ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫, ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জান্নাত লাভের উপায় বলে দিয়েছিলেন রাসুল (সা.)

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১০ জুন ২০২৫

জান্নাত লাভের উপায় বলে দিয়েছিলেন রাসুল (সা.)

ছবি: সংগৃহীত

সাহাবী হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু-এর সঙ্গে বিদায় মুহূর্তে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি অমর বার্তা প্রদান করেছিলেন—যা জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির চিরন্তন দিকনির্দেশনা।

রাসূল ﷺ তাঁকে ইয়েমেনের কাজী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন। যেদিন হযরত মুয়াজ রওনা হন, সেদিন নবীজী ﷺ স্বয়ং পায়ে হেঁটে অনেকদূর এগিয়ে দিয়ে তাঁকে বিদায় জানাতে আসেন। তখন মুয়াজ (রা.) লজ্জিত হয়ে বললেন, “আপনি সওয়ারিতে আরোহণ করুন।” উত্তরে নবীজি ﷺ বলেন,

“আমি তোমার প্রতি নয়, **তোমার জ্ঞানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছি।"

বিদায় মুহূর্তে নবীজি ﷺ ছিলেন গভীরভাবে চিন্তিত। তিনি বলছিলেন,

“হে মুয়াজ, সম্ভবত আমার সঙ্গে তোমার আর সাক্ষাৎ হবে না।”

বাস্তবেই, মুয়াজ (রা.) রাসূল ﷺ-কে জীবিত অবস্থায় আর দেখতে পাননি। তিনি ইয়েমেন থেকে ফিরে আসেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর।

বিদায়ের সময় মুয়াজ (রা.) বলেন,

“হে আল্লাহর রাসূল, আপনি এমন একটি পথ বাতলে দিন, যাতে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি।”

রাসূল ﷺ উত্তরে বললেন,

“মুয়াজ, তুমি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন করেছ। আল্লাহ অবশ্যই এটি যার জন্য সহজ করে দেন, তার জন্য তা সহজ হয়ে যায়। তুমি কখনো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, রমজানে রোজা রাখবে, যাকাত দেবে আর হজ করবে।”

এরপর নবীজি ﷺ নিজেই প্রশ্ন করেন,

“আমি কি তোমাকে পুণ্যের দরজাগুলোর সংবাদ দেবো না?”
বলেই তিনি বলেন,
“রোজা ঢালের মতো—এটি প্রতিটি বিপদ এবং শাস্তিকে প্রতিরোধ করে।
সদকা, যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়, তেমনি গুনাহর বিনাশ ঘটায়।
আর তুমি রাতে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়বে।”

এই বলে প্রিয় নবী ﷺ কুরআনের একটি আয়াত তেলাওয়াত করেন—

“বল, তোমরা যদি মৃত্যুর বা নিহত হওয়ার ভয়ে পালাও, তাহলে তোমাদের লাভ নেই। আর তোমরা পালাতে পারলেও তোমাদের জীবন ভোগ করতে দেয়া হবে না।
বল, আল্লাহ যদি তোমাদের মঙ্গল চান, কে তোমাদের রক্ষা করবে? আর যদি তিনি অনুগ্রহ করতে ইচ্ছা করেন, কে তোমাদের বঞ্চিত করবে?
ওরা আল্লাহ ছাড়া নিজেদের জন্য কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।”
(সূরা আহযাব, আয়াত ১৬-১৭)

এরপর রাসূল ﷺ বলেন,

“ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ আর তার শৃঙ্গ হচ্ছে জিহাদ।”

আবার তিনি প্রশ্ন করেন,

“আমি কি তোমাকে এসব জিনিসের সার কথা বলে দেবো না?”
এই বলে তিনি হাত দিয়ে নিজের জিভ স্পর্শ করে বলেন,
“একে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এই কারণেই মানুষকে উল্টোমুখী করে জাহান্নামে ছুড়ে ফেলা হবে।”

এরপর নবীজি ﷺ যাকাত, প্রশাসন ব্যবস্থা এবং অন্যান্য ফরজ আমলের কিছু ব্যাখ্যা দিয়ে সাহাবীদের জাহান্নামের ব্যাপারে সতর্ক করেন।

ফরিদ 

×