ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের ষষ্ঠ দিনে লঞ্চে ৪ গুণ যাত্রী ॥ অতিরিক্ত ভাড়া

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৮ আগস্ট ২০১৮

ঈদের ষষ্ঠ দিনে লঞ্চে ৪ গুণ যাত্রী ॥ অতিরিক্ত ভাড়া

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২৭ আগস্ট ॥ ঈদে নাড়ীর টানে পরিবার পরিজনের কাছে আসা মানুষ ঈদ শেষে ঢাকায় যেতে শুরু করেছে। ঈদের ষষ্ঠ দিন সোমবার আমতলী লঞ্চঘাট থেকে এমভি সুন্দরবন-৬ লঞ্চ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চারগুণ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেলা ১১.৫০টায় ছেড়ে গেছে। এ রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া লঞ্চের যাত্রীদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সিট কিনতে হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ আমতলী লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও বেশি ভাড়া আদায় করার বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। লঞ্চের স্টাফ ও আনসাররা ডেকে বিছানা বিছিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে সিট প্রতি অতিরিক্ত ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করছে। জানা গেছে, আমতলী-ঢাকা রুটে এমভি হাসান হোসেন, এমভি ইয়াদ ও এমভি সুন্দরবন-৬ নামের তিনখানা লঞ্চ সার্ভিস রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের সুবিধার জন্য অতিরিক্ত কোন লঞ্চ দেয়নি মালিকপক্ষ। এ লঞ্চের মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে যাত্রী ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চার থেকে ছয়গুণ বেশি যাত্রী পরিবহন করছে। এমভি ইয়াদ লঞ্চে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৩৯৬ জন, নেয়া হচ্ছে এক হাজার দু’শত থেকে এক হাজার পাঁচ শ’ জন। প্রিন্স অব হাসান-হোসেন-১ লঞ্চে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৩৪২ জন, নেয়া হচ্ছে এক হাজার থেকে দু’হাজার জন। এমভি সুন্দরবন-৬ লঞ্চে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬০৩ জন, নেয়া হচ্ছে এক হাজার পাঁচ শ’ থেকে এক হাজার আট শ’ জন। এছাড়া সরকারী নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। পূর্বে আমতলী- ঢাকা প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের ভাড়া ছিল এক হাজার টাকা এবং ডেকের যাত্রীদের ভাড়া ছিল ৩শ’ টাকা। ঈদের আটদিন পূর্বে কোন কারণ ছাড়াই এ ভাড়া বৃদ্ধি করে সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার ২০০ টাকা, ডাবল কেবিন দুই হাজার ৪০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া তিন শ’ ৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। লঞ্চের স্টাফ ও আনসাররা ডেকে বিছানা বিছিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে সিটপ্রতি অতিরিক্ত ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করছে। সোমবার লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই, ভাড়া বেশি আদায় ও অতিরিক্ত টাকায় সিট বিক্রির খবর পেয়ে আমতলী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার ও ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন আমতলী লঞ্চঘাট পরিদর্শন করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই দেখে দ্রুত লঞ্চ ছেড়ে দেয়ার জন্য লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে সুন্দরবন-৬ লঞ্চটি ছেড়ে যায়। সোমবার আমতলী লঞ্চঘাট ঘুরে দেখা গেছে, এমভি সুন্দরবন-৬ লঞ্চ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চারগুণ যাত্রী বহন করে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চঘাট ছেড়ে গেছে। এ লঞ্চটিতে তিল পরিমাণ জায়গা নেই। মানুষ ডেকে জায়গা না পেয়ে লঞ্চের ছাদে অবস্থান নিয়েছে। যাত্রীরা লঞ্চের তৃতীয় তলায় মেশিনের সাইলেন্সসার পাইপের কাছে আসন পেতে বসেছে। অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। লঞ্চের স্টাফ ও আনসার সদস্যরা ডেকে বিছানা বিছিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে সিট প্রতি অতিরিক্ত ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করছে। তালতলী উপজেলার কড়াইবাড়িয়া গ্রামের মোঃ সুমন বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই সুন্দরবন-৬ লঞ্চে ঢাকায় যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, লঞ্চের মিরাজ নামক এক স্টাফের কাছ থেকে একটি সিট ২০০ টাকায় ক্রয় করেছি। তালতলীর গাববাড়িয়া গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, এক আনসার সদস্যের কাছ থেকে ছাদের ৫টি সিট ১৫০ টাকা করে ৭৫০ টাকায় নিয়েছি।
×