ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

১০ কোটি ডলারেও রাজি হলেন না

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

১০ কোটি ডলারেও রাজি হলেন না

পুরনো দিনের একটি দোতলা বাড়ি, পাশে একটি দোকান। কতই বা দাম হতে পারে বাড়িটির, মালিককে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বিক্রি করতে, কিন্তু তিনি রাজি হননি। দাম বাড়াতে বাড়াতে তারা ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত নিয়ে যায়, কিন্তু তাতেও বাড়ির মালিককে রাজি করানো যায়নি। কিন্তু একজন ফিলিস্তিনীর কাছে যে এটি শুধুই একটি বাড়ি নয়, ইসরাইলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজ মাতৃভূমিতে পড়ে থাকাই তার কাছে একটি আন্দোলন। তাই ইহুদী বসতি স্থাপনকারীদের কাড়ি কাড়ি টাকার প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন অবলীলায়। ফিলিস্তিনের (পশ্চিম তীরের) হেবরন শহরের বাসিন্দা আবদুল রউফ আল মোহতাসেব। শহরটির পুরনো এলাকা আল সাহলায় অবস্থিত তার বাড়িটি, বাড়ির রাস্তার লাগোয়া অংশটিতে রয়েছে তার পোশাকের দোকান। অনেক দিন ধরেই বাড়িটি কিনে নিতে চাইছে ইহুদীরা। কিন্তু মোহতাসেবের এক কথা তিনি ইসরাইলীদের কাছে বাড়ি বিক্রি করবেন না। আল মোহতাসেব জানিয়েছেন, এর আগেও অনেকবার ইসরাইলীরা দোকানসহ তার বাড়িটি কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, কিন্তু তিনি কখনই রাজি হননি। আল মায়াদিন টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মোহতাসেব বলেছেন, সর্বশেষ যেবার দুজন তার বাড়ি কিনতে এসেছে প্রথমে ৬ মিলিয়ন অর্থাৎ ৬০ লাখ মার্কিন ডলার থেকে তাদের প্রস্তাব শুরু হয়েছে। এরপর তারা সেটি বাড়াতে বাড়াতে ৪ কোটি ডলারে উঠায়, শেষ পর্যন্ত যা গিয়ে ঠেকেছে ১শ’ মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ কোটি ডলারে, কিন্তু তিনি সব প্রস্তাবই ফিরিয়ে দেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলীদের কাছে বাড়ি বিক্রি করব না, পৃথিবীর সব অর্থ নিয়ে প্রস্তাব দেয়া হলেও তা আমি প্রত্যাখ্যান করতে পারি। আমি কখনই আমার দেশ ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করব না। বাড়ি কিনতে আসা ইহুদী বসতি স্থাপনকারীরা মোহতাসেবকে বলেছেন, তুমি যদি হামাস কিংবা ইসলামিক জিহাদের ভয়ে বাড়ি বিক্রি করতে না চাও তবে আমরা তোমাকে সুরক্ষা দেব। অস্ট্রেলিয়া কিংবা কানাডার মতো কোন দেশে তোমাকে পাঠানোর ব্যবস্থা করব। যেখানে তুমি নতুন জীবন শুরু করতে পারবে এই অর্থ দিয়ে। তোমার পছন্দ মতো ব্যাংক এ্যাকাউন্টে অর্থ চলে যাবে। এই ফিলিস্তিনী জানান, বাড়ি কিনতে আসা লোক দুজন ক্রমশই অর্থের পরিমাণ বাড়াতে থাকে। তিনি তাদের বলেন, মাতৃভূমিতেই থাকতে চাই। ‘এখানে শৈশব কাটিয়েছি আমি। আমার নাতি-নাতনিদের কোনভাবেই বঞ্চিত করতে চাই না’। - মিডল ইস্ট মনিটর
×