ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ সম্মেলন শেষ

ঋণ পাওয়াসহ চার ইস্যুতে লাভবান বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

  ঋণ পাওয়াসহ চার ইস্যুতে লাভবান বাংলাদেশ

এম শাহজাহান, ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে ॥ রেকর্ড ভেঙ্গে ঋণ পাওয়াসহ চারটি ইস্যুতে বিশ্বব্যাংক আইএমএফ বার্ষিক সম্মেলনে লাভবান হয়েছে বাংলাদেশ। অন্য ইস্যুগুলোর মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তাকে অনুদান হিসেবে পাওয়া, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সরাসরি বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন ও সম্পর্ক উন্নয়ন রয়েছে। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনে এ অর্জন নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে ফিরছে বাংলাদেশ। আর এরই মধ্যদিয়ে রবিবার শেষ হয়েছে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনটি। ঋণ পাওয়ার মূল্যায়ন করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী বছরের জন্য আমরা সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার চেয়েছি, তারা ইতোমধ্যে দুই বিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ব্যয় করতে পারলে সংস্থাটির কাছ থেকে চাহিদামতো অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিল তারা সেই অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। নিয়ম অনুযায়ী ব্যয় করতে না পারলে সেই অর্থ যারা ব্যয় করতে সক্ষম তাদের কাছে যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সেই কারণে চাহিদামতো বাংলাদেশ পুরো অর্থ পাবে। এটি ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাংক তিন বছরে (২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০) বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই অর্থের পুরোটা দুই বছরেই ব্যয় করা হয়েছে। কারণে চলমান প্রকল্প চালিয়ে নিতে তাদের কাছ থেকে বাকি এক বছরের জন্য আরও ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার চায় বাংলাদেশ। বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সরাসরি বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন পাওয়া গেছে। তিনি জার্মান কুয়েক, আরব আমিরত ও সুইডেনকে সহায়তার অর্থ অনুদান হিসেবে দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছেন। প্রেসিডেন্টের এই সুপারিশ আমলে নিয়ে চারটি দেশ তাদের সহায়তাকে অনুদান হিসেবে বাংলদেশে দিতে যাচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখায় বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে সংস্থাটি দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। মুহিত বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রোহিঙ্গা নিয়েই সব আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, অসহায় এই মানুষগুলোর সহায়তার জন্য যে খরচ হবে, তার ব্যবস্থা বিশ্বব্যাংক করবে। আমাদের সরকারের কোন অর্থ খরচের প্রয়োজন পড়বে না। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। তাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে অগ্রগতি নেই। এই শরণার্থীরা জনবহুল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় চাপ সৃষ্টি করেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী জানান, আগামী দুই বছরে রোহিঙ্গাদের জন্য দুই বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। কোন ঋণ নয়, পুরোটাই অনুদানের ব্যবস্থা করবে বিশ্বব্যাংক। এক বিলিয়ন ডলার করে দুই বছরে দুই বিলিয়ন ডলারের এই অর্থের বেশির ভাগ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি অর্থ অন্যান্য দাতা দেশ এবং সংস্থার কাছ থেকে যোগাড় করে দেবে। রোহিঙ্গাদের জন্য ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৫০ কোটি ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও ২০ কোটি ডলারের চুক্তি হবে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির সঙ্গে প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছে। আরও ১০ কোটি ডলারের চুক্তি হবে শীঘ্রই।
×