ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শাবিতে ভাষা ডিপ্লোমা কোর্সে ৬ ক্রেডিটে ফি ৯ হাজার

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শাবিতে ভাষা ডিপ্লোমা কোর্সে ৬ ক্রেডিটে ফি ৯ হাজার

হোসাইন ইমরান, শাবি ॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’র(আইএমএল) অধীনে চালু হওয়া বিদেশী ভাষা শিক্ষা ডিপ্লোমা কোর্সের ফি চড়ামূল্যে নির্ধারণ করেছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যা সামর্র্থ্যরে বাইরে হওয়ায় বিমুখ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। ফ্রেঞ্জ, ইংলিশ ও আরবী তিনটি ভাষার শিক্ষা দিতে ২০১৬ সাল থেকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’র অধীনে ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে আসছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছর থেকে জার্মান ও জাপানিজ ভাষা শিক্ষা কোর্স যুক্ত করা হয়। এসব ভাষায় শিক্ষা নিতে প্রথমে ৬ মাস মেয়াদী ৬ ক্রেডিটের বেসিক কোর্স করতে হয়। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ভাষায় আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে অলাদা আলাদা করে ৬ মাস মেয়াদী ৬ ক্রেডিট করে আরও দুই সেমিস্টারের ডিপ্লোমা কোর্স করতে হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেসিক কোর্সের জন্য ফি দিতে হয় ৯ হাজার টাকা। আর শিক্ষার্থী যদি বাইরের হন তাহলে তাকে আরও তিন হাজার টাকা বাড়িয়ে মোট ১২ হাজার টাকা ফি দিতে হয়। ডিপ্লোমা কোর্সে দুই সেমিস্টারে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আরও ৯ হাজার টাকা করে মোট ১৮ হাজার টাকা দিতে হয়। আর শিক্ষার্থী যদি বাইরের হন তবে তাকে ১২ হাজার করে মোট ২৪ হাজার টাকা দিতে হয়। সব মিলিয়ে আইএমলেরও অধীনে বিদেশী ভাষা শিক্ষায় বিশ^বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি বেসিক ও ডিপ্লোমা মিলিয়ে দেড় বছর মেয়াদী ১৮ ক্রেডিটের কোর্স করতে চান, তবে তাকে ভর্তি ফরমের এক হাজার টাকাসহ মোট ২৮ হাজার টাকা ফি দিতে হচ্ছে। আর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীকে ভর্তি ফরমের এক হাজারসহ মোট ৩৭ হাজার টাকা ফি দিতে হচ্ছে। ফি’র পরিমাণ শিক্ষার্থীদের সামর্থের বাইরে থাকায় আইএমএল’র অধীনে ভাষা শিক্ষায় বিমুখ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। পাঁচটি ভাষার বিপরীতে বেসিক কোর্সে এ বছর ভর্তি হয়েছেন মাত্র ৭০ শিক্ষার্থী। আর বেসিক কোর্স শেষে ডিপ্লোমা কোর্সে আছেন মাত্র ৫০ শিক্ষার্থী। ৬ মাস মেয়াদী কোর্সের জন্য ৯ হাজার টাকার ফি বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলাদা আলাদা তিনটি হিসেবে নিয়ে থাকে। ‘বিশ^বিদ্যালয়ে প্রদেয় ফি’, ‘বিভাগীয় প্রদেয় ফি’ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে প্রদেয় ফি মোট তিনটি হিসেবের মধ্যে শিক্ষাপঞ্জি ও অন্যান্য বাবদ ২২৭৯, বিভাগীয় উন্নয়ন ফি-২৭০০, বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিয়ন বাবদ ৩০০০ টাকা হচ্ছে ফি হিসেবে নেয়া সবচেয়ে বড় টাকার পরিমাণ। এসব খাতে এত টাকা নেয়ার কারণ জানতে চাইলে আইএমএল’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, আমরা তিনটি আলাদা আলাদা হিসেবে ফি নিয়ে থাকি। বিশ^বিদ্যালয় সিন্ডিকেটের মতামতের ভিত্তিতে তাদের হিসেবে কিছু ফি নিয়ে থাকে। সেটা তারাই বলতে পারবে। আমাদের হিসেবে আমরা বিভাগীয় উন্নয়ন ফি বাবাদ তুলনামূলক বেশি টাকা নেই। শিক্ষার কোয়ালিটি ও পরিবেশের মান রক্ষার্থে আমরা সেটা করে থাকি। আমরা রুমগুলোতে এসি লাগিয়ে দিয়েছি। পূর্ণাঙ্গ বিভাগ না সত্ত্বেও প্রতি ভাষা কোর্সে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘বিভাগীয় উন্নয়ন ফি’ বাবদ নেয়া এত পরিমাণ টাকা কোথায় খরচ করা হয় এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি হিমাদ্রী শেখর। ইউনিয়ন ফি বাবাদ তিন হাজার টাকার খরচের হিসাব জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ের হিসাব পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, সেটি আমি ভাল বলতে পারব না। ইউজিসি বিশ^বিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য চাপ দেয়। সেটি মূলত আয় হিসেবেই ফান্ডে জমা হয়। কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর জন্য ফি নির্ধারণ করলেও সেই ফি সামর্থ্যরে বাইরে হওয়ায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আইএমএল’র কোর্স করতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। ইংরেজী বিভাগের মাস্টার্সেও শিক্ষার্থী গোপাল রায় তমাল বলেন, ফ্রেঞ্জে ভর্তি হতে চেয়েছিলাম। ফি’র পরিমাণ বেশি হওয়ায় পারিনি। এটা কমানো দরকার। এ বিষয়ে উপাচার্র্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমরা অনেক কম ফি নির্ধারণ করেছি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইএমএল’র ফি আরও বেশি।
×