ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবারও শূন্য থাকছে রিয়াল মাদ্রিদের শোকেস!

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ৮ এপ্রিল ২০১৬

এবারও শূন্য থাকছে রিয়াল মাদ্রিদের শোকেস!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তাহলে এবারও শোকেস শূন্যই থাকছে রিয়াল মাদ্রিদের? বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে জার্মান ক্লাব উলফসবার্গের কাছে রিয়ালের ২-০ গোলে শোচনীয় হারের পর এমন সম্ভাবনাই জোরালো হয়েছে। ১২ এপ্রিল নিজেদের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে অসাধ্য সাধন করতে পারলেই কেবল অন্তত মৌসুমে একটি শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা টিকে থাকবে রিয়ালের। কিন্তু পরশু রাতে জার্মান ক্লাবটির নৈপুণ্য বুঝিয়ে দিয়েছে শুধু সেমিফাইনাল নয়, আরও বড় স্বপ্ন বুনছে দলটি। গত মৌসুমে একটি শিরোপাও জিততে পারেনি গ্যালাক্টিকোরা। চলতি মৌসুমেও খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে স্প্যানিশ লা লিগাসহ অন্যান্য শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা শেষ হয়েছে। বাকি আছে শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। কিন্তু শেষ আটের শুরুতে উলফসবার্গ যে ধাক্কাটা দিয়েছে তাতেই মনে হচ্ছে এবারও খালি হাতেই থাকতে হচ্ছে রেকর্ড সর্বোচ্চ ১০ বারের ইউরোপ সেরাদের। স্প্যানিশ লা লিগার এল ক্লাসিকোতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে মানসিকভাবে চনমনে অবস্থাতেই জার্মান সফরে আসে রিয়াল। অন্যদিকে বুন্দেসলিগার শেষ তিন ম্যাচেই জয়ের দেখা পায়নি উলফসবার্গ। অথচ সেই দলর কাছেই কি না অনেকটা অসহায়ভাবে হার মানলেন রোনাল্ডো, বেনজেমা, বেলরা! অবশ্য ম্যাচের শুরুটা অন্যরকম ইঙ্গিতই দিয়েছিল। ছন্দময় ফুটবল শুরু করেন রিয়াল ফুটবলাররা। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই স্বাগতিকদের জালে বল পাঠান সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি হয়নি। কিছুক্ষণ পর গ্যারেথ বেলের পেনাল্টির জোরালো আবেদন রেফারি নাকচ করে দেন। এরপর করিম বেনজেমা ডোবান রিয়ালকে। উলফসবার্গের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন এই ফরাসী ফরোয়ার্ড। এরপরই মূলত ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ১৭ মিনিটে আন্দ্রে শুরলে বল নিয়ে রিয়ালের রক্ষণসীমায় ঢুকে পড়লে তাকে ফেলে দেন কাসেমিরো। পরের মিনিটে পেনাল্টি থেকে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন রিকার্ডো রড্রিগুয়েজ। অবশ্য টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, রেফারি রিয়ালের প্রতি অন্যায্য কাজ করেছেন! এই পেনাল্টি গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের অপরাজিত থাকার স্বপ্নযাত্রার ইতি ঘটে। রিয়ালকে দ্বিতীয়বার আঘাত করতে খুব বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। ২৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে ব্রুনো হেনরিকের পাস থেকে দুর্দান্ত গোল করে রিয়াল শিবিরকে স্তব্ধ করে দেন ম্যাক্সিমিলিয়ান আরনল্ড। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে বেশ এলোমেলো হয়ে পড়ে রিয়াল। এরপর আবার প্রথমার্ধের শেষদিকে বেনজেমা চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে তাদের আক্রমণের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। দ্বিতীয়ার্দের পুরোটা সময় বলের দখল নিয়ে খেললেও গোল করার মতো তেমন সংঘবদ্ধ আক্রমণ করতে পারেনি জিদানের শিষ্যরা। উল্টো পাল্টা আক্রমণ থেকে কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত উলফসবার্গের। ম্যাচ শুরুর আগেই উলফসবার্গকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। শেষ পর্যন্ত শঙ্কাই সত্যি হয়েছে। তবে এমন হার মানতে কষ্ট হচ্ছে ফরাসী কিংবদন্তির। ম্যাচ শেষে জিদান বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। বিশেষ করে প্রথমার্ধ নিয়ে। এমনটা ঘটে যখন আপনি শুরু থেকে পূর্ণ শক্তি দিয়ে খেলেন না। বার্সিলোনার বিপক্ষে আমরা যেভাবে খেলেছিলাম, এই ম্যাচটাও আমরা সেভাবেই খেলতে চেয়েছিলাম। বার্সার বিপক্ষে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলেছিলাম। আর এখানে প্রথমার্ধে আমরা ছিলাম অনুজ্জ্বল। শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট হতে না পারলেও হতাশাজনক হারের দায় অবশ্য নিজের কাঁধেই নিয়েছেন জিদান। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, কোচ হিসেবে আমি পুরো দায়িত্ব নিচ্ছি। আমরা এই ম্যাচটা আবার দেখব আর সেটা বিশ্লেষণ করব। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত।
×