
মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু
মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন– লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার মনির হোসেন, তার স্ত্রী স্বপ্না ও তাদের ১৭ বছরের সন্তান নাইম হোসেন।
রবিবার (২৯ জুন) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে এ তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ওই দম্পতি তাদের সন্তানকে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে গতকাল (শনিবার) বিকেলে ঢাকার মগবাজারের হোটেল সুইট স্লিপে ওঠেন। আজ সকালে দম্পতির এক আত্মীয় তাদের হোটেলে উপস্থিত হন। তখন তিনি দেখতে পান স্বপ্না বমি করছেন। একপর্যায়ে স্বপ্না ও তার সন্তানকে পাশের আদ দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরই মধ্যে মনির অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হলে সেখানে তারও মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, তাদের মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে, বিষক্রিয়া না অন্য কোনো কারণে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ছেলের চিকিৎসার জন্য তারা মগবাজারের ওই আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ডিসি মাসুদ আলম জানান, মরদেহ তিনটি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কলেজের মর্গে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, আমরা গুরুত্ব সহকারে ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে তাদের রুমের এবং পুরো হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এ ছাড়া হোটেলের আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখার চেষ্টা করছি তাদের রুমে কেউ এসেছিল কি না– সন্দেহজনক কোন ব্যক্তি।
এই তিনজনের মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ কী হতে পারে? পুলিশ কী ধারণা করছে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছি। আমাদের প্রাথমিক ধারণা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে তাদের মৃত্যু হতে পারে, নয়ত তাদেরকে কেউ বিষাক্ত কোনো খাবার খাইয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে, তার কারণেও তাদের মৃত্যু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে আমরা কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের তদন্তে এবং মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে রমনা থানার এসআই জালাল উদ্দিন জানান, মৃত মনির হোসেন সৌদি প্রবাসী। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে। তার বাবার নাম সেরাজুল হক ব্যাপারী। তাদের মরদেহ ঢাকার আদ দ্বীন হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশ সেখানে তাদের সুরতহালসহ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে।
চিকিৎসকদের বরাতে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের ধারণা, খাবারের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে।
তাসমিম