ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: জামায়াত আমির

প্রকাশিত: ১৫:৪৫, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৫:৪৭, ১০ জুন ২০২৫

সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: জামায়াত আমির

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা জামায়াত আয়োজিত সকল ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এ দেশেই জন্মগ্রহণ করেছি এবং জন্মসূত্রে দেশের মর্যাদাবান নাগরিক। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান — এই চার ধর্মের অনুসারীদের মিলেই আমাদের বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।” 

তিনি বলেন, আপনারা অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ৫ আগস্টের পর আমাদের কী হবে, আমাদের আপনারা পাননি, ৫ আগস্টের পরে বাবা-মা ও স্ত্রী-সন্তানরাও আমাকে পায়নি। এটা আমি আমার কথা বলছি না, আমাদের কথা বলতেছি। আমাদের স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে দেওয়া হয়নি। আমি চোর, ডাকাত, দখলদার ও চাঁদাবাজ নই, আমি খুনি কিংবা সন্ত্রাসও নই। আমাকে কেন কয়েকবার জেলে রাখা হলো? এটা শুধু আমার ব্যাপারে না; এই ধরনের ঘটনা লাখ লাখ মানুষেরও রয়েছে। আমাদের সমাজের মানুষের সুখ, দুঃখ, ব্যথা, বেদনার অংশীদার হতে দেওয়া হয়নি। তারপরও যেখানে খবর পেয়েছি, সারা দেশে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।

এরপর তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বরগুনায় পঞ্চম শ্রেণির একটি মেয়ের ইজ্জত নষ্ট করা হয়েছে। মেয়েটির বাবা থানায় মামলা করেছিলেন। লম্পটরা কেন মামলা করল শুধু এ কারণেই তার বাপকে খুন করা হলো। আপনাদেরই সম্প্রদায়ের একজন অতি সাধারণ মানুষ। মোরগ বিক্রির দোকানে তিনি চাকরি করতেন, এই দিয়ে তার ছোট্ট সংসারটি চলতো। তিনটা মেয়ের মধ্যে এই মেয়েটি বড়, এরপরের দুইটা এর চেয়েও ছোট। কোলের শিশুটির বয়স আড়াই মাস। আমি সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনাদের পাশে কে কে দাঁড়িয়েছেন। তারা বললেন—ডিসি সাহেব মানুষ পাঠিয়েছেন ১০ হাজার টাকা আমাদের দিয়ে গেছে। বলেছিলাম—আর কিছু কি তারা বলেছে, তিনি বললেন—মামলাটা চলবে, তারা দেখবেন এটা। জিজ্ঞেস করলাম—এখন আপনারা চলবেন কীভাবে? তিনি বললেন—যিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র অভিভাবক তিনি মারা গেছেন, এই পরিবারের এখন আর কোনো পুরুষ নেই। তার স্ত্রী বিধবা আর তিনটা এতিম মেয়ে। মহিলাটি তখন কেঁদে কেঁদে প্রায় বেহুশ হওয়ার উপক্রম। সে হাউ মাউ করে খেতে বলল—আমরা বাঁচবো কী করে, কী খাব? কে আমাদের খাবার দেবে, আমাদের সংসারের একমাত্র বাতি সে তো নিভেই গেল। আমি তখন আড়াই মাসের বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে বলেছিলাম—এই বাচ্চার দায় দায়িত্ব আমি নিলাম। আমাদের সংগঠন আল্লাহর ওপর ভরসা করে প্রতি মাসে তার আর্থিক ভরণ-পোষণ দিয়ে যাচ্ছি ।

 

সানজানা

আরো পড়ুন  

×