স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যালারির চারপাশজুড়ে শোভা পাচ্ছে বিচিত্র বিষয়ের শিল্পকর্ম। আর বৈচিত্র্যময় ক্যানভাসগুলো উদ্ভাসিত হয়েছে চারুশিক্ষার্থীদের রং-তুলির আঁচড়ে। আছে নানা নিরীক্ষাধর্মী কাজও। ছবিগুলো এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের শিক্ষার্থী শিল্পী। সেসব চিত্রকর্ম নিয়ে অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে চলছে বিভাগটির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। শহর ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তের মানুষের যাপিত জীবনসহ নানা বিষয়কে উপজীব্য করে বহুমাত্রিক করণকৌশলে আঁকা ছবি দিয়ে সজ্জিত হয়েছে এ প্রদর্শনী। বছরজুড়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেসব অনুশীলন করেছেন সেগুলো থেকে নির্বাচিত শিল্পকর্ম ঠাঁই পেয়েছে প্রদর্শনীতে। তেল রং, জল রং, পেন্সিল এবং নিরীক্ষাধর্মী নানা কাজ রয়েছে প্রদর্শনীতে। আর এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃতও করা হয়েছে।
রবিবার চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে আখতারুজ্জামান বলেন, বিমূর্ত এই শিল্পকর্মগুলো সৃজনশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ। এই ধরনের প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিল্পভাবনা ও শিল্পদক্ষতার পরিচয় ফুটে ওঠে। তাছাড়া প্রদর্শনী হলে শিল্পীদের নিজস্ব শিল্প শৈলীর প্রকাশ ঘটেছে।
প্রদর্শনী উপলক্ষে শিল্পকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তেল রং, জল রং, পেন্সিল এবং নিরীক্ষাধর্মী বিভাগে নয়জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। শহীদ শাহনেওয়াজ স্মৃতি পুরস্কার (পেন্সিল মাধ্যম) পেয়েছেন আরাফাত হোসেন রুবেল, মাহবুবুল আমীন স্মৃতি পুরস্কার (জল রং) সৌরভ ধর, কাজী আবদুল বাসেত স্মৃতি পুরস্কার (তৈল রং) সৈকত সরকার, দেলোয়ার হোসেন স্মৃতি পুরস্কার (তৈল রং) তন্ময় শেখ, আনোয়ারুল হক স্মৃতি পুরস্কার (নিরীক্ষাধর্মী) মোঃ তারিকুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার (পেন্সিল) অনিকা রায়, শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার (জল রং) নাজমুস সাকিম খান, শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার (তৈল রং) মোঃ হেলাল হোসেন এবং নিরীক্ষাধর্মী কাজের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার লাভ করেছেন ফারিয়া খানম।
প্রদর্শনীতে ৬০ জন শিক্ষার্থীর ৭২টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী চলছে আগামী ১৭ নবেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য এই প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।
কাল থেকে দুই দিনের নবান্ন উৎসব ॥ ‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ প্রতিপাদ্যে গত দেড় যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় নবান্ন উৎসব। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় কাল বৃহস্পতিবার পহেলা অগ্রহায়ণে অনুষ্ঠিত হবে নবান্ন উৎসব। জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ উৎসব এবার দুই দিনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ১ মিনিট থেকে সকালের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়ে প্রথম পর্ব সকাল ৯টায় নবান্ন শোভাযাত্রার মাধ্যমে শেষ হবে। চারুকলার বকুলতলায় বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। দ্বিতীয়দিন শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে একটানা রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। এবারের নবান্ন উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক ও পর্ষদের কো-চেয়ারম্যান শুভ রহমানকে। এবার উৎসবে সহায়তা করছে ল্যাবএইড ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি রেস্তরাঁয় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা এসব তথ্য জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পর্ষদের আহ্বায়ক শাহরিয়ার সালাম। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছরের নবান্ন উৎসব উদ্বোধন করবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। উৎসবে সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, নবান্ন শোভাযাত্রা, আদিবাসী পরিবেশনাসহ বিভিন্ন পরিবেশনা থাকবে। থাকবে ঢাক-ঢোলের বাদন আর মুড়ি-মুড়কি-বাতাসা ও পিঠার আয়োজন। দ্বিতীয়দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নবান্নের শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়ে মঞ্চে ২২টি শিশু সংগঠনের পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রাঙ্গণে শিশুরা দিনভর নবান্নের চিত্রাঙ্কনে অংশ নেবে। দুই দিনের উৎসবে ৬৮টি সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ প্রায় ১২০০ শিল্পী সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি পরিবেশন করবেন। ঢাকার বাইরে থেকে ভারতের অসম থেকে শিল্পীরা এবং টাঙ্গাইলের সঙযাত্রা ও নড়াইলের পটগান অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: