ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনার সাফল্যে ড. কামালের গাত্রদাহ

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ৯ জুন ২০২০

শেখ হাসিনার সাফল্যে ড. কামালের গাত্রদাহ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. কামাল হোসেন ও ড. রেজা কিবরিয়া। তারা বলেন, বিলম্বে ও শিথিলতার মধ্য দিয়ে যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল, তার প্রভাবে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এলেও সরকার ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য সরকারকে ‘এখনই যথাযথ পদক্ষেপ’ নেয়ার আহ্বানও জানান গণফোরামের এই দুই শীর্ষ নেতা। ছুটি প্রত্যাহারের সরকারী সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিবৃতিতে তারা বলেন, যখন সংক্রমণের হার দ্রুত বাড়ছে- এ রকম একটি পরিস্থিতিতে জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে সরকারী ছুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পর্যাপ্ত পরীক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনার ফলে পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়লে স্বাস্থ্য খাতের ওপর যে চাপ সৃষ্টি হবে, সরকার সেটি কীভাবে মোকাবেলা করবে জনগণ জনতে চায়। অনেক সময় আমরা ভাবি আমাদের দেশে এখন আর কোন বিনোদন নেই। নেই কোন চমক। সবকিছু কোভিডের চাপে রসাতলে গেছে। সে ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করলেন আমাদের হুজুগে নেতা ড. কামাল হোসেন। এতদিন তার কোন খবর দেখিনি। মাঠে বা রাস্তায় না থাকলেও রাজনীতিতে ঘরে বসে নিয়মিত ব্রিফিং দিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইদানীং দেখলাম কাগজ না দেখে বলতেও পারেন না। টিভি ক্যামেরার সামনেই মুখের কাছে কাগজ ধরে গড় গড় করে বলে যান গৎবাঁধা কথা। অন্যদিকে মাঠে নিষ্ফলা কাজে অকেজো বিএনপি নেতাদের রোজ না হলেও মাঝে মাঝে দেখা যায়। তারাও মাইক্রোফোনের সামনে এসে কথা বলতে থাকেন। রিজভিকে দেখলেই মনে হয় এখনই তিনি একটা গম্ভীর মুখে কৌতুক বলবেন। দেশে-বিদেশে বাঙালী এগুলো মেনে নিয়েছে। বলা উচিত মানতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ আবির্ভূত হলেন বিপদে লেজগোটানোর উদাহরণ, ক্রান্তিকালে দেশ ত্যাগে ওস্তাদ ড. কামাল হোসেন। আগের কথা না হয় বাদই দিলাম। আমাদের যৌবনে তিনি যে কত সার্কাস দেখাতেন এখন মনে পড়লেও হাসি লাগে। জবাব মেলে না কেন তিনি পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন একাত্তর সালের! কেনই বা ফিরলেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এক ফ্লাইটে। তবে এটুকু এখন স্পষ্ট এর কোনটাই তার নিজের ইচ্ছায় ঘটেনি। এর সঙ্গে যে পাকি গোয়েন্দা বাহিনী ও নানা আন্তর্জাতিক চক্র জড়িত ছিল, তা এখন কারোই অজানা নেই। এসব তো অতীত। এই সে দিনের ঘটনাগুলো কি মনে নেই আমাদের? গত নির্বাচনের আগে হঠাৎ শেখ হাসিনা আর সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠলেন ড. কামাল হোসেন। চলে এলেন মিডিয়ার আলোয়। হাইলাইটৈড ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ভিড়লেন কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো ব্যর্থ রাজনীতিক। সঙ্গে ছিলেন বদ মেজাজী পথভ্রষ্ট একসময় এরশাদের দালাল আ স ম আবদুর রব। সঙ্গে ছিলেন একককালের বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন গামছা সিদ্দিকী নামে পরিচিত কাদের সিদ্দিকী। হাত পা সব তুলে সে কি আস্ফালন! যেন শিঘ্রই পতন হবে সরকারের। মেজাজী ড. কামাল হোসেনকে ধারণা দেয়া হয়েছিল তিনি এবং তার জোট জিতে গেছে। আর মাত্র ক’টা দিন। কারচুপি হোক ভোট ডাকাতি হোক আর নৈশ ভোট যাই বলি না কেন তারা পারেননি। না পারার পর একটা ভাল করে মিছিলও করতে পারেনি। যে কারণে চোখ বুজে বলা দেয়া যায় এ ছিলো শূণ্য যোগ শূন্য যোগ শূণ্য মিলে এক ভয়ংকর শূন্যের খেলা। তারপর যথারীতি তাদের ভেতর মনোমালিন্য আর কাইজার খবর বের হতে শুরু করল। এক সময় আলাদা আলাদা হয়ে গালাগালও বাদ গেল না। যে নেতা ভোট বিষয়ে কড়া কড়া কথা বলে ভোট প্রত্যাখ্যান করলেন এবং পুরোটা অবৈধ বলে রায় দিলেন কিছুদিন পর তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অথবা তাঁর মৌন সম্মতি নিয়ে সে দলের এমপিরা নিলেন শপথ। কোথায় তলিয়ে গেলো তার সম্মান? তাঁর হুমকি? এবার আবার এই কঠিন করোনা কালে কোথা থেকে উদিত হলেন তিনি। যা বলেছেন তার সারমর্ম যে জিরো তা বলাইবাহুল্য। এই যে তিনি বললেন সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, এটা ধরে নিলেও কথা থাকে। আমেরিকা ইতালী জার্মাানী ব্রাজিল স্পেন বা ভারত পাকিস্তান কোন দেশের সরকার সফল? এই লেখা যখন লিখছি তখন লেখাপড়া জানা মানুষের দেশ শ্রীলংকা কার্ফু প্রত্যাহারের পর আবার জারী করছে সান্ধ্য আইন। কারণ রোধ করা যাচ্ছে না করোনা। এমন কি আমাদের এই অষ্ট্রেলিয়া নিউজল্যান্ডে ও বারবার বলা হচ্ছে সাময়িক নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাস রাখা যাবে না। দরকার হলে আবারো চাপিয়ে দেয়া হবে কঠিন আইন, কঠিন বিধি নিষেধ। সে দিক থেকে বাংলাদেশের সরকারও আছে এসব দেশের মতো এক ই জায়গায়। দেশের জনগণের দিকে একবার তাকালে কিছু জিনিষ পরিষ্কার বুঝতে পারতেন কামাল সাহেব। সবাই জানে তিনি জনবিচ্ছিন্ন মানুষ। সবসময় কাচের ঘরে বসবাস তার। ফ্লাইট বন্ধ, যাতায়াত বন্ধ না হলে এখন তিনি কোন দেশে থাকতেন বলা মুশকিল। মানুষের মন দূরে থাক ভাষাও তিনি বোঝেন না। এমন একজন নেতার কথায় জনগণের কি আসে যায়? তিনি যদি শুধু টিভি দেখতেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারতেন মানুষ কতটা বেপরোয়া। আমি দেখেছি টিভি ক্যামেরার সামনে তারা বলছে ‘আমরা নিজেরাই এ্যান্টি ভাইরাস. করোনা আমাদের কি করবে?’ এমন বেপরোয়া জাতিকে বাগে রাখা সহজ? সঙ্গে আছে গাফিলতিও। শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলেই কি হবে? তাঁর দলের অনেক নেতার টিকিটাও দেখে না মানুষ। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেন এসেছেন জাতিকে উদ্ধার করতে! এর চেয়ে হাস্যকর আর কি হতে পারে? তিনি কি বলতে পারবেন এর সমাধান কোথায়? কোন সমাধান আছে? না বলতে পারবেন কবে কখন কিভাবে সম্ভব করোনার মোকাবেলা? পারবেন না। একবারের জন্য মাঠেও নামেননি। মানুষের কাছে যান নি। এমন কিছু করেন নি যাতে মানুষ মনে করতে পারে ড. কামাল আমাদের আশা। কাজের বেলায় দেখা নাই কথার ওস্তাদ- এদের মানুষ বিশ্বাস করে না। পাত্তাও দেয় না। মানুষ জানে এই কঠিন সময়ে তাদের ভরসা ঝুঁকি নেয়া ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্যকর্মী আর নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত মানুষেরা। নিয়ম রাখার জন্য এসব ফালতু বলে আবারও বাঙালীকে হাসালেন ড. কামাল হোসেন। [email protected]
×