ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩০ মে ২০১৮

আজ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে তিনি নিহত হন। এ দিকে দিবসটি পালন উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে বিএনপি। আজ সকাল ১০টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা শেরেবাংলানগরে জিয়ার মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। এ ছাড়া আজ বিএনপি কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল, রক্তদান, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামীতে আন্দোলন কর্মসূচীর ধরন পাল্টাবে বিএনপি। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার আদালতের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। এ জন্য বিএনপির চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আগামীতে আর সীমাবদ্ধ থাকবে না, আন্দোলন কর্মসূচীর ধরন পরিবর্তন করা হবে। খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না উল্লেখ্য, করে ফখরুল বলেন, তাকে ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হবে না। অবশ্যই তাকে মুক্তি দিতে হবে। পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, একদলীয় নির্বাচনে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। সেই জন্যই বলছি, সবার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ ও নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তারপর এ দেশে নির্বাচন হবে। ফখরুল বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্রের নেত্রী, যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রেখেছেন, দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, সেই নেত্রীকে আজকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ‘যারা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিল, তারাই আজকে আবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে।’ খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশের মানুষের সব অধিকার হরণ করে নিয়েছে সরকার। সেই জন্য সবাইকে জেগে উঠতে হবে। নতুন করে শপথ নিতে হবে, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে। সেই আন্দোলনে অবশ্যই সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। কারণ, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আদালতের মাধ্যমে সরকার সময়ক্ষেপণ করছে। তাই এ সরকারের আমলে আইনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। আর এ জন্য আমরা যে ধরনের আন্দোলন করছি, আগামীতে বিএনপি এ ধরনের কর্মসূচীতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। যে ধরনের কর্মসূচীতে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়, সেই ধরনের কর্মসূচী নিয়ে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি মাঠে থাকবে। তাই সবাই সামনের দিনে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। তার মুক্তি ছাড়া কোন নির্বাচন এ দেশে হতে দেয়া হবে না। সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নেমে কোন লাভ হবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হলে দেশে গণআন্দোলন হবে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১৯৭২ সালে বিরোধী মতকে হত্যার পরও একদলীয় শাসনের শেষ রক্ষা হয়নি। ঠিক তখনই জনগণের সামনে আবার আসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ৭ নবেম্বর সিপাহি বিপ্লবের মাধ্যমে। তিনি বলেন, আজ দেশে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র তো দূরের কথা, একদলীয় গণতন্ত্রও নেই। আছে শুধু এক ব্যক্তির গণতন্ত্র। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ধারণা ছিল জিয়া না থাকলে বিএনপি থাকবে না। সে চিন্তা থেকে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এখন চিন্তা খালেদা জিয়া না থাকলে বিএনপি থাকবে না, তাই তাকে আজ কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
×