ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের কিছু করার নেই ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের কিছু করার নেই ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, দেশে নির্বাচন হবে, জনগণ তাতে ভোট দেবে। এতে জাতিসংঘের কিছু করার নেই। তাদের কাজ বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে (মিয়ানমারে) ফেরত পাঠানো। কিন্তু বিএনপির এক নেতা জাতিসংঘে গেছেন নির্বাচন নিয়ে নালিশ করতে। সেখানে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কিছু বলেননি। দেশের বিরুদ্ধে বিদেশীদের কাছে নালিশ করার জবাব জনগণ দেবে ইনশাল্লাহ। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, এটি একটি ভাওতাবাজি। নানা অযুহাতে তিনি জিয়া অরফানেজ দুর্নীতি মামলা নয় বছর ব্যাহত করেছেন। এবার জিয়া চ্যারিটেবল মামলার বিচার কাজ ব্যাহত করতে তিনি অসুস্থতার ভান করছেন। বিএনপি নাকি বেগম জিয়ার মুক্তিতে আন্দোলনে যাবে। এটি কি সরকারের বিষয়? আদালত সাজা দিয়েছে। এতে সরকারের কিছু করার নেই। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও বানচালে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এক-এগারোর কুশিলবরা আবারও সংঘবদ্ধ হচ্ছে। আন্দোলনের নামে আবার যদি কোন রকম বিশৃঙ্খলা বা আগুন সন্ত্রাস হয়, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা মোকাবেলা করা হবে। কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সরকারী হাসপাতালের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে শনিবার প্রধান অতিথি এবং সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রীদ্বয় এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী মোঃ কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরাঙ্গীরচর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোঃ আবুল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর গাড়ি বহরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান স্থানীয় জনগণ। রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে তারা মন্ত্রীদের গাড়িবহরে ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং খাদ্যমন্ত্রী মোঃ কামরুল ইসলামকে স্বাগত জানিয়ে সেøাগান দিতে থাকেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। পরে সুধী সমাবেশে আসেন। এদিকে কামরাঙ্গীরচরের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা মিছিল করে সুধী সমাবেশ স্থলে আসেন। প্রায় ২০ হাজার লোকের সমাগম হয় সেখানে। সমাবেশে স্থানীয় নেতারা তাদের বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রীকে আরও বিপুল ভোটে বিজয়ী করার ঘোষণা দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতে খাদ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় আগে একবার কামরাঙ্গীরচর এসেছিলাম। আজ আবার আসলাম। কিন্তু সেদিনের এই কামরাঙ্গীরচর আর আজকে এলাকাটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেদিন নৌকায় করে এসেছিলাম। আর আজ গাড়িতে করে। এই এলাকায় এতো উন্নতি হয়েছে আপনাদের এই প্রিয় নেতা কামরুল ভাইয়ের কারণে। তিনি বলেন, আমি না আসলে বুঝতে পারতাম না কামরুল ভাই এই এলাকায় এতো জনপ্রিয়। তিনি আরও বলেন, এক-এগারোর সময় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। তখন অনেক বড় বড় আইনজীবীরা আমাদের পক্ষে দাঁড়াবার সহস পায়নি। কিন্তু এই কামরুল ভাইকে সেদিন আমরা আইনজীবী হিসেবে পাশে পেয়েছিলাম। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আপনারা সতর্ক থাকুন। আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নির্বাচন যথাসময় হবে। শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার। এই সরকার উন্নয়নের সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিয়েছে। প্রতিটি পাড়ায়, মহল্লায় উন্নয়ন ঘটিয়েছে। দেশ জঙ্গীমুক্ত করেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে বাংলাভাই, শায়েখ রহমানরা ছিল। একযোগ ৬৩ জেলায় বোমা হামলা চালিয়েছিল। লালবাগে দিনে দুপুরে ৭ খুন হয়েছিল। দেশের মানুষ আতঙ্কে থাকতো। এখন জনমনে কোন আতঙ্ক নেই। শান্তির দেশে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন আগামী নির্বাচন হবে ফাইনাল খেলা। শেখ হাসিনা বল মিস করবেন না। বিএনপি মিস করলে নক-আউট হয়ে যাবে এই খেলা থেকে। জনগণ তাদের চিরদিনের জন্য নক-আউট করবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আপনারা আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছিলেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। চেষ্টা করেছি কামরাঙ্গীরচরের মানুষের ভাগ্যউন্নয়নে। প্রথমে রাস্থাঘাট তৈরি করেছি, কিন্তু ছয় মাসের বেশি তা থাকতো না। নষ্ট হয়ে যেতো। পরে বড় বড় সুয়ারেজ লাইন তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টি আসলে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় পানিতে ডুবে গেলেও কামরাঙ্গীচর ডোবে না। এখানে কোন পানি জমে না। যেখানে নৌকা করে আসতে হতো, সেখানে এখন সকল প্রকার গাড়ি চলাচল করতে পারে। এসএসসি, এইচএসসি এবং পিএসসি পরীক্ষা এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। এলাকাটির আমূল পরিবর্তন হয়েছে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের যে কোন রাস্থার চেয়ে কামরাঙ্গীরচরের রাস্থা খারাপ নয়। তিনি বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নতশীল দেশে প্রতিষ্ঠা পাবে বলে বিশ্বাস করি। কৃষি, খাদ্য, শিল্প, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগের সরকারের দিকে তাকিয়ে দেখুন, কোন উন্নয়নতো ছিলই না। বরং ছিল লুটপাট ও নির্যাতন। তারা জনগণের ওপর নির্যাতন চালাতো, সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে আশাকরি আপনারা বিবেকের তাড়নায় নৌকায় ভোট দিবেন।
×