
ছবিঃ সংগৃহীত
মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের কেন্দ্রবিন্দু পবিত্র কাবা ঘর। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ নামাজে কিবলামুখী হন এই ঘরের দিকে। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন—কাবা ঘরের ভেতরটা আসলে কেমন? কী আছে এই পবিত্র ঘরের অভ্যন্তরে?
কাবা ঘরটি সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম চত্বরে অবস্থিত। বাইরের দৃশ্য আমাদের সবারই পরিচিত—কালো রঙের কাপড়ে মোড়ানো ‘কিসওয়া’, যার গায়ে সূচিকর্মে লেখা রয়েছে কুরআনের আয়াত। কিন্তু এর ভেতরের দৃশ্য সাধারণ মানুষের জন্য রহস্যই রয়ে গেছে, কারণ এটি সবসময়ই তালাবদ্ধ থাকে এবং বছরে মাত্র দু’বার বিশেষ পরিষ্কারের সময় কিছু সম্মানিত অতিথিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
ভেতরের গঠন ও স্থাপত্য
কাবার ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যায়, মেঝেটি সাদা মার্বেল পাথরে তৈরি। পুরো ঘরের অভ্যন্তরীণ দেয়াল ও ছাদ মূল্যবান মার্বেল ও কাঠ দিয়ে নির্মিত। ভেতরে তিনটি খুঁটি রয়েছে যেগুলো ছাদকে সমর্থন করে রেখেছে। এই খুঁটিগুলো সুদৃশ্য কাঠের তৈরি এবং উপরে সোনালি ধাতু দ্বারা মোড়ানো।
মাহফুজ (তাক) ও প্রদীপ
দেয়ালের একপাশে একটি মাহফুজ বা তাক রয়েছে যেখানে কিছু ধর্মীয় নিদর্শন রাখা থাকে। ভেতরের ছাদ থেকে একটি সোনালি ঝাড়বাতি ঝুলে থাকে যা সৌদি বাদশাহর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। এই ঝাড়বাতিটি সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিক মহিমার এক প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
কাবার ভেতরে নামাজ আদায়
যদিও কাবা ঘরের ভেতরে নামাজ আদায় করা হয় না, তবে বিশেষ অবস্থায় প্রবেশের সুযোগ পাওয়া ব্যক্তিরা সেখানে দুটি রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। এটি অনেকের কাছেই জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা।
বিশেষ পরিষ্কার অভিযানের সময়
প্রতি বছর শাবান মাসে এবং জিলহজ মাসের আগে হজ উপলক্ষে কাবা ঘরের অভ্যন্তর পরিষ্কার করা হয়। এ সময় সৌদি রাজপরিবারের সদস্য, ইসলামি নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তি সেখানে প্রবেশের সুযোগ পান। পরিষ্কার অভিযানে সুগন্ধি জলের ব্যবহার করা হয় এবং অভ্যন্তরের দেয়াল সুগন্ধি তেল দ্বারা মোছা হয়।
সবার জন্য নয়, কিন্তু সবার হৃদয়ে
বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান কখনো কাবার ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না, কিন্তু এই ঘরটির প্রতি তাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অগাধ। কাবা শুধু একটি স্থাপত্য নয়, বরং তা এক আধ্যাত্মিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে মুসলমানদের ঈমান, ঐক্য ও ইতিহাস জড়িত।
আলীম