ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিআরটির ফ্লাইওভার

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ২৯ মার্চ ২০২৪

বিআরটির ফ্লাইওভার

.

আসন্ন ঈদযাত্রায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ঢাকা-গাজীপুর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাস ্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর-চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত সাতটি ফ্লাইওভার রবিবার খুলে দেওয়া হয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে যানবাহন নির্বিঘেœ ঢাকার বাইরে যেতে পারবে। ফ্লাইওভারগুলো হলোÑ ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পাশ), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পাশ), ১৮০ মিটার জসীমউদ্দীন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউটার্ন- গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউটার্ন- উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮ মিটার ফ্লাইওভার। গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) আওতায় এই ফ্লাইওভার সাতটি নির্মাণ করেছে সড়ক জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এই সাত ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার।

ঢাকা গাজীপুর এলাকার যানজট কমাতে ২০১২ সালে একনেকে অনুমোদন পায় বিআরটি প্রকল্পটি। কিন্তু ২০১৭ সালেও চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজই শুরু করতে পারেনি। যন্ত্রপাতিসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম আনতেও কেটেছে দীর্ঘ সময়। স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল, আবাসন, ফ্ল্যাট বাড়ির গলিতে প্রায় নিত্য দিন লেগে থাকত তীব্র যানজট। ছিল রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধের তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞাও। খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয় জনদুর্ভোগ। বিমানবন্দর পয়েন্টে ভারী ক্রেন ভেঙে পড়ায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। ফলে স্বভাবতই বেড়েছে নির্মাণ ব্যয়। বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ কাজের মধ্যেই ত্রুটিবিচ্যুতি ধরা পড়ে নকশায়। চলে ভাঙ্গা-গড়ার খেলা। গণমাধ্যমেও নিয়ে হয় বিস্তর সমালোচনা।

রাজধানী ঢাকা তথা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বাস ্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প দেশবাসীর জন্য একসময় গলার কাঁটা নৈমিত্তিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে উঠেছিল। প্রতিদিন এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে দৈনিক যাতায়াত করে অসংখ্য যাত্রী, যার মধ্যে রয়েছে অগণিত নারী-পুরুষ শিশু। প্রচুর ধুলাবালি, বৃষ্টিকাদা অসহনীয় তীব্র যানজটে নাকাল ছিলেন এসব যাত্রী। বিআরটির এই প্রকল্প নির্মাণে যথেষ্ট বিলম্ব হয়েছে। যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি একথা অনস্বীকার্য। এটি বাস্তবায়নে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাও ঘটেছে। তবে দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে। বর্তমানে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হতে পারে। গতবার একটি রাস্তা চালু হয়েছিল। এবার সাতটি ফ্লাইওভার চালু হওয়ায় এই রোডের যাত্রীদের চলাচল আরও সহজ হবে। পাশাপাশি ঈদের আগে পরে ট্রাক-ভারী পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, অনেকাংশে স্বস্তিদায়ক হবে এবারের ঈদযাত্রা। রাজধানীতে আরও অনেক প্রকল্প নির্মাণাধীন। কাজেই সময়ের কাজ যেন সময়েই শেষ হয় এবং জনদুর্ভোগ, দুর্ঘটনা এড়িয়ে সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হওয়া আবশ্যক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

×