ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

তেহরানে ইসরায়েলি হামলার শিকার বাংলাদেশি কূটনীতিকের বাসভবন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১৬, ১৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৩:২১, ১৮ জুন ২০২৫

তেহরানে ইসরায়েলি হামলার শিকার বাংলাদেশি কূটনীতিকের বাসভবন

ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বাংলাদেশের একজন কূটনীতিকের বাসভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘটনার সময় বাসায় না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ওয়ালিদ ইসলাম। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।”

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা মূলত শহরের ৩ নম্বর জেলায় অবস্থিত জর্ডান নামের এলাকায় বসবাস করেন। এই এলাকাতেই রয়েছে ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ভবনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা—যেগুলোর ওপর সোমবার হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল।

হামলার আগে বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফলে প্রাণহানির সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও, অনেক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়ালিদ ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের চারপাশে এখন আর কিছুই নেই। কিছু কূটনীতিকের বাড়ি ছাড়া সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে।”

সোমবার বিকেলে ইসরায়েল যখন তেহরানের ৩ নম্বর জেলায় হামলার ঘোষণা দেয়, তখনই ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশ দেয়—বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব বাংলাদেশিকে যেন সেই এলাকা ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর বাংলাদেশ দূতাবাস চত্বর ত্যাগ করেন কর্মীরা। বর্তমানে তারা তেহরানের অন্যান্য এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে হামলার পরিধি বাড়তে থাকায় এবার তেহরান ছেড়ে শহরের বাইরের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আলম সিদ্দিক বলেন, “আমরা তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা সরাসরি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। আমরা এখন তাদের এবং দূতাবাস কর্মীদের নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছি।”

তিনি জানান, বর্তমানে তেহরানে থাকা প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির কেউ আহত হননি।

উল্লেখ্য, সংঘাতের সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েলের হামলায়, যেখানে ১০০টির বেশি স্থাপনায় আঘাত হানে তারা। এর মধ্যে ছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বাসভবন।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় পাল্টা আক্রমণের ধারাবাহিকতা, যা এখন রূপ নিচ্ছে ভয়াবহ আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কায়।

মঙ্গলবার পর্যন্ত ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ সংঘাতে ২২৪ জন নিহত এবং ১,২৭৭ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ইসরায়েলি সূত্র মতে, তাদের দেশে ২৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং প্রায় ৬০ জন আহত হয়েছেন।

মুমু

×