ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিয়মের তোয়াক্কা নেই বাড়িঘর নির্মাণে ;###;রাজধানীর দেবীদাস লেনে যেন প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর হাতছানি ;###;বাঁশ ও কাঠ দিয়ে বহুতল ভবন ;###;সরকারী আবাসিক ভবনও ঝুঁকিতে ;###;পাল্টেনি পুরান ঢাকা ও বেগুনবাড়ির চিত্র ;###;সরকারী সিদ্ধান্ত হয়, বাস্তবায়ন নেই

মৃত্যুকূপে বসতি ॥ অনেক ট্র্যাজেডির পরও টনক নড়েনি

প্রকাশিত: ১১:০৯, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মৃত্যুকূপে বসতি ॥ অনেক ট্র্যাজেডির পরও টনক নড়েনি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ ২০০৪ সালে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারের ভবন ধসের ঘটনা কারও ভুলে যাওয়ার কথা নয়। চোখের সামনে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটি দাঁড়িয়েছিল বছরের পর বছর। অথচ এই ট্র্যাজেডিতে নিভে গিয়েছিল ১৯টি তাজা প্রাণ। এরপর ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডি ঘটে। সেই অগ্নিকা-ের ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একই বছরের দুই জুন তেজগাঁও বেগুনবাড়ি বস্তি এলাকায় একটি অনুমোদনহীন পাঁচতলা ভবন ধসে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর বিশ^ গণমাধ্যমে ঠাঁই পেয়েছিল। এরপর এনটিভি ভবন, বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগার দৃশ্যও বহুল আলোচিত ঘটনা। চকবাজারের অগ্নিকা-ে ৭০ জনের মৃত্যু, এফ আর টাওয়ার থেকে শুরু করে একের পর এক এ রকম দুর্ঘটনার যেন শেষ নেই...। ২০০৪ থেকে ২০২০ চলছে। এরমধ্যে কেটেছে ১৬ বছর। কথা হলো এই মেগা সিটি বসবাসের জন্য কতটুকু নিরাপদ করা সম্ভব হয়েছে। আরেকটু বিশ্লেষণ করে যদি বলা হয়, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কতটুকু উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলো। এ রকম অনেক প্রশ্নের উত্তর হয়তো সরকারের দফতরে একরকম, আর মাঠের চিত্র ভিন্ন পাওয়া যাবে। নগরবিদরা বলছেন, মাঠের চিত্রই প্রকৃত চিত্র। নগরবাসীর আবাসিক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় জনকণ্ঠের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান চালানো হয়। এরমধ্য দিয়ে মাঠের চিত্র তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। শহরতলীর চিত্র দিয়েই শুরু করা যেতে পারে। আবারও সেই পুরান ঢাকা। শহরের বাবুবাজার ব্রিজের নিচ ধরে হাতের ডান পাশ দিয়ে চকবাজারের পোস্তার-কামালবাগের দেবীদাস লেন। এই এলাকাটি যেন আরেকটি অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর বার্তা নিয়ে আছে। যে কোন সময় মহাবিপর্যয়ের খবর হয়ে উঠতে পারে এই দেবীদাস লেন। হতে পারে মৃত্যুপুরী। এই এলাকায় প্রবেশ করতেই নদী আর খাল হাতছানি দেবে। নদীর পানি শুকিয়ে আলকাতরার রং। পচা দুর্গন্ধ। আবার সেতুর উপরে গার্ডারে লাল ব্যানারে নদীকে ‘মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে। যদিও কে শোনে কার কথা। সর্বোচ্চ মাত্রায় চলছে নদীদূষণ। হাতের ডান পাশ দিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেই বাড়িঘরে বসতির দৃশ্য দেখলে চোখ কপালে ওঠবে। সত্যি এ ভাবে কি মানুষ বসবাস করতে পারে। যেখানে ২৪ ঘণ্টাই মৃত্যুর আতঙ্ক। নদী দখলমুক্ত অভিযানে সম্প্রতি পাড়ের বাড়িঘর ভাঙ্গা হয়েছে। এই সড়কের কোন বাড়ির তেমন কোন নম্বর চোখে পড়েনি। প্রায় প্রতিটি বাড়ি অভিযানে ক্ষত-বিক্ষত। কোন বাড়ি অর্ধেক, কোনটি চার ভাগের একভাগ পিলার ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে। আবার ছোট ছোট পিলার আর বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একের পর এক বাড়ি। টিন দিয়ে চারতলা বাড়ি পাওয়া গেছে ৫০টির বেশি! কোন বাড়ির কাঠের ঠিকা ভেঙ্গে পড়ছে। এ নিয়ে কেউ কথা বলতে নারাজ। ভাঙ্গাচুরা বাড়িঘর আবার বাঁশ দিয়ে বাড়ানো হচ্ছে। চেষ্টা হচ্ছে টিকিয়ে রাখার। সেখানে দেয়া হচ্ছে নামেমাত্র ভাড়া। সামান্য আয়ের মানুষ এইসব ঝুঁকিপূর্ণ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। বাঁশ-টিন ও কাঠ দিয়ে তৈরি ভবনগুলো একেকটি যেন মূর্তিমান আতঙ্ক। যেখানে নারী ও শিশুদের বসতি বেশি। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এসব ভবন মেরামত হয় না। অনেক বাসার দেয়াল খসে খসে পড়তে দেখা যায়। রাজউক ও সিটি কর্পোরেশনের আওতার মধ্যে পড়লেও এ নিয়ে কারও কোন মাথাব্যথা নেই। এসব ভবনে বসবাসকারী নারী ও শিশুরা জানিয়েছে, রাত হলেই ভয় বাড়ে। এই বুঝি ভেঙ্গে পড়ল। তবুও আমাদের করার কিছু নেই। বাবা মা এই বাসায় আমাদের রেখেছেন। সরকারও কোন খোঁজ নেয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন এই এলাকাটিতে মূলত খেটে খাওয়া মানুষের বসতি। এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আলী হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, এই এলাকায় কম দামে বাসা ভাড়া মেলে। তাই অনেকে আগ্রহ নিয়ে এখানে থাকছেন। আবার অনেকে নিরুপায় হয়ে থাকছেন। একটু সামনে গেলেই ভাড়া কয়েকগুণ বেশি। এই সড়কের ৩০/এ দেবীদাস লেনের বাড়িটি টিনের চারতলা ভবন। নিচে কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও আছে। চমক সুইট এ্যান্ড বেকারির এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেকে আসেন দেখে যান। কিন্তু কোন কিছুই হয় না। আপনারা দেখে গেলেও লাভ হবে না। এসব বাড়ি যারা ভাঙবেন তারা তো বারবার প্রতিবেদন দেন ভাল ও টেকসই বাড়ি হিসেবে। পাশের আরেকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মিনার জানালেন, কম দামে ভাড়া মেলে। তাই এখানে ভাড়া নিয়েছি। কামরাঙ্গীরচর থেকে একটি খালের পানি দ্রুত মিলছে নদীতে। নদী আর খালের এই সংযোগ পয়েন্টে দেবীদাস লেনের শিশুদের খেলার স্থান। পাশে একটি ছোট্ট মাঠ থাকলেও এখানে ধুলোবালি আর ময়লার ভাগাড়। গত রবিবার ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানির সঙ্গে খেলা করা শিশুদের মধ্যে সবাই এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ সবকটি বাড়ির বাসিন্দা। তাদের মধ্যে আজিজ (৮), বিক্রম (১২), পাভেল (১০), সূর্য (৯), একরাম (৭), তমালসহ অনেকের দেখা মেলে। তমালকে কোথায় থাক? বলতেই তর্জনির নিশানা একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ির দিকে। দেখলে মনে হবে এই বুঝি ভেঙ্গে পড়ছে। মই দিয়ে বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় উঠতে হয়। মাটিতে পুঁতে রাখা চিকন পিলারের ওপর এই দ্বিতল ভবন। পাভেল আর সূর্য যে বাড়িটিতে থাকে সেটি আরও মহা ঝুঁকিপূর্ণ। টিনের তিনতলা ভবন। ভবন ঘেঁষে গেছে হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের লাইন ও ট্রান্সফরমার। যে কোন সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এই দুই শিশু জানাল, সবাই বলে এসব বাড়িতে বসবাস ঠিক নয়। কিন্তু আমরা তো ইচ্ছা করলেই কোথাও যেতে পারি না। বাবা পোস্তায় কাজ করেন। মাও কাজ করেন সেখানে। সবার কথা শুনে ভয় লাগে। যে কোন সময় হয়ত ভাঙবে বাড়িটি। আমাদের খেলা বন্ধ হয়ে যাবে জীবনের জন্য! ঝুঁকিপূর্ণ আরও কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে মালিককে পাওয়া যায়নি। ভাড়াটিয়ারাও এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ। তবে যেটা জানা গেছে, তা হলো বাড়ির মালিকদের বেশিরভাগই এখানে থাকেন না। তাদের হয়ে কেউ নিয়মিত ভাড়া তোলেন। বাড়ির মালিক হিসেবে পরিচয় দেয়া সিকদার মিয়া জানান, বাঁশ দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করলেও আমাকে প্রশাসন বা রাজউকের পক্ষ থেকে কেউ কখনও বাঁধা দেয়নি। টাকার অভাবে অনুমোদনহীন এমন ভবন নির্মাণ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি লোনের চেষ্টা করছি। যদি পাওয়া যায় তাহলে এসব ভবন ভেঙ্গে নতুন করে অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ করব। মোবাইল ক্যামেরায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ছবি তুলতে গেলে বাসিন্দারা ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। কিন্তু ভবনটিতে প্রবেশের কোন ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছিল না। নিচ তলায় শাটার বন্ধ। গেট নেই। পাশের এক বাসিন্দা জানালেন, যারা এই ভবনে বসবাস করেন তারা শাটার তুলে যাওয়া আসা করেন। ভুতুড়ে বাড়ির মতো এখানকার মানুষের বসতি। এই এলাকায় কমপক্ষে শতাধিক এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দেখা গেছে। যেখানে প্রতিনিয়ত মৃত্যুঝুঁকি। যেন মৃত্যুকূপ নিজেরাই নিজেদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। যদিও এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কোন উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা চোখে পড়েনি। কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন সরকার বলেন, পুরো কামরাঙ্গীরচর এলাকা ঘুরলে দেখা যাবে এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অনেক। যে যার মতো করে বসতি গড়ে তুলছেন। আমরা সব সময় মানুষকে নিরাপদ থাকার পরামর্শ দেই। কিন্তু কে শোনে কার কথা। চকবাজার ট্র্যাজেডির পর থেকেই রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা সরব। কেমিক্যাল, প্লাস্টিকের গোডাউন, পারফিউম, গ্যাস রিফিলসহ জরাজীর্ণ ভবনের কারণে ঢাকা এখনও মৃত্যুকূপ। এক সময়ের ঐতিহ্যের ঢাকা চোখের সামনে সাক্ষাত যমদূত হয়ে দাঁড়াল কারও খেয়াল হয়নি! কথা হলো ২০০৪ সালের পর থেকে নগরবাসীর বসতি নিরাপত্তা নিয়ে বহু রকমের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু এর তেমন কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। এর আরেকটি জ্বলন্ত উদাহরণ হলো, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে ভবন ধসের ঘটনার পর এই এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো কি ভাঙ্গা হয়েছে। নাকি নিরাপদ করা হয়েছে ভবনের বাসিন্দাদের। প্রকৃত চিত্র হলো কিছুই হয়নি। ভবন আছে ভবনের স্থানে। বসতিও আছে আগের মতোই। রীতিমতো চমকে ওঠার মতো বসবাস পুরান ঢাকার অনেক অলিগলির বাসিন্দাদের। অনেক ভবনের দেয়াল খসে খসে পড়ছে। কাঠ আর বাঁশের ঠিকায় ভবন টিকিয়ে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টা। তেমনি জোড়াতালির সংস্কার। সব মিলিয়ে বিপদ কাটেনি। ভূমিকম্প নয়, যে কোন সময় এসব ভবন ধসে যেতে পারে। আবার বেগুনবাড়ি যে এলাকায় ভবন ধসে ২৫ জনের অকাল মৃত্যু হয়েছিল এই এলাকা এখন হাতিরঝিল প্রকল্পের কারণে চেনা দায়। কিন্তু ভেতরে রয়ে গেছে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবন। অনেক গলদ। হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকার চারপাশ ঘুরলেই এর জ্বলন্ত প্রমাণ দেখা যাবে। হাতিরঝিল প্রকল্পের তেজগাঁও ও রামপুরা অংশে সীমানা লাগুয়া এখনও দ্বিতল ও তিনতলা বাঁশ-কাঠের অনেক বাড়ি দেখা যায়। যেখানে কম ভাড়ায় সাধারণ মানুষের বসবাস। যদিও এসব ভবন চিহ্নিত করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার কথা ছিল। হয়নি। কথা শুধু কথাতেই আটকে আছে। মানুষের জান ও মালের নিরাপত্তার স্বার্থে তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তেজগাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিপরীতে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে। যার প্রত্যেকটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। চারতলা এসব ভবনের প্রতিটি তলাই যেন ধসে পড়ার অপেক্ষায় দিন গুনছে। সেখানেও কাঠ ও বাঁশের ঠিকায় বসতি রয়েছে। কাঠ দিয়ে ভবনের বারান্দায় বাড়তি রুম করা হয়েছে। অথচ এ নিয়ে কারও কোন মাথাব্যথা নেই। তাছাড়া তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাসগুলোও একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ। তিতুমীর কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রাবাস নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই। বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মতিঝিল এলাকায় টিএ্যান্ডটি, এজিবি কলোনি, বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি থেকে শুরু করে অনেকে এলাকায় বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। তবে এরমধ্যে কিছু ভবন ভাঙ্গাও হয়েছে। রাজধানীর দক্ষিণগাঁওসহ আশপাশের নতুন নতুন সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যুক্ত এলাকাগুলোতেও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কমতি নেই। এই এলাকায় এক কাঠা জমিতে পাঁচতলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের নজির আছে। তেমনি দেড় কাঠা জমিতে অনুমোদন ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণ করতে দেখা গেছে। দক্ষিণগাঁও বাজার, কালীবাড়িসহ আশপাশে অলি গলি ঘুরলেই এমন চিত্র চোখে পড়ে। মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকায় সড়ক ও জনপথের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবনগুলোও এখন ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে রাজধানীর কোন এলাকার মানুষ নিরাপদ নয়। কোথাও ঘিঞ্জি বস্তি, সরু গলি, বাঁশের বহুতল ভবন, অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিকীকরণ, ইচ্ছেমতো ভবন নির্মাণ, বাজার, গাদাগাদি মার্কেট, আবাসিক ভবনে অগ্নি নিরাপত্তা সঙ্কট, বারান্দায় গ্রিল কালচার, পরিবহনে মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারসহ সব মিলিয়ে নিরাপদ বসবাসের পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ। অর্থাৎ রাজধানীজুড়েই নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে দেড় কোটির বেশি মানুষের বসবাস। যেখানে নিরাপদ বসতি গড়ে তোলাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো রাস্তা সরু হওয়ায় যে কোন দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা কঠিন হয়। বেশির ভাগ আবাসিক এলাকায় ছোট ছোট গলি। তাছাড়া ঢাকা শহরে বড় সঙ্কট হলো প্রাকৃতিক জলাশয় একেবারেই শূন্যের কোঠায় নেমেছে। ভরাট হয়ে গেছে বিল, ঝিল থেকে শুরু করে পুকুরও। এমনকি নদীর বুকেও হয়েছে বসতি। ভূমিদস্যুদের গ্রাসে রাজধানীর চারপাশের নদী মৃত্যুর প্রহর গুনছে। আগুন লাগলে একমাত্র ভরসা ওয়াসার পানি। পাঁচ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দুর্বল নির্মাণ কাঠামো আর রাজউকের নক্সা না মেনে ভবন নির্মাণ করায় রাজধানীতে ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটছে। তবুও থেমে নেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে মানুষের বসবাস। বিশ্লেষকরা বলছেন, দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর মানুষের মধ্যে আইন না মানার সংস্কৃতি তৈরি হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। অবশ্য, যত দ্রুত সম্ভব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের। সাম্প্রতিক সময়ে ভূমিকম্পের পর রাজধানীতে হেলে পড়ে কয়েকটি ভবন। বড় ধরনের কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্ক ছড়ায় নগরজুড়ে। আলোচনায় আসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। নতুন করে তালিকা প্রণয়ন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ৩৫১টি ভবন চিহ্নিত করা হয় অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেব। যদিও সংস্থাটির জরিপে পাঁচ হাজারের বেশি ভবন রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, কাগজে-কলমে সিদ্ধান্ত হলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় বরাবরই থেকে যাচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। রাজউকের তথ্যমতে রাজধানীতে শতাধিক ভবন নিয়ে আদালতে মামলা চলায় এগুলোর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না তারা। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শীঘ্রই বসবাস অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে ফেলা হবে। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, যে সকল ইমারত বসবাস অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ তা ভেঙ্গে ফেলার জন্য তাদের (ভবনের মালিক) তাগিদ দেব। তারা যদি ভাঙ্গতে না চান, আমাদের নিজ উদ্যোগে আইনগতভাবে আমরা ব্যবস্থা নেব। অতীতে কী হয়েছে জানি না। এখন থেকে অপরিকল্পিত কোন দালান নির্মিত হবে না। যে দালান বেআইনীভাবে নির্মিত হয়েছে সেক্ষেত্রে আইন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ২০১০ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার বলে উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ ইমারতের সংখ্যা ৭২ হাজার। ইমারত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ৬ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। ভয়ের পুুরান ঢাকা ২০০৪ সালে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে ভবন ধসে মৃত্যুর ঘটনার পর রাজউক, বুয়েট ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন কারিগরি জরিপের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও ঐতিহ্যবাহী ভবন শনাক্ত ও তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। তখন ১ হাজার ৫৭৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে ঢাকায় আড়াই শতাধিক হেরিটেজ ভবন শনাক্ত করা হয়। যার মধ্যে ৯৩টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়। একই সঙ্গে হেরিটেজ ঘোষিত এলাকা হিসেবে রাজউক ঋষিকেশ রোড, রেবতীমোহন দাস রোড, বি কে দাস রোড, ফরাশগঞ্জ রোড, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, পান্নিটোলা, প্যারিদাস রোড ও হেমন্ত দাস রোডের নাম তালিকাভুক্ত করে। গেজেট আকারে তালিকাভুক্ত এসব এলাকার মধ্যবর্তী বসতবাড়ি, ইমারত, সড়ক, গলি ও উন্মুক্ত চত্বরও হেরিটেজ হিসেবে গণ্য হয়। রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙ্গা নিয়ে আইনী জটিলতার পাশাপাশি রাজউক ও ডিএসসিসির মধ্যে বিরোধ রয়েছে। রাজউক বলেছে, পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙ্গার দায়িত্ব ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের। আর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, রাজউকই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। ২২ হাজার অবৈধ গুদাম বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) এক হিসাবে দেখা গেছে, পুরান ঢাকায় ২৫ হাজার কেমিক্যাল বা রাসায়নিক দাহ্য বস্তুর গুদাম আছে। এসবের মধ্যে ১৫ হাজার আছে বাসাবাড়িতেই। মাত্র আড়াই হাজার গুদামকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। বাকি ২২ হাজারের বেশি গুদামই অবৈধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার শিক্ষক ও দুর্যোগ পুনর্বাসন বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা বলেন, মূল সমস্যা হচ্ছে অগ্নিব্যবস্থাপনা। কেমিক্যাল থাকলে বা না থাকলেও আগুন ধরতে পারে। কাজেই গুদাম সরিয়ে নিয়ে যেখানে যাবে সেখানেও তো আগুন লাগতে পারে। আমাদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে হবে। চকবাজারে অগ্নিকা-ের ধ্বংসস্তূপ নিমতলীর মতোই এখানেও মানুষ বের হতে না পেরে মারা গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিস্টেমগুলো কাজ করছে না। চোরের ভয়ে প্রত্যেক বাড়িতে এমনভাবে গ্রিল দিয়েছে যে আগুন লাগলে তা ভেঙ্গে বের হওয়ার অবস্থা নেই। এগুলো নিয়ে কেউ কথা বলে না। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কোন জায়গায় দমকল বাহিনী আগুন নেভানোর আগেই অনেক কিছু ঘটে যায়। ফলে কমিউনিটিভিত্তিক একটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার শক্তিশালী, তারা চাইলেই এটি করতে পারে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন গবেষক আফসান চৌধুরী। তার মতে, চকবাজার দুর্ঘটনার দায় গোটা ব্যবস্থার। আমাদের চোখে কী পড়ছে না তা? নিমতলীর ঘটনার পর ৩৮টি সুপারিশ দেয়া হয়েছিল। সেগুলোর কয়টা বাস্তবায়ন হয়েছে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এসব দাহ্য পদার্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। আবার ফিরে এসেছে। প্রশ্ন হলো, ফিরে যেন না আসতে পারে সেটা দেখবে কে? নিমতলী ঘটনায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর তদন্ত কমিটি যেসব সুপারিশ দিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন হয়নি আজও। সে কারণেই চুড়িহাট্টার আগুন এত ভয়াবহ মাত্রা পেয়েছে বলে মনে করেন স্থপতি ইকবাল হাবীব। তিনি বলেন, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে, এটাই হলো বড় ঘাটতি। ঘাটতিটা এখন এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে এত বছর ধরে আমরা পুনরাবৃত্তি করার পরও কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে বাধ্য করতে পারলাম না। জনসাধারণও একইভাবে নির্লিপ্ত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় ভূমিকম্প প্রস্তুতি ও সচেতনতা কমিটির দেয়া নির্দেশনার আট মাস পেরিয়ে গেলেও রাজউক কিংবা সিটি কর্পোরেশন কিছু করতে পারেনি। এমনকি ২০১৪ সালের ১৫ জুন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জাতীয় সংসদে যে ৩২১টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কথা উল্লেখ করেছিলেন, সেগুলোতেও বিশেষ রং দিয়ে চিহ্নিতকরণ ও ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন’ লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয়নি। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সূত্র জানিয়েছে, রাজউক আজ পর্যন্ত ৩২১টি ভবনের বাইরে আর কোন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে পারেনি। কারণ বিজ্ঞানসম্মতভাবে জরিপ করতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। ঢাকায় কত ভবন রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী নগর পরিকল্পনাবিদ মোঃ এমদাদুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় বর্তমানে ১০ থেকে ১২ লাখ ভবন আছে। এর বেশির ভাগই যথাযথভাবে নির্মিত হয়নি। আমি মনে করি, ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ৭২ হাজার নয়, আরও বেশি। তিনি বলেন, কখনও ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে ঢাকা ধ্বংস হয়ে যাবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখনই বিজ্ঞানসম্মতভাবে জরিপ চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার। রাজধানীতে মাত্র ৩২১টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে রাজউক দাবি করলেও সম্প্রতি সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, শুধু ঢাকা শহরে ৭২ হাজার বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন করার জন্য গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। ঢাকায় অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নাজুক দালান-কোঠা এবং অত্যধিক জনসংখ্যা ভূমিকম্পে ক্ষয়-ক্ষতির সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, ভূমিকম্প সহায়ক ভবন নির্মাণে সরকার বিএনবিসি নামের একটি নীতিমালা প্রণয়ন করলেও সেটা কেউ মানছেন না। রাজধানীতে ২৫৫ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ ৩২১টি ভবনের মধ্যে ২৫টি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আরও ২৫৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিদ্যমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সম্প্রতি সংসদে এমন তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে রাজউক প্রাথমিকভাবে ৩২১টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু ঢাকা সিটি কর্পোরেশন অর্ডিনেন্সের তৃতীয় তফসিলের ৫২-৫৩ ক্রমিক অনুসারে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা ও ভেঙ্গে ফেলার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে রাজউক এই ৩২১টি ভবন ফের জরিপ করে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে মালিকরা এরই মধ্যে ২৫টি ভবন ভেঙ্গে ফেলেছেন। এছাড়া ২৮টি ভবন মালিকরা ভেঙ্গে নতুনভাবে নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে ২৫৫টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন বিদ্যমান আছে, যার মধ্যে ৩৫টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২২০টি বাহ্যিক ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারের সংশ্লিষ্ট আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে ওই ভবনগুলো চূড়ান্তভাবে ঝুঁকিপূর্ণ নিশ্চিত করা সাপেক্ষে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলমান আছে। গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকায় পরিত্যক্ত বাড়ি আছে এবং এর সংখ্যা ৬ হাজার ৪০৯টি। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত পরিত্যক্ত বাড়িগুলো শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ডিমান্ড নোট হোল্ডারদের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে ঢাকার বনানীতে এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত করা হয়। পাশাপাশি বেশকিছু সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে ব্যানারও টানিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সব কিছু এটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। দ্বিতীয় বারের মতো বিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হওয়ার পর এখন অনেকেরই আশা হয়তো নিরাপদ বসতি গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ আসবে। কেমন উদ্যোগ চাই। জানতে চাইলে নগরবিদ নূরুল ইসলাম নাজেম বলেন, আমরা একটি পরিকল্পিত নগরী চাই। যেখানে বিশ^মানের আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। কিন্তু এই আশা কবে পূরণ হবে তা জানিনা। এটা করার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। তবে যেটা করা প্রয়োজন তা হলো ঝুঁকিপূর্ণ বা অনুমোদনহীন ভবনগুলো দ্রুত ভেঙ্গে ফেলতে হবে। তাহলে অন্তত এসব ভবনে থাকা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
×