ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার ভিসা কার্যক্রম পুনরায় চালু হওয়ায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অস্ট্রেলিয়ার নবনিযুক্ত হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এই কৃতজ্ঞতা জানান।
সাক্ষাৎকালে হাইকমিশনার রাইল জানান, এখন থেকে বাংলাদেশিরা অনলাইনের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তিনি জানান, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৬৫ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, যার মধ্যে ১৪ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কে হাইকমিশনার বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ছাড়িয়েছে এবং গত পাঁচ বছরে তা ১৬.২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে হাইকমিশনার জানান, ‘অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস’-এর আওতায় এ পর্যন্ত ৩,০০০, এর বেশি বাংলাদেশি অ্যালামনাই তৈরি হয়েছে, যারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার মানবিক সহায়তার কথাও তুলে ধরেন হাইকমিশনার রাইল। তিনি জানান, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ৯.৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার মানবিক সহায়তা দিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশটি বাংলাদেশকে ৫৫৩.৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে।
তিনি বলেন, “মিয়ানমারের পরিস্থিতি অনুকূল হলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছাসেবী, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।”
বাংলাদেশে নতুন কর্মস্থল হিসেবে আগমনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে হাইকমিশনার বলেন, “বাংলাদেশের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও গতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বহুদিন ধরেই আমার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এখানে এসে আমি সত্যিই উত্তেজিত।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, “আমরা এখন গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সংবিধান, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনিক কাঠামোয় সংস্কারই আমাদের মূল লক্ষ্য।” তিনি জানান, আগামী মাসে ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “বহু বছর পর বাংলাদেশের জনগণ, বিশেষ করে প্রথমবারের মতো ভোটদানে আগ্রহী তরুণরা, একটি উৎসবমুখর নির্বাচন উপভোগ করতে পারবে।”
হাইকমিশনার রাইল জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সহায়তা হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, ইউএনডিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি ও পরিচালনাগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তা দেবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রাপ্তদের জন্য সহায়তা আরও বৃদ্ধির আহ্বানও জানান।
ছামিয়া
