ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ারীতে শিশু স্কুলছাত্রী সায়মাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা

প্রকাশিত: ১০:১৭, ৭ জুলাই ২০১৯

 ওয়ারীতে শিশু স্কুলছাত্রী সায়মাকে ধর্ষণের পর  শ্বাসরোধে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরান ঢাকার ওয়ারীতে ৭ বছরের স্কুলছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণের পর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার বেলা একটা ৫৪ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে শিশুটির মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সোহেল মাহমুদ এ কথা বলেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার শরীরে ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত মিলেছে। হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। সোহেল মাহমুদ জানান, ময়নাতদন্তে তার যৌনাঙ্গে ক্ষত চিহ্ন, মুখে রক্ত ও আঘাতের চিহ্ন, ঠোঁটে কামড়ের দাগ দেখা গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট হতে তার ‘হাই ভ্যাজাইনাল সয়াব’ জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। ওসব প্রতিবেদন পাওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়া হবে। শিশু সায়মা ওয়ারীর সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী ছিল। তার বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরে ব্যবসা করেন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সায়মা ছিল সবার ছোট। ওরা ওয়ারীর বনগ্রাম মসজিদ রোডের ১৬৯ নম্বর ৯ তলা ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় থাকে। পারিবারিক সূত্র জানায়, শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় সামিয়া নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ভবনের নবম তলার একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটে গলায় রশি পেঁচানো তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আশপাশের আলামত সংগ্রহ করে। নিহত সায়মার বাবা জানান, শুক্রবার বিকেলে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সায়মা তার মাকে বলে ‘আমি উপরে পাশের ফ্ল্যাটে খেলতে যাচ্ছি। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিল সায়মা। তিনি জানান, মাগরিবের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফেরার সময় নাশতা কিনে বাসায় আসি। এসে দেখি সায়মা নেই। তার মা খোঁজাখুঁজি করছে। পরে আমিও খুঁজতে শুরু করি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ৯ তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে গলায় রশি পেঁচানো ও মুখ রক্তাক্ত অবস্থায় ওর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দিই। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বাবা বলেন, আমার অবুঝ মেয়ে সায়মা হত্যার বিচার চাই। ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নুরুল আমিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে, ওই ভবনেরই কেউ শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে থাকতে পারে। ইতোমধ্যে ভবন মালিক, সিকিউরিটি গার্ড, ভাড়াটিয়াসহ ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশপাশের বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওয়ারী থানার ওসি আজিজুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, শনিবার সকালে সায়মার বাবা বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আসল ঘটনা জানা যাবে।
×