ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয়বার ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলার হয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসির রেকর্ড স্পর্শ রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টারের, সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে থাকতে চান আরও দশ বছর

গ্রিজম্যান, বেলকেও সেরা মানছেন বিনয়ী রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২৭ আগস্ট ২০১৬

গ্রিজম্যান, বেলকেও সেরা মানছেন বিনয়ী রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলারের মুকুট ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মাথায় উঠছে সেটা অনুমিতই ছিল। অবশেষে সেটাই হয়েছে। রেকর্ড দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা বেস্ট প্লেয়ার এ্যাওয়ার্ড জিতেছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মোনাকোতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠানে ২০১৫-১৬ মৌসুমে সবার সেরা হিসেবে সি আর সেভেনের নাম ঘোষণা করা হয়। মুকুট জয়ের পর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান ও ক্লাব সতীর্থ গ্যারেথ বেলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন রোনাল্ডো। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দু’জনই যোজন যোজন পিছিয়ে থাকলেও সি আর সেভেনের মতে, এই এ্যাওয়ার্ড জয়ের যোগ্য ছিলেন তারাও। এ প্রসঙ্গে রোনাল্ডো বলেন, এই এ্যাওয়ার্ড জিতে আমি গর্বিত, খুশি। অসাধারণ একটা মৌসুম কাটিয়েছি। কিন্তু বাকি দু’জনও (বেল ও গ্রিজম্যান) এই এ্যাওয়ার্ডের যোগ্য। তারাও অসাধারণ। রোনাল্ডো আরও জানান, রিয়াল মাদ্রিদে আরও ১০ বছর থাকার ইচ্ছা আছে তার। ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার সবচেয়ে বেশি পাঁচবার জিতেছেন মেসি। ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও সবচেয়ে বেশি দুইবার উঠেছে বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন তারকার হাতে। ফিফা বর্ষসেরায় বার্সা ডায়মন্ড এখনও এগিয়ে থাকলেও ইউরোপ সেরায় আর একক আধিপত্য নেই। এ বছর মেসিকে ছুঁয়ে ফেলেছেন রোনাল্ডো। ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর ২০১৫-১৬ মৌসুমের ইউরোপসেরার পুরস্কারও যে উঠেছে পর্তুগাল অধিনায়কের হাতে। ২০১০-১১ মৌসুম থেকে এই পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। এরপর প্রতিবারই তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন রোনাল্ডো। অন্যদিকে মেসি সেরা তিন খেলোয়াড়ের তালিকায় থাকতে পারেননি ২০১৩-১৪ ও ২০১৫-১৬ মৌসুমে। তবে এই পুরস্কার জিতেছেন ২০১০-১১ ও ২০১৪-১৫ মৌসুমে। অর্থাৎ মেসি ও রোনাল্ডোই শুধুমাত্র দুইবার করে ইউরোপসেরা হয়েছেন। মেসি-রোনাল্ডোর বাইরে এই পুরস্কার জিততে পেরেছেন শুধু আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা (২০১১-১২) ও ফ্রাঙ্ক রিবেরি (২০১২-১৩)। এবার ষষ্ঠবারের মতো দেয়া হলো এই পুরস্কার। গ্রিজম্যান ও বেল দু’জনকেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে পেছনে ফেলেছেন রোনাল্ডো। সবার সেরা হতে ফাইনাল রাউন্ডে পর্তুগীজ তারকা পেয়েছেন ৪০ ভোট। ৮ ভোট পেয়ে গ্রিজম্যান দ্বিতীয় ও ৭ ভোট পেয়ে বেল হয়েছেন তৃতীয়। ২০১৫-১৬ মৌসুমটা রোনাল্ডোর বর্ণিল ফুটবল ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মৌসুম। প্রথমে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা। ১৬ গোল করে তিনিই ছিলেন ইউরোপসেরার আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা। এরপর জাতীয় দলের জার্সি গায়েও রোনাল্ডো পেয়েছেন তাক লাগানো সাফল্য। তার অধিনায়কত্বেই প্রথমবারের মতো পর্তুগাল জিতেছে ইউরোর শিরোপা। মাঝে মধ্যেই রোনাল্ডোর রিয়াল ছাড়ার গুঞ্জন রটে। বেশি উচ্চারিত হয়, সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরতে পারেন পর্তুগীজ সুপারস্টার। তবে এসব খবর যে বানোয়াট, ভিত্তিহীন সে প্রমাণ অনেকবার মিলেছে। রোনাল্ডো আরও একবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কোথাও যাচ্ছেন না তিনি, থাকছেন সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতেই। ইউরোপসেরা হওয়ার পর বিশ্বনন্দিত এই তারকা বলেন, আমার এখন এ রকমই ইচ্ছা। আমি বিশ্বের সেরা ক্লাবে খেলছি। এখানে আরও ১০ বছর খেলেই আমি ক্যারিয়ার শেষ করতে চাই। রিয়ালের সঙ্গে চুক্তিটাও আমি বাড়াতে চাই। বর্তমানে রিয়ালের সঙ্গে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে রোনাল্ডোর। গত মে মাসেও সি আর সেভেন বলেছিলেন, এটা স্পষ্ট যে আমি এখানেই (রিয়াল মাদ্রিদ) থাকতে চাই, এই ক্লাবেই খেলা চালিয়ে যেতে চাই। ২০০৯ সালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রেকর্ড ৮০ মিলিয়ান পাউন্ড (১১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এর বিনিময়ে রিয়ালে যোগ দেন রোনাল্ডো। এরপর থেকেই তার ক্যারিয়ার ও সাফল্য নতুন মোড় নেয়। একের পর এক দুর্দান্ত পারফর্মেন্স দিয়ে রিয়ালকে সাফল্য উপহার দেয়ার পাশাপাশি নিজেও হয়েছেন বিশ্বসেরা।
×