ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে পুড়িয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  না’গঞ্জে পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে পুড়িয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ ফতুল্লায় পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে সুমন (৩৫) নামে এক ঝুট ব্যবসায়ীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে মাসদাইরের পাকাপুল এলাকায়। রাতে সুমনের গায়ে আগুন দেয়ার পর তিনি দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। নিহত সুমন পশ্চিম মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বিপ্লব, বিপ্লবের স্ত্রী শায়লা, সোহেল ম-ল ও হোটেল মাসুদ পলাতক রয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী বিপ্লব ও সোহেল ম-ল গত কয়েক মাস আগে সুমনের কাছ থেকে ৭০ হাজার করে দুইজনে এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা ধার নেয়। এক মাস পরে এ টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তারা সুমনকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় টাকা দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে বিপ্লবের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সুমনকে সেখানে নিয়ে শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে সুমনের আর্ত চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে সুমনের মৃত্যু হয়। নিহত সুমনের ছোট বোন রিতা বেগম জানান, সুমন আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আগুন দেয়ার পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গেছে। হত্যাকারীদের নামও বলে গেছে। তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টায় বিপ্লব টাকা দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে সুমনকে তাদের বাসায় ডেকে নেয়। সুমনদের বাসার অদূরেই বিপ্লবদের বাসা। বিপ্লবদের বাসায় নেয়ার পর বিপ্লবের স্ত্রী শায়লা, সোহেল ম-ল ও হোটেল মাসুদ সুমনকে জোর করে ধরে রাখে। বিপ্লব সুমনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে ঝলসে গিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত বিপ্লব, তার স্ত্রী শায়লা, সোহেল ম-ল ও হোটেল মাসুদ পলাতক রয়েছে। সুমন এলাকায় ঝুটের ব্যবসা করত। নিহত সুমনের স্ত্রী সোমা আক্তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সিয়াম নামের আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে তাদের। চার ভাই বোনের মধ্যে সুমন ছিল সবার বড়।ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঞ্জুর কাদের জানান, বিপ্লব ও সোহেল ম-ল মাদক কারবারি। পাওনা টাকা নিয়ে তাদের সঙ্গে সুমনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সুমনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তিনি আরও জানান, কারা কারা সুমনকে হত্যা করেছে হাসপাতালে স্বজনদের কাছে সুমন তাদের নাম বলে গেছে বলে শুনেছি। শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সুমনের লাশ নারায়ণগঞ্জে আনা হয়েছে।
×