চেকে লেখা ‘Pay to [নাম] or Bearer’—এক ভুলেই হারাতে পারেন পুরো টাকা!

চেক লেনদেনে সামান্য অসতর্কতা আপনাকে বড় ধরণের প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে পারে। অনেকেই ভাবেন চেক দিয়ে দিলেই প্রমাণ রেখে নিরাপদ থাকা যায়, কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কিছু—প্রমাণ না রেখে দেওয়া চেক কখনো কখনো নিজেকেই বিপদে ফেলে দিতে পারে।

ঘটনা অনুযায়ী, কেউ একজন একজন পরিচিত ব্যক্তিকে ২০,০০০ টাকার একটি চেক দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, চেকধারী নিজেই ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলবেন। কিন্তু কৌশলে সেই ব্যক্তি চেকটি দিয়ে দেন আরেকজনকে, যিনি ব্যাংকে গিয়ে এনআইডি কার্ড ও স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকাটি তুলে নেন।

স্টেটমেন্টে দেখা যায়, টাকা উঠেছে ঠিকই, কিন্তু যিনি তুলেছেন, তার নাম চেকে ছিল না। তখন প্রথম ব্যক্তি বলেন, “তুমি তো টাকা পেয়েছো,” কিন্তু উত্তর আসে, “আমি তো একাউন্ট থেকে কিছুই তুলি নাই।” এমন পরিস্থিতিতে প্রমাণ দেখিয়ে বুঝানো গেলেও প্রতারক অস্বীকার করে বসে।

সমস্যার মূল কারণ?

চেকে লেখা ছিল: Pay to [নাম] or Bearer। এর মানে দাঁড়ায়, যে-ই এই চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করবে, তাকেই ব্যাংক আইন অনুযায়ী টাকা দিতে পারবে। ফলে চতুর কেউ যদি চেকটি পেয়ে যায় এবং ব্যাংকে উপস্থাপন করে, ব্যাংক তাকে টাকা দিতে বাধ্য।

করণীয় বা শিক্ষণীয়:

এই ধরনের প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে যা করবেন:

1. ✅ "or bearer" অংশটি কেটে দিন: চেক লিখে যাকে দিতে চান, তার নামের পর “or bearer” থাকলে সেটা কেটে দিন ও পাশে সাইন করুন। এতে চেক শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিই তুলতে পারবেন।

2. ✅ চেকের উপরের দিকে দুটি সমান্তরাল দাগ টানুন: এটিকে বলে Account Payee Cheque বা Crossed Cheque। এতে ব্যাংক নগদে টাকা দিবে না, টাকা সরাসরি চেকে উল্লিখিত ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টে যাবে।

3. ✅ চেকের পেছনে যিনি গ্রহণ করছেন তার স্বাক্ষর ও এনআইডি সংগ্রহ করুন: প্রয়োজনে চেকের ছবি তুলে রাখুন।

4. ✅ চেক হস্তান্তরের পরে ব্যাংক স্টেটমেন্টে নজর রাখুন: কোন চেক নম্বরে টাকা কাটা হয়েছে, কার নাম এসেছে, তা যাচাই করুন।

5. ✅ বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই না করে কখনোই বড় অংকের নগদ চেক হস্তান্তর করবেন না।

সচেতন হোন, নিরাপদ থাকুন

অর্থনৈতিক লেনদেনে সতর্কতা আর নথিভুক্ত প্রমাণই হতে পারে আপনার আসল নিরাপত্তা। প্রতারকরা আইনের ফাঁক বুঝে সুযোগ নেয়—তাদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে আগে নিজেই সচেতন হতে হবে।

সূত্রঃ https://youtu.be/UEaEZwbtAIo?si=5zyOiKKIeZJt1uUz