ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটে ধরলার ভাঙ্গনে বসতবাড়ি নদীগর্ভে

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

লালমনিরহাটে ধরলার ভাঙ্গনে বসতবাড়ি নদীগর্ভে

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৪ অক্টোবর ॥ এ বছর তেমন বন্যা না হলেও থামানো যাচ্ছে না ধরলার ভাঙ্গন। তীব্র ভাঙ্গনে গত এক সপ্তাহে সদর ও পাটগ্রাম উপজেলার মোট ছয়টি ইউনিয়নের অর্ধ-শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। একই সঙ্গে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি ও গাছপালা। হুমকির মধ্যে রয়েছে আরও অর্ধ-শতাধিক পরিবার। সরেজমিনে দেখা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ী এবং পাটগ্রামের শ্রীরামপুর, জোংড়া, বুড়িমারী ইউপির ১৬টি পয়েন্টে নদীভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে জোংড়া, কুলাঘাট ও মোগলহাটের অবস্থা উদ্বেগজনক। এ তিন ইউনিয়নের কিছু এলাকায় ভাঙ্গন ঠেকাতে চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, বাঁধ নির্মাণের কাজ পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে না। ফলে ভাঙ্গনের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। স্থায়ীভাবে নদী শাসন করতে না পারলে লালমনিরহাটের ধরলার তীরের মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। মোগলহাটে ধরলা ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশে নদী ভাঙ্গছে। ভারতে বিশাল বিশাল চর তৈরি হচ্ছে। এখানে দ্রুত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা না নিলে মানচিত্র হতে ভূখণ্ড কমে যাবে। গত এক সপ্তাহে ধরলার ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে জোংড়া ও মোগলহাট ইউপির বেলিচা বেগম, আইনুদ্দিন, মোতালেব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, শামসুল হক, গফুর মোল্লা, মাইফল নেছা, ফয়াজ উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও রেজিয়া বেগমের বসতবাড়িসহ সব সহায়-সম্বল। কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টার বলেন, ধরলার ভাঙ্গনে চলতি বছর তার ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছে। কয়েকশ’ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে ১৫টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, মোগলহাটে দ্রুত ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে নদীভাঙ্গনে বাংলাদেশের ভূমি কমে যাচ্ছে। ভারতে বিশাল বিশাল চর জাগছে। লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ধরলার ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভাঙ্গনরোধে পাটগ্রামের জোংড়া ইউপিতে ১০টি প্যাকেজে ২৪ কোটি টাকার কাজ চলছে। বরিশাল স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক জরুরী অবস্থা ঘোষিত এলাকায় অনতিবিলম্বে কাজ শুরু করা, চরকাউয়া খেয়াঘাট থেকে জনতার হাট পর্যন্ত স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ, মোহাম্মদপুর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর ডুবোচর ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ ও বাস্তুহারা নদী ভাঙ্গুলীদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার চরকাউয়া কীর্তনখোলা নদীর তীরে নদী ভাঙ্গন রোধে সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে পূর্বাঞ্চলের নদী ভাঙ্গনের শিকার কয়েক শ’ পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। চরকাউয়া নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক জেলা পরিষদের সদস্য মুনাওয়ারুল ইসলাম অলির সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ সাইদুর রহমান রিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম প্রমুখ।
×