তাবে পাত্তা দেননি, যখন হাতুরাসিংহের বিদায়ের পর ভালমানের কোচ পাওয়া নিয়ে বিপত্তিতে ছিল বিসিবি। গ্র্যান্ড ফ্লাওয়ারের এখন চাকরি নেই। পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বিসিবি যে চাচ্ছে জাতীয় দলের কোন অভিজ্ঞ কোচ, ফ্লাওয়ার সেই চাহিদাতেই তো পড়েন না। হাতুরাসিংহেকে নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন। কিন্তু যেই শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান বাংলাদেশের কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। হঠাৎ করে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল। কোচশূন্য হয়ে পড়ে। এখন শ্রীলঙ্কা কোচের পদ থেকে হাতুরাসিংহেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হাতুরাসিংহে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তাতে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড ও হাতুরাসিংহের অবস্থা এখন ঘোলাটে হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশও নিশ্চয়ই ঝামেলা এড়িয়ে চলতেই চাইবে? তাছাড়া হাতুরাসিংহেকে আবারও ফিরিয়ে আনা, কোচ করানোর বিষয়টিও তো ভাবনার। যদিও তার প্রতি বোর্ডের আগ্রহ ছিল এবং আছেও। হাতুরাসিংহেও আসলে সবকিছুই মিলিয়ে বাদের তালিকাতেই আছেন বলা চলে। ফারব্রেস, ফ্লাওয়ার ও হাতুরাসিংহে যদি সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকার পরও নিশ্চিত না থাকেন তাহলে বাকি থাকেন হেসন ও ডোমিঙ্গো। তার মানে এই দুইজনের একজন থেকেই কোচ হয়ে যেতে পারেন। শুধু টি২০ বিশ্বকাপের হিসেব করলে ডোমিঙ্গো ভাবনায় থাকছেন। আর সব ফরমেট মিলিয়ে হিসেব করলে হেসন চাহিদায় আছেন। ডোমিঙ্গো সাক্ষাতকার দিয়েছেন। তার সাক্ষাতকারে সন্তুষ্টও বিসিবি। এখন হেসন ও বাকি কোচরাও সাক্ষাতকার দেবেন। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কে হচ্ছেন কোচ।
×