
ঈদের ছুটি শেষ, অফিস-আদালত খুলে গেছে। তবুও রাজধানী ছাড়ার হিড়িক থামেনি। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে শুরু করে গাবতলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল সবখানেই এখনও দেখা যাচ্ছে গন্তব্যমুখো মানুষের ভিড়। ঈদের আনন্দে প্রিয়জনের সান্নিধ্য নিতে এখনো অনেকে ছুটছেন গ্রামের পথে। কিন্তু এই ভ্রমণে বড় এক অনুপস্থিতির নাম-করোনা সচেতনতা।
স্টেশনগুলোতে দেখা যাচ্ছে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, এমনকি ছাত্র-ছাত্রীদেরও ঢল। ঈদের পর বিনোদন বা পারিবারিক আড্ডায় সামিল হতে শহর ছাড়ছেন অনেকে। পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এখনও ঢাকার বাইরে যাওয়ার চাপ বেশি, ফেরার ভিড় তুলনামূলকভাবে কম। কেউ বলছেন, ‘ঈদের পর একটু বেড়াতে যাচ্ছি।’ কেউবা বলছেন, ‘পরিবারে একটু দেরি করে ঈদ করতেই যাচ্ছি।’
রেল ও বাস সার্ভিস সচল, প্রস্তুত কর্তৃপক্ষ
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের পরে ফেরার যাত্রীদের জন্য সব প্রস্তুতি রয়েছে। শিডিউল অনুযায়ী ট্রেন চলছে, তেমন কোনো বিপর্যয় নেই। ‘আরও এক সপ্তাহ ঈদ সার্ভিস চালু থাকবে’, বললেন এক রেল কর্মকর্তা। বাস সার্ভিসও মোটামুটি স্বাভাবিক। ঢাকার কাছের জেলা থেকে কিছু যাত্রী ফিরলেও এখনও বাড়িমুখী যাত্রীর সংখ্যাই বেশি।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা থাকলেও যাত্রীদের মধ্যে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। ভিড়ের মধ্যে অনেকে ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করছেন, কিন্তু কারো মুখে নেই কোনো উদ্বেগের ছাপ।
এক যাত্রী জানালেন, ‘নিউজে দেখছি আবার করোনা বাড়ছে, তবে গরমের জন্য মাস্ক পড়া যায় না।’ আরেকজন বললেন, ‘আগে তো পড়তাম, এখন আর ঠিকমতো মানা হয় না। কেউ মানে না, আমি একা মেনে কী হবে?’
কম ভিড়ের স্বস্তি, তবুও ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে
অনেকে অবশ্য বলছেন, এবার ঈদের ছুটি বড় হওয়ায় ভিড় একটু কম। তাই স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করা যাচ্ছে। এক যাত্রী বললেন, ‘এবার যাত্রা একটু সহজ। তবে করোনা নিয়া সবাই এতটা সিরিয়াস না।’ এদিকে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এখনই সাবধান না হলে পরিস্থিতি আবার খারাপ হতে পারে।
ঈদের পরেও রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের স্রোত যেন থামছেই না। অথচ, এর মাঝেই বাড়ছে করোনার ঝুঁকি। সরকার বারবার সতর্ক করছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সেই চিত্রটা একেবারেই আলাদা।
আফরোজা