বাস চাপায় পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রীনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। রবিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত তার আদেশে বলেছে, আগামী ৩ এপ্রিল বুধবারের মধ্যে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে ৪ এপ্রিল এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এর আগে রবিবার সকালে গ্রীনলাইন পরিবহনের করা আবেদন খারিজ করে টাকা পরিশোধের আদেশ বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সমন্বয়ে আপীল বেঞ্চ। পরে হাইকোর্টও তিনদিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা ও এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড খবির উদ্দিন ভূঁইয়া। গ্রীনলাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী অজি উল্লাহ। গত বছর ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রীনলাইন পরিবহনের বাস চাপায় পা হারান প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকার। পরে গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন সাবেক সাংসদ আইনজীবী উম্মে কুলসুম। রবিবার আদেশের পর রিটকারী আইনজীবী এ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত বুধবারের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা রাসেলকে বুঝিয়ে দিতে গ্রীনলাইন পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছে। টাকা দেয়ার পর বৃহস্পতিবার তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। গত ১২ মার্চ বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দিয়েছিলেন। ৫০ লাখ টাকা দেয়ার আদেশের পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটাপড়া বাম পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দিতে বলা হয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ মে রাসেলকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। রাসেলের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত বাস কর্তৃপক্ষ তার কোন খোঁজখবর নেয়নি। গত বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রীনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শঙ্কায় পড়ে তার জীবন। পা হারানো রাসেল সরকারের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রাসেল রাজধানীর আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ে বসবাস করতেন এবং স্থানীয় একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওই দিন ঘটনাস্থলেই রাসেলের বাম পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।