ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এ সময়ে অনেক অবৈধ কর্মী বৈধ হতে পারবেন

আরব আমিরাতে ৩১ অক্টোবর অবধি সাধারণ ক্ষমা

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১৮ আগস্ট ২০১৮

 আরব আমিরাতে ৩১ অক্টোবর অবধি সাধারণ ক্ষমা

ফিরোজ মান্না ॥ সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত হাজার হাজার কর্মীকে বৈধ হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ বৈধ হতে না পারেন তাহলে তাকে দেশে ফিরতে হবে। অবৈধ প্রবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে আমিরাত সরকার পঞ্চমবারের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা করেছে। দুবাই কর্তৃপক্ষের ঘোষণার পরই কর্মীরা বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রতিদিন ভিড় করছেন। অবৈধ কর্মীরা ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করে যাচ্ছেন। সূত্র জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশী কর্মী কাজ করছেন। সেখানে বাংলাদেশী ব্লু কলার কর্মীদের জন্য ভিসা দেয়া বন্ধ রয়েছে। এখন নতুন ঘোষণায় মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশী কর্মীরা জরিমানা দিয়ে ছয় মাস বসবাসের অনুমতি ও নতুন কাজ পাওয়ার সুযোগ পাবেন। এবার সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন শুরু হয়েছে ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হতে হবে। যদি কেউ বৈধ হতে না পারেন তবে তাকে ফিরে আসতে হবে। কেউ যদি অবৈধ হয়ে দেশটিতে থাকার চেষ্টা করেন তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। দেশটিতে অবৈধভাবে কর্মরত বিদেশী কর্মীরা পররাষ্ট্রবিষয়ক অধিদফতরে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের সঙ্গে ২২০ দিরহাম ফি দিতে হবে। তাহলেই কেবল অবৈধ কর্মীরা নির্বিঘেœ দেশে ফেরার অনুমতি পাবেন। যারা কাজের ভিসায় দেশটিতে গিয়েছেন কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারাও এ সুযোগ নিতে পারবেন। এছাড়া ভ্রমণ ভিসায় গিয়েও যাদের ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে তারাও দেশটিতে থেকে বৈধভাবে চলে আসার জন্য পাসপোর্ট বৈধ করতে পারবেন। আর যারা আরও সময় ধরে সেখানে থাকতে চান তাদের ৫২০ দিরহাম অতিরিক্ত ফি দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস থেকে নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। তাদের নিকটবর্তী আমের টাইপিং সেন্টারে যেতে হবে। সেখান থেকে ৬ মাসের অস্থায়ী ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। এদিকে, বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারের কারণে কর্মীদের মধ্যে ভাল সাড়া পড়েছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার আবেদন জমা পড়ছে। আবেদনগুলো গ্রহণ করতে দূতাবাসে কর্মকর্তাদের দিনে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে হচ্ছে। কাজ পাওয়ার আশায় অনেকেই অবৈধভাবে দেশটিতে থেকেছেন। কিন্তু গত দুই বছরে অবৈধভাবে তারা কোন কাজ পাননি। এখন নতুন কাজ পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের কনসাল অফিস সূত্র জানিয়েছে, গত সপ্তাহে আমরা প্রায় এক হাজার ট্রাভেল পারমিট দিয়েছি। নতুন পাসপোর্টের জন্য আড়াই হাজার আবেদন গ্রহণ করেছি। এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে দেয়া হবে। আমিরাত সরকারের সঙ্গে আমরা ভাল সম্পর্ক রেখে যাচ্ছি। তারাও আমাদের ভালভাবেই সহযোগিতা দিচ্ছেন। বাংলাদেশীরা এখানে পর্যটক ও বাণিজ্যিক ভিসায় আসছেন। আমরা আশাবাদী আমাদের প্রবাসীরা এখানে ব্লু কলার কাজও পাবেন। আমরা চাই বেশিরভাগ বাংলাদেশী কর্মী জরিমানা দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নতুন কাজ পাবেন। আমিরাত সরকার সাধারণ ক্ষমা মাধ্যমে বহু কর্মী বৈধতা পাবেন। ক্ষমাপ্রার্থীদের আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করছি। যেখানে সম্ভব জরিমানা কম রাখা হচ্ছে। আর্থিক সঙ্গতি নেই এমন অনেক কর্মীকে বিনামূল্যে বিমান টিকেটের ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সও বাংলাদেশের জন্য বিমান টিকেটে ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে ১৯ ক্যাটাগরিতে কর্মী নিয়োগের বিষয়টি নিয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
×