স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সারাদেশ থেকে সম্ভাবনাময়ী ক্রীড়াবিদদের খুঁজে বের করতে প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত বাংলাদেশ যুব গেমসের উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গত বছরের ২৮ অক্টোবর লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যে বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), সারাদেশে তা রূপ পেয়েছে যুব জাগরণের। আগামী ১০-১৬ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্তপর্ব। গত বছরের ১৮-২৪ ডিসেম্বর ২১ ডিসিপ্লিনে ২৭ হাজার ১৯৬ ক্রীড়াবিদসহ প্রশিক্ষক, সংগঠক এবং ম্যাচ অফিসিয়াল মিলে ৪৮ হাজার ৪২৮ ক্রীড়াবিদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে দেশের ৬৪ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ের বাংলাদেশ যুব গেমস ফেলেছে ব্যাপক সাড়া। পরবর্তীতে আট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় ৬৭০৮ ক্রীড়াবিদকে নিয়ে এ বছরের ৮-১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ যুব গেমসের জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। ২টি কঠিন ধাপ সফলভাবে আয়োজনের পর এখন দরজায় কড়া নাড়ছে বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্ব। ২০ কোটি টাকা বাজেটের এই আসরের চূড়ান্তপর্বে অংশগ্রহণের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাছাইকৃত সেরা তরুণ ক্রীড়াবিদরা জড়ো হতে শুরু করেছে ঢাকায়। আগামী ১০ মার্চ থেকে ১৬ মার্চ ৩৪০ স্বর্ণপদকের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হচ্ছে অনুর্ধ-১৭ বছরের ২৬৬০ ক্রীড়াবিদ।
গত ৭ মার্চ ফুটবল দিয়ে শুরু হয়েছে চূড়ান্তপর্ব। তবে আগামী ১০ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। চূড়ান্তপর্বে দলগত ডিসিপ্লিনে ফুটবল, কাবাডি, বাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল ও হকি এবং ব্যক্তিগত ডিসিপ্লিনে এ্যাথলেটিক্স সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, রেসলিং, উশু, শূটিং, আরচারি, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং, দাবা, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ানদো, স্কোয়াশের ১৫৯ ইভেন্টে ১ হাজার ১১৪ পদকের লড়াইয়ে (৩৪০ স্বর্ণ, ৩৪০ রৌপ্য এবং ৪৩০ তাম্র) ২৬৬০ প্রতিযোগী অংশ নেবে। ২১ ডিসিপ্লিনের জন্য ইতোমধ্যে ভেন্যু চূড়ান্ত হয়েছে।
চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতা আয়োজনে ২১ ক্রীড়া ফেডারেশনকে দেয়া হয়েছে দায়িত্ব। ফেডারেশনসমূহের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের আবাসন সুবিধা দেয়া হয়েছে, দৈনিক ভাতা-বন্টন এবং আসা-যাওয়ার খরচও ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে। অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের সবাইকে দেয়া হয়েছে ট্র্যাকস্যুট এবং বিভাগীয় দলের জার্সি। বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্ব থেকে সেরাদের খুঁজে বের করতে বিওএ এবং ফেডারেশনসমূহের সমন্বয়ে টেকনিক্যাল কমিটি গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্বে বয়স নির্ধারণী পরীক্ষা দিতে হয়েছে ক্রীড়াবিদদের। এই গেমসের মেডিক্যাল কমিটি সে পরীক্ষা নিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করতে ব্যাপক পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই গ্রহণ করেছে সিরিমনিজ কমিটি। লেজার শো, আতশবাজি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অন্তর শো বিজের ব্যবস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবে নতুনত্ব। বাংলাদেশের কৃতী ক্রীড়াবিদ, কমনওয়েলথ গেমস এবং সাফ গেমসে শূটিংয়ে স্বর্ণজয়ী ক্রীড়াবিদ আসিফ হোসেন খান অলিম্পিক মশাল প্রজ্বলন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্চপাস্টে আট বিভাগীয় দলের ব্যানারে অংশ নেবেন ক্রীড়াবিদরা। ২০ কোটি টাকার এই আসরে চূড়ান্তপর্বে পদক পাবেন বিজয়ীরা। বিজয়ী দল পাবে ট্রফি।
চূড়ান্তপর্ব উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিওএ ভবনের অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজার উপস্থিতিতে চূড়ান্তপর্বের বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ যুব গেমসের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিসিটি কমিটির চেয়ারম্যান এবং বিওএ’র সহ-সভাপতি শেখ বশির আহমেদ। বাংলাদেশ যুব গেমসের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু এবং বিওএ’র উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনুর এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রতি দুই বছর অন্তর বাংলাদেশ গেমস ও বাংলাদেশ যুব গেমস আয়োজনের ঘোষণা দেন বিওএ মহাসচিব। চূড়ান্তপর্ব থেকে বাছাইকৃত তরুণ ক্রীড়াবিদদের পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনসমূহ উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছেন বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: