ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্র রুখবে ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্র রুখবে ওয়ার্কার্স পার্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ড. কামাল জামায়াতকে হালাল করছে বলে মনে করে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি। দলটির নেতারা বলেছেন, বিএনপি বরাবর জামায়াতকে তাদের মিত্র হিসেবেই আখ্যায়িত করছে। সম্প্রতি মির্জা ফখরুল স্পষ্টই বলেছেন জামায়াতের সঙ্গে ২০ দলের ঐক্য অটুট রয়েছে, সেখানে বিএনপির সঙ্গে যেকোন ধরনের ঐক্যই জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য, এবং সেটা হবে বাস্তবে সম্প্রসারিত ২০ দল। শনিবার ওয়ার্কার্স পার্টির দু’দিনব্যাপী পলিটব্যুরো সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে সব কথা বলা হয়। পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, একানব্বই সাল থেকেই জামায়াত-বিএনপির ক্ষমতার সোপানই কেবল নয়, তাদের ক্ষমতার অংশীদারও এবং এ বিষয়টি কখনই তারা গোপন করে না। ড. কামাল, যুক্তফ্রন্ট ও বামদের কেউ কেউ জামায়াত বাদে বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করার কথা বললেও কার্যত তারা সত্যকেই চোখ ঠারছে। ওই জাতীয় ঐক্যে হাওয়া ভবন ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার নায়ক তারেক রহমানই যে নেতা হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। এভাবে মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সময় ‘জাতীয় সনদের’ নাম করে নতুন মেরুকরণের চেষ্টা করেছিল এক এগারো এর কুশিলবরা। এখন বিদেশী সহায়তার জন্য তারা দৌঁড়ঝাঁপ করছে। বাংলাদেশের জনগণ এ ধরনের ষড়যন্ত্র অতীতেও দেখেছে এবং বর্তমানেও তারা তার পুনরাবৃত্তি হতে দেবে না। জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার অথবা প্রতিল্ডিয়াশীল শক্তিকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার যেকোন ষড়যন্ত্র তারা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবে এ কথা উল্লেখ করে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা বলেন, দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তি ও অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক শক্তির ব্যাপক ঐক্য গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সকলের ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানানো হয়েছে। পার্টির প্রস্তাবে আরও বলা হয়, আগামী নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে এ দেশ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগোবে, না সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গীবাদ ও দুঃশাসন-লুটপাটের ধারায় পিছিয়ে পড়বে। যদি শান্তি ও উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিতে হয় তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। আর সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। যেন তারা কোনদিনই আর বাংলাদেশে মাথাচড়া দিয়ে উঠতে না পারে। সভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর রিপোর্ট উত্থাপন করেন। আলোচনায় অংশ নেন পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, নুরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান মানিক, সুশান্ত দাস, মনোজ সাহা, ইকবাল কবির জাহিদ, নুর আহমেদ বকুল, হাজেরা সুলতানা, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ ও মুস্তফা লুৎফুল্লাহ প্রমুখ। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও তৃতীয় শক্তি উত্থানে তৎপরতা শুরু করেছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। বিগত নির্বাচনগুলোতেও এমন তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতৃত্বে তিন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে জাতীয় ঐক্য। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম। চার দল মিলিয়ে যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। বিএনপির সঙ্গে নতুন এই রাজনৈতিক জোট এক হওয়ারও আলোচনা সরব। তবে কামাল হোসেন বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে কোন ঐক্য নয়, হতে পারে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নতুন জোটকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে জাতীয় ঐক্য হতে পারে না।
×