ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফাজিলপুরে নৌপথে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ১২:২৭, ২২ মে ২০১৯

ফাজিলপুরে নৌপথে টোল আদায়ের  নামে চাঁদাবাজি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ, ২১ মে ॥ তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুরে চলছে টোলট্যাক্স আদায়ের নামে চাঁদাবাজি। সরকারের নির্ধারিত রয়েলিটি (টোল) না মেনে ইজারাদারগণ নিজেদের মনগড়াভাবে টোল আদায় করছেন। আনোয়ারপুর ব্রিজের উজান দিকে ছোট বড় ভলগেট (নৌকা) থেকে সরকারের নির্ধারিত হারে রয়েলিটি (টোল) আদায়ের কথা থাকলে ও ইজারাদারগণ টোল আদায়ের নামে চালাচ্ছেন ব্যাপক চাঁদাবাজি এমন অভিযোগ নৌকার মাঝিদের। জানা যায়, ফাজিলপুরের এই এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ছোটবড় ৬ থেকে ২০ হাজার ফুটের অধিক বহনকারী দুই শতাধিক নৌকা বালু ও পাথর বোঝাই করে এ নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে প্রশাসন থেকে ৪৮ লাখ টাকায় এই ফাজিলপুর ঘাট এক বছরের জন্য ইজারা নেন ফাজিলপুর গ্রামের মুর্তুজ আলীর ছেলে কাশেম মিয়া। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই ঘাটে সরকারের নির্ধারিত টোল আদায়ে প্রতি ভলগেটে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে টোল আদায়ের নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ফাজিলপুর হতে আনোয়ারপুর পর্যন্ত এই এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ইজারাদার কাশেম মিয়া, তার সহোদর ফয়সল আহমেদ, রহম মিয়া, সেলিম মিয়া ও দক্ষিণকূল গ্রামের নবার মিয়ার ছেলে সারোয়ার মিয়া ও তার সহোদর জাকারিন মিয়া প্রতিদিন সরকারের নির্ধারিত ফি না নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতে টোল আদায় করছেন। এই ঢোল আদায়কারী চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে ফাজিলপুর এলাকায় প্রতিদিন বালু ও পাথর বোঝাই নৌকা এবং ভলগেটগুলো আটকিয়ে সরকারের নির্ধারিত টোল আদায়ের চেয়ে প্রতি নৌকা হতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা আদায় করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও তদারকি না থাকার কারণে এই টোল আদায়ের নামে প্রতিদিন এই চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রায় সময় টোল আদায়ের নামে নৌকার মাঝিদের নৌকা কিংবা ভলগেট আটকিয়ে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটছে। এ ব্যাপারে ভলগেট নৌকার মাঝি জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের লম্বাবাক গ্রামের মন্নান মিয়া জানান, তার ৬ হাজার ফুটের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বালু বোঝাই নৌকা কুমিল্লার দাউদকান্দি যাওয়ার সময় রয়েলিটি ঘাটে আসা মাত্র ফাজিলপুরের ইজারাদার কাশেম মিয়ার লোকজন তার ভলগেট আটকিয়ে ৩ হাজার টাকা টোল দাবি করেন। কিন্তু মাঝি ৮০ টাকার পরিবর্তে এত টাকা চাঁদা দাবি পূরণ করতে অপরাগতা করলে কাশেম মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন মিলে তাকে ৩ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তা না হলে নৌকা আটক রেখে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দেয়া হয়। তিনি প্রাণের ভয়ে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে মুক্তি নেন বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসিফ ইনতেয়াজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিটি ভলগেট নৌকা হতে আড়াই থেকে তিন টাকা টোল আদায়ের নির্দেশ দেয়া আছে। তবে যারা অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×