স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ হাজারো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগের গ্রামীণ একটি সড়ক। শেরপুর উপজেলা সদরের নিকট দূরত্বে কুসুম্বি ইউনিয়নের মালিহাটা-উদয়কুঁড়ি তিন কিলোমিটার রাস্তা।
বর্ষা মৌসুমে এঁটেল মাটির কাদা কোথাও ৩ থেকে ৪ ফুটের গভীরতার মধ্যে থাকে। হেঁটে পার হওয়াও কঠিন। রাস্তার উভয় প্রান্তে ও ধারে আশপাশের দশ গাঁয়ের মানুষের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এই রাস্তা। বিকল্প কোন পথ নেই। কৃষক ভরবছর ফসল উৎপাদন করে যোগাযোগ অব্যবস্থার কারণে ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকার শিশু কিশোররা স্থানীয় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে সহজে যাতায়াত করতে পারেনা।
রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ আশপাশের বেশিরভাগ রাস্তা পাকা করেছে। ওইসব গ্রামের মানুষ পাকা সড়ক ধরে যন্ত্রচালিত যানবাহনে চলাচল করে দ্রুত উপজেলা সদর ও জেলা সদরে পৌঁছে। শুধু মালিহাটা-উদয়কুঁড়ি রাস্তাটির কোন গতি হয়নি। আলোর নিচে অন্ধকারের মতো এক এলাকার মানুষ কৃষিপণ্য বিপণনে গ্রামীণ অর্থনীতি মজবুত করছে। ছেলে মেয়েরা স্বাচ্ছন্দ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। কাছের এলাকার মানুষ শুধু এঁটেল কাঁচা রাস্তা হওয়ার কারণে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পিছিয়ে পড়ছে। এই রাস্তার আশপাশের গ্রাম উঁচুলবাড়িয়া,বাঁশবাড়িয়া, উদয়কুঁড়ি গ্রামের লোকজন জানায়, প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে। শুকনো মৌসুমে শক্ত মাটির পথে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত টোটো ও রিক্সা চলাচল করতে পারে। তবে মাঝারি বৃষ্টি হলেই কাদার প্যাকে আটকে যেতে হয়। বর্ষা মৌসুমে কোন যানবাহন চলে না। এই সময়ে মাটির রাস্তায় ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার চলাচল করে রাস্তার কাদার গভীরতা বাড়িয়ে দেয়। এই এলাকায় রাস্তার ধারে শুক্রবার ও মঙ্গলবার সাপ্তাহিক আলতাদীঘি বোর্ড হাট বসে। এই হাটে জন চলাচল অন্য দিনের তুলনায় বেড়ে যায়। রাস্তার ধারে সরকারী প্রাথমিক স্কুল, মালিহাটা উচ্চ বিদ্যালয়, তাতড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা আছে। এই পথ দিয়েই মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উপজেলা সদর ও জেলা সদরের কলেজে যেতে হয়। কাঁচা রাস্তার কারণে রোগীকে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও হাসপাতালে পৌঁছানো যায় না। আত্মীয় স্বজনও সামাজিক যোগাযোগে কেউ কারও বাড়িতে সহজে যেতে চায় না। নতুন কুটুম্বিতা করতে সহজে কেউ রাজি হয় না। কুসুম্বি ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড সদস্য হাবিবর রহমান বললেন, এই রাস্তা ছাড়া সহজ যোগাযোগের বিকল্প পথ নেই। যে কারণে হাজারো মানুষের মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় বছরের অর্ধেক সময়। এলাকার লোকজন উপজেলা প্রশাসনের প্রকৌশল বিভাগ, এলজিইডির কাছে বহুবার ধর্ণা দিয়েছে। কোন কাজ হয়নি। এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ জানান, রাস্তাটির পাকাকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাব ওপর মহলে পাঠানো হয়েছে। তাগাদা দেয়া হচ্ছে। কোন কাজ হচ্ছে না।
টাঙ্গাইল
নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা হুগড়া ইউনিয়নের বেগুনটাল এলাকায় মসজিদ থেকে আমজাত কানার মোড় পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মানুষ। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করে। জানা যায়, এই ব্যস্ত সড়কে সিএনজি, ভ্যান-রিক্সা, অটোরিক্সাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এই রাস্তার পাশেই রয়েছে হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয়, হুগড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, হাসপাতাল, বাজারসহ বহু প্রতিষ্ঠান। হুগড়া ইউনিয়নের মধ্যে এই এলাকা জনবহুল। হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টির দিনে রাস্তাটির কর্দমাক্ত হয়ে ভ্যান-রিক্সা দূরের কথা খালি পায়ে হেঁটে চলাই দুষ্কর হয়ে পড়ে। এলাকাবাসী জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে শুনছেন সড়কটি পাকা হবে। নির্বাচনের সময় হলে ভোটের প্রয়োজনে সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনপ্রতিনিধিরা নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচন চলে যাওয়ার পর কোন খবর নেয় না তারা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: