ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমরা ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগোচ্ছি’

প্রকাশিত: ০২:১৪, ১ এপ্রিল ২০২৪

‘আমরা ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগোচ্ছি’

জাফর আলম ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী  সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি

প্রশ্ন: আপনাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য কি? এই কার্ড গ্রাহক কেন ব্যবহার করবেন? 
উত্তর: সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলো এটি শরিয়া কমপ্লায়েন্স কার্ড যার সঙ্গে বিনামূল্যে সম্পূরক (Supplementary) কার্ড দেওয়া হয়। এই কার্ডে গ্রাহকগণ ৪৯ দিন পর্যন্ত মুনাফা ফ্রি সময় উপভোগ করতে পারেন। এই সময়ের মধ্যে পরিশোধ করলে গ্রাহককে মুনাফা দিতে হয় না। আবার প্লাটিনাম কার্ডধারীদের বিনামূল্যে প্রায়োরিটি পাস (Priority Pass) কার্ড দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে গ্রাহকগণ  হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলাকা ভিআইপি লাউঞ্জে এবং বিশ্বব্যাপী নির্ধারিত লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারেন। 
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে এটিএম থেকে নগদ টাকা তোলার সুবিধা পাওয়া যায়।  এটি ইএমভি চিপভিত্তিক কার্ড এবং পিন সক্রিয় হওয়ায় অত্যন্ত সুরক্ষিত কার্ড। এ ছাড়াও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের কার্ডের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো নমনীয় পেমেন্ট সুবিধা, নির্বাচনী মার্চেন্ট আউটলেটে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট সুবিধা, ব্যালেন্স ট্রান্সফার সুবিধা, নির্বাচিত মার্চেন্ট আউটলেটে ২৪ মাস পর্যন্ত  মুনাফাবিহীন (0% i-Pay ২৪ মাস পর্যন্ত) কিস্তি সুবিধা, রিওয়ার্ড পয়েন্ট প্রোগ্রামে বার্ষিক ফিতে ৫০% বা ১০০% মওকুফ করার সুবিধা, স্বল্প Profit Rate, দেশে ও বিদেশে পস ও ই-কমার্স লেনদেন ইত্যাদি। ই-কমার্স লেনদেন টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) দ্বারা সুরক্ষিত।
প্রশ্ন: গ্রাহকদের জন্য আপনাদের কয় ধরনের ক্রেডিট কার্ড আছে? এগুলোর জনপ্রিয়তা কেমন?
উত্তর: সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বর্তমানে ৫ ধরনের ক্রেডিট কার্ড আছে। এগুলো হলো ভিসা লোকাল ক্লাসিক, ভিসা লোকাল গোল্ড, ভিসা ডুয়াল ক্লাসিক, ভিসা ডুয়াল গোল্ড, ভিসা ডুয়াল প্ল্যাটিনাম। তা ছাড়া হজযাত্রীদের জন্য আমরা হজকার্ড দিচ্ছি। অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ওপর আরোপিত মুনাফা, ফি এবং অন্যান্য চার্জ অনেক কম। আমাদের কার্ডে কোনো হিডেন চার্জ নেই। গ্রাহকগণ বাংলাদেশের প্রতিটি এটিএম থেকে কম খরচে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তুলতে পারেন। সর্বপ্রকার পস মেশিনে আমাদের কার্ড ব্যবহার করা যায়। আমাদের কার্ডে নির্বাচিত মার্চেন্ট আউটলেটে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ইএমআই (EMI), ডিসকাউন্ট এবং মুনাফাবিহীন কিস্তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলাকা ভিআইপি লাউঞ্জে এবং বিশ্বব্যাপী নির্বাচনী লাউঞ্জে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার সুবিধা রয়েছে।
প্রশ্ন: দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম। কেন এর বাজার সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না?
উত্তর: ক্রেডিট কার্ডের সম্প্রসারণ হচ্ছে না বিষয়টি এভাবে বলা মনে হয় সঙ্গত হবে না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। প্রযুক্তি-নির্ভর সেবা গ্রহণে অভ্যস্ত হচ্ছে। এখন আমরা ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে এগোচ্ছি। বাংলাদেশ আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ক্রেডিট কার্ডের প্রচার এবং প্রসার শহরকেন্দ্রিক হয়ে আছে। কার্ডের সুযোগ-সুবিধা এবং এর ব্যবহারের উপযোগিতা দেশব্যাপী পৌঁছে দেওয়া গেলে বাজার সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে। কার্ডের বাজার সম্প্রসারণে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে গ্রাহক কর্তৃক ট্যাক্স রিটার্ন কপি জমা দেওয়া। বিষয়টা কিছুটা ছাড় দিতে পারলে বাজার সম্প্রসারণ সহজ হবে। দেশে এক লাখের ওপরে মানুষ টিনধারী হলেও রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ২৮ হাজার। এক্ষেত্রে গ্রাহকের ট্যাক্স রিটার্ন কপির পরিবর্তে টিন সার্টিফিকেট জমা নেওয়া যেতে পারে।
প্রশ্ন: রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কি ধরনের অফার দিচ্ছেন? 
উত্তর: রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ইএমআই (EMI), ডিসকাউন্ট এবং মুনাফাবিহীন কিস্তি সুবিধার মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে ঘর সাজানোর পাশাপাশি শপিং মল, হোটেল এবং রেস্তোরাঁয় ইুঁ ১ এবঃ ১-এর বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছি। 
প্রশ্ন: আপনাদের ঝওইখ ঘড়ি অ্যাপ কতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে? এই অ্যাপ ব্যবহারে গ্রাহক কতটা লাভবান হতে পারেন?
উত্তর: আমাদের ‘এসআইবিএল নাউ’ অ্যাপ বেশ জনপ্রিয়। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল অ্যাপের সুবিধা যুগোপযোগী করা হয়েছে এবং সেবার আওতাও বাড়ানো হয়েছে। আমাদের ‘এসআইবিএল নাউ’ অ্যাপে সংযোগ করা হয়েছে ই-অ্যাকাউন্ট সেবা যার মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি দেশে-বিদেশে যে কোনো স্থান থেকে এখন ঘরে বসেই মোবাইলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন, এর জন্য গ্রাহককে ব্যাংকের শাখায় আসার প্রয়োজন নেই। ‘এসআইবিএল নাউ’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় দুই লাখ গ্রাহক ডিজিটাল ট্রানজেকশনের সুবিধা নিচ্ছেন। এসব অ্যাকাউন্টে প্রতিমাসে প্রায় তিন লক্ষাধিক ট্রানজেকশন হচ্ছে। ই-অ্যাকাউন্ট সেবার আওতায় ইতোমধ্যে প্রায় বিশ হাজার গ্রাহক ঘরে বসেই অ্যাকাউন্ট খুলেছেন এবং ব্যাংকিং লেনদেন করছেন। ‘এসআইবিএল নাউ’ অ্যাপ দিয়ে গ্রাহকগণ মোবাইলে রিচার্জ থেকে শুরু করে ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, ফান্ড ট্রান্সফার, নগদ ও বিকাশে ফান্ড ট্রান্সফার ও অ্যাড মানি, ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট ও ক্যাশ উইথড্রয়াল পর্যন্ত নানান সেবা নিতে পারছেন।

×