ছবিঃ সংগৃহীত
দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদক জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে জাবেদের মালিকানাধীন ৩৪৩টি বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা। এছাড়াও, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে আরও ৩৫ কোটি টাকারও অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে সংস্থাটি।
দুদক চেয়ারম্যান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জাবেদ সাহেবের মোট ৫৮০টি বাড়ির সন্ধান আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ৩৪৩টি বাড়ি ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইমস এজেন্সি (NCA) কর্তৃক ফ্রিজ করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সম্পদ পাচারের সঙ্গে জাবেদের ভাই রনিসহ কয়েকজন জড়িত রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধেও ইতিমধ্যে সম্পদ জব্দের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। সরকারের পট পরিবর্তনের পর আদালতের মাধ্যমে এসব সম্পদের ওপর জব্দাদেশ চাইছে দুদক।
এদিকে, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কেও মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি নাগরিকত্বের আড়ালে মৎস্য খামার ও ট্যাক্স ফাইলে অস্বাভাবিক সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বারবার ব্রিটিশ নাগরিকত্বের পরিচয় ব্যবহার করে টিউলিপ দুর্নীতির দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আপনি কখনো নিজেকে ব্রিটিশ, কখনো বাংলাদেশি বলে সুবিধা নিচ্ছেন – এটা কতটা সমিচিন, সেটি আপনি বিবেচনা করুন।”
এছাড়া, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার সাইদা মোনা তাসনিম ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগেও তদন্ত শুরু করেছে দুদক। অভিযোগ রয়েছে, তারা নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন।
দুদক চেয়ারম্যান সাফ জানিয়ে দেন, “নন-কম্পাউন্ডেবল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে পাচারকারীদের সঙ্গে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করেই রাষ্ট্রের অর্থ ফিরিয়ে আনতে চাই।”
এই ঘটনাগুলো দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন দেখার বিষয়, এই পদক্ষেপগুলো কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং পাচার হওয়া রাষ্ট্রের অর্থ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় কি না।
মারিয়া
