ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাঁশখালীতে নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঁশখালীতে নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, ১৩ সেপ্টেম্বর ॥ বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া জলকদর খাল চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ৯টি উপকূলীয় ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত। সেই জলকদর খালের উপর দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুরা। একের পর এক নদী দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে আটকা রয়েছেন। এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জলকদর খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব কার? এদিকে অবৈধ দখলদারদের কারণে ভারি বর্ষণের পানি নদীতে প্রবাহিত হতে না পারায় লোকালয় নিমজ্জিত হচ্ছে পানির তলে। এই নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে দখলদারদের চলছে উত্তেজনা। তাছাড়া প্রতিবাদকারীদের ফাঁসাতে চাঁদাবাজি মামলাও দায়ের করছে প্রভাবশালী মহল। এই যখন উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের অবস্থা তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। বুধবার বাঁশখালীর পুঁইছড়ি ইউনিয়নের সরলিয়া বাজারসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দখল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী শিহাব উল হক চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে মামলায় ফাঁসানোরও হুমকি দেন বলে জানান এলাকাবাসী। তাছাড়া নদী দখলে রয়েছে প্রভাবশালী মহলের একাধিক সিন্ডিকেট। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খ.ম. জুলফিকার আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে জানান, নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি অনেক আগে থেকেই অবহিত হয়েছি আমরা। তবে এই বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুঁইছড়ি ও ছনুয়া ইউপির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের ৬৪/২এ এর জলকদর খালের উভয় পার্শ্বে নতুন নতুন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর পূর্বেও অধিক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় নদীর সম্পূর্ণ নাব্য হারিয়ে ফেলেছে। ব্যাহত হচ্ছে নৌযান চলাচল। তাছাড়া ৯টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জলকদর খালের উভয় পার্শ্বে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠার ফলে নদীর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে সরু হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি সাগরে পতিত হতে না পারায় বন্যার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অচিরেই জলকদর খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা না হলে এলাকাবাসী বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হবে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আশু কামনা করেছেন। পুঁইছড়ি এলাকার নদীর ওপর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী শিহাব উল আজিম চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির মাথাখিলা খালের ওপর স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। কোন ধরনের নদী ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে না বলে তিনি জানান।
×